ইসরায়েলের ‘মিস ট্রান্সজেন্ডার’
ইসরায়েলের সবচেয়ে সুন্দরী ট্রান্সজেন্ডার হলেন এক আরব খ্রিষ্টান মহিলা, যাঁর নাম তা’আলিন আবু হানা৷ এই ট্রান্সজেন্ডার সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন ১১জন৷ এই পন্থায় বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালেন তারা৷
আমরা সবাই রানি
‘‘বিউটি কুইন হওয়াটা বড় কথা নয়,’’ বলেছেন তা’আলিন আবু হানা৷ তাঁকে বিজয়ীর মুকুট পরানো হয় তেল আভিভের হাবিমা জাতীয় থিয়েটারে৷ ‘‘কেউ আমাদের বলবে, কে বেশি সুন্দরী, তার প্রয়োজন নেই আমাদের - আমরা সকলেই বিউটি কুইন৷’’ পুরস্কার হিসেবে বিজয়ী পাচ্ছেন থাইল্যান্ডে গিয়ে অপারেশন করানোর জন্য সাড়ে তেরো হাজার ইউরো৷
আন্তর্জাতিক মঞ্চে
তা’আলিন আবু হানা জাতিতে আরব ও ধর্মের দিক দিয়ে খ্রিষ্টান৷ বাস নাজারেথে৷ আরব ও ট্রান্সসেক্সুয়াল হিসেবে ইসরায়েলে তাঁকে দ্বিবিধ বৈষম্যের সম্মুখীন হতে হয়৷ ২১ বছর বয়সী ব্যালে-নর্তকী হানা আগামী সেপ্টেম্বরে স্পেনের বার্সেলোনায় আন্তর্জাতিক ‘মিস ট্রান্স স্টার’ প্রতিযোগিতায় ইসরায়েলের প্রতিনিধিত্ব করবেন৷
পরিবর্তনের হাওয়া
এই বিউটি কন্টেস্ট দিয়ে এ বছর তেল আভিভের এলজিবিটি ফেস্টিভাল শুরু হচ্ছে৷ শহরটি মধ্যপ্রাচ্যে এলজিবিটি মহলের ঘাঁটি বলে পরিচিত৷ ফেস্টিভালের মটো হলো ‘উওমেন ফর চেঞ্জ’, ‘নারীরা চান পরিবর্তন’৷
লিঙ্গপরিবর্তনকারীরা চান সহিষ্ণুতা
‘মিস ট্রান্স’ সুন্দরী প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করেছেন স্টেফানি লেভ, যিনি ইসরায়েলের নাগরিক ও নিজেই ট্রান্সসেক্সুয়াল৷ তাঁর আশা, এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ট্রান্সসেক্সুয়াল মানুষেরা আরো বেশি স্বীকৃতি পাবেন৷ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে স্টেফানি লেভ আনন্দ করে বলেন, ‘‘এটা হল ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের স্বাধীনতা দিবস৷’’
দীর্ঘ কাহিনি
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা অনেকটা পথ পার হয়ে এসেছেন৷ তাঁরা বড় হয়েছেন ছেলে হিসেবে, কিন্তু নিজেদের শরীরে অস্বস্তি বোধ করেছেন, সেইজন্য পরে অস্ত্রোপচার করিয়ে লিঙ্গ বদল করে নিয়েছেন৷ বহু ট্রান্সসেক্সুয়ালকে দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক বৈরিতা ও প্রত্যাখ্যানের মুখোমুখি হতে হয় - সেটা শুধু ইসরায়েলেই নয়৷
আপনজন?
বহু ট্রান্সসেক্সুয়ালের বাড়ির লোকজন ব্যাপারটা, বিশেষ করে অপারেশন করানোটা মেনে নিতে পারেন না৷ তাই প্রতিযোগিতার বহু অংশগ্রহণকারীর নিজেদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কোনো সংযোগ নেই৷
যুক্তির পথ
মিস ট্রান্সজেন্ডার প্রতিযোগিতার ফলে ইসরায়েলে লিঙ্গ পরিবর্তনকারীদের প্রতি মনোভাব বদলাবে কিনা তা বলা শক্ত৷ ‘হা’আরেৎস’ পত্রিকা লিখেছে, ‘‘যে পরিস্থিতিতে ট্রান্সজেন্ডার মহিলারা আজও স্বীকৃতি ও সমাজে স্বচ্ছন্দে চলাফেরার অধিকারের জন্য লড়ছেন, সেই পরিস্থিতিতে মিস ট্রান্স ২০১৬ যুক্তির পথ দেখাচ্ছে৷’’