1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অবস্থা

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১৭ আগস্ট ২০১৪

মৃত্যুর পর মৃত ব্যক্তির অঙ্গ রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করলে সেই ব্যক্তি ফিরে পেতে পারে সুস্থ জীবন৷ হাজার হাজার মানুষ কিডনি, লিভার, হার্ট, অগ্ন্যাশয় ইত্যাদি রোগে মৃত্যু পথযাত্রী৷ অঙ্গ প্রতিস্থাপনই তখন বাঁচার একমাত্র পথ৷

https://p.dw.com/p/1Cvld
ছবি: dapd

তবে ভারতে এবিষয়ে সচেতনতার একান্ত অভাব রয়েছে৷ ভারতে প্রায় পাঁচ লাখেরও বেশি ব্যক্তি অঙ্গ প্রতিস্থাপন বিশেষ করে কিডনি, লিভার, হার্ট, অগ্ন্যাশয়, ফুসফুস, ক্ষুদ্রান্ত্র, চোখের কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের আশায় দিন গুণছেন৷ তাঁদের মধ্যে হাজারেরও কম অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়ে থাকে ভারতে৷ অবশিষ্ট হতভাগ্যরা প্রতিস্থাপনের আশায় অপেক্ষা করতে করতে উপযুক্ত অঙ্গদাতাদের না পেয়ে মারা যান৷ রোগগ্রস্ত অঙ্গের জায়গায় সুস্থ অঙ্গ বসানো হলে রুগ্ন ব্যক্তির কার্যত পুনর্জন্ম হয়৷

Symbolbild Organspende
ছবি: picture-alliance/dpa

একজন মৃত ব্যক্তির বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন করে সাত ব্যক্তির জীবন বাঁচানো সম্ভব বলে জানান দিল্লি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা৷ যদিও ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ, কিন্তু মৃত ব্যক্তির অঙ্গদানের হার প্রতি লাখ মানুষের অনুপাতে মাত্র ০.২৬ শতাংশ, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২৬, স্পেনে ৩৫ এবং ক্রোয়েশিয়ায় ৩৬.৫ শতাংশ৷ অঙ্গদানের দিক থেকে ক্রোয়েশিয়া বিশ্বে শীর্ষস্থানে আছে৷

পশ্চিমা দেশগুলিতে বেশিরভাগ প্রতিস্থাপনের জন্য নির্ভর করতে হয় মৃত ব্যক্তির অঙ্গদানের ওপর৷ মৃত ব্যক্তির লিভার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গড়ে বছরে ৬,০০০ হাজার লিভার প্রতিস্থাপন করা হয়৷ সেখানে ভারতে চারগুণ জনসংখ্যা বেশি হওয়া সত্ত্বেও বছরে লিভার প্রতিস্থাপন হয় মাত্র ২,৪০০৷ অর্থাৎ এদেশে যতটা করা সম্ভব তার মাত্র একশো ভাগের এক ভাগ এটা৷ পাশাপাশি এটাও সত্যি, ব্যক্তির নিকট আত্মীয় পরিজনরা অঙ্গদানে রাজি থাকলেও কিছু অঙ্গ প্রতিস্থাপনের উপযুক্ত থাকে না৷ জীবনদায়ী অঙ্গ প্রতিস্থাপনে দাতা ব্যক্তির ‘ব্রেন-ডেড' অবস্থাতেই দান করা চলে৷ হার্ট, লিভার, কিডনি, অগ্ন্যায়, ফুসফুস ও ক্ষুদ্রান্ত্রের সফল প্রতিস্থাপনের জন্য অঙ্গগুলিতে নিয়মিত রক্ত ও অক্সিজেন দিয়ে রাখতে হয়৷ দুটি চোখের কর্নিয়া দুজনের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিতে পারে৷

Symbolbild Transplantation Skandal Leipzig
ছবি: picture-alliance/dpa

ভারতে অঙ্গদানের হার এত কম কেন?

অন্যতম কারণ সামাজিক সচেতনতার অভাব৷ এমন কি ডাক্তারদের মধ্যেও সচেতনতার অভাব আছে৷ ‘গিফট ইওর অর্গান ফাউন্ডেশন'এর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মৃত ব্যক্তির পরিবারকে ঐ শোকের সময়ে অঙ্গদানের বিষয়ে কাউন্সিলিং বা কিভাবে পরিবারকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজি করাতে হয়, তা ঠিকমত জানেন না কিংবা জানলেও বলতে চান না৷ অসুস্থ ব্যক্তির ব্রেন-ডেড না হওয়া পর্যন্ত অঙ্গদান করা যায় না৷ কিছু কিছু ক্ষেত্র ছাড়া৷ যেমন কিডনি৷ দুটো থাকে, একটা দেয়া যায়৷ সেটা অতি প্রিয়জনের ক্ষেত্রেই সম্ভব৷ আর ডাক্তাররা ব্যক্তির ব্রেন-ডেড-এক কথা ঘোষণা না করে ভেন্টিলেশনে রেখে দেন৷ পুলিশকেও এবিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া জরুরি যাতে, তাঁরা ব্রেন-ডেড কি সেটা জানতে পারে৷ যেমন, দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে যদি পুলিশ ব্রেনডেড বুঝতে পারে তাহলে দ্রুত ‘নো-অবজেকশন' সার্টিফিকেট দিলে অঙ্গদান করা বিলম্বিত হবে না৷

Symbolbild Organspende
ছবি: imago/McPHOTO

তামিলনাড়ু সরকার এনজিওকে ক্ষমতা দিয়েছে যে হাসপাতালের সবথেকে কাছের পুলিশ থানা থেকে ‘নো-অবজেকশন' সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে পারবে৷ যেখানে দুর্ঘটনার জায়গায় যাবার দরকার পড়বে না৷ ফলে সময় অনেক বাঁচবে ফলে অঙ্গদান সফল হবে, বলেন গিফট ইওর অর্গান ফাউন্ডেশন এর এক কর্মকর্তা৷ তামিলনাড়ুতে এই প্রক্রিয়ায় বহু মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে৷

দিল্লির এক নামকরা হাসপাতালের অঙ্গ প্রতিস্থান সার্জেন ডা: সমীরণ নন্দী বলেন, অঙ্গদানে মানুষের প্রাণ বাঁচানো সহজ এবং কম ব্যয়বহুল হয়৷ কারণ অঙ্গদানে একটা প্রাণ বাঁচছে, অথচ দাতা ব্যক্তির কোনো ক্ষতি হচ্ছে না৷ কারণ তিনি মৃত৷ ভারতে অঙ্গদান সংক্রান্ত আইন থাকা দরকার৷ আর দরকার কেন্দ্রীয় ইলেক্ট্রনিক ডেটা-বেসড রেজিষ্ট্রি, যাতে দাতা ও গ্রহীতার নাম ও বিবরণ চিকিৎসকরা জানতে পারেন, বলেন ডা: নন্দী৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান