1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধর্মীয় নেতার বক্তব্যের প্রতিবাদ

২৫ জানুয়ারি ২০১৬

জার্মানির এক ইমাম ও সৌদি আরবের এক মুফতির দু'টি বক্তব্য সমালোচনার ঝড় তুলেছে৷ হতাশ, বিস্মিত এবং ক্ষুব্ধ অনেকের মনে ‘ইসলাম ধর্ম' এবং বিভিন্ন দেশে মসজিদের ভূমিকা এবং কার্যকলাপ নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/1HjSS
Köln Demonstration Syrer gegen Sexismus
ছবি: DW/B. Conradis

গত ৩১শে ডিসেম্বর রাতে কোলনে ব্যাপক নারী নিপীড়নের কারণ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে ইমাম সামি আবু-ইউসুফ বলেছেন, নারীদের খোলামেলা পোশাক এবং তাঁদের ব্যবহার করা পারফিউমই নাকি সেই রাতের যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের জন্য দায়ী৷ রাশিয়ার রেন টিভি-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে তাঁর এই বক্তব্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে৷

২০১৫ সালকে বিদায় এবং নতুন বছর ২০১৬-কে স্বাগত জানানোর উৎসবের রাতে কোলনসহ জার্মানির কয়েকটি শহরে নারীরা ব্যাপক যৌন নিপীড়নের শিকার হন৷ কোলনের ঘটনায় এ পর্যন্ত একজন ধর্ষণ এবং ৮শ'রও বেশি নারী যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেছেন৷

অভিযোগগুলোর তদন্ত যখন চলছে তখনই রাশিয়ার একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কোলনের ইমাম সামি আবু-ইউসুফ পুরো ঘটনার জন্য নারীদেরই দায়ী করলেন৷ স্বাভাবিকভাবেই তাঁর এ বক্তব্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে৷ টুইটারের একজন লিখেছেন, ইমামের এমন বক্তব্যের পর কোলনের মসজিদটি বন্ধ করে দেয়া উচিত৷ পাশাপাশি ইমাম সামি আবু-ইউসুফসহ ঐ মসজিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আটক করে তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা উচিত বলেও মনে করেন তিনি৷

এমন বক্তব্যের মাধ্যমে ইমাম আবু ইউসুফ কি ইসলামের অপব্যাখ্যা এবং ইসলামের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছেন? ইসলাম ধর্ম কি অপরাধীর অপরাধকে গৌন করে দেখতে বা দেখাতে শেখায়? তাছাড়া জার্মানির মানুষ জার্মানিতে তাঁদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য অনুযায়ী পোশাক পরলে তাতে কি কারো আপত্তি থাকতে পারে? বিশ্লেষকদের আলোচনায় এসব প্রশ্ন উঠে আসছে৷

ওদিকে সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবদুল আজিজ বিন-আব্দুল্লাহ আল শেখ বলেছেন, মুসলমানদের জন্য দাবা খেলা ‘হারাম'৷ তাঁর মতে, দাবা খেলা শত্রুতা ও ঘৃণার জন্ম দেয়৷ অনেকেই তাঁর এই বক্তব্যের কোনো যুক্তি খুঁজে পাননি৷ ধর্মের সঙ্গে এর সম্পর্ক বা বিরোধও বোধগম্য হচ্ছে না অনেকের কাছে৷

তাঁর এই মন্তব্যে বিস্ময়, হতাশা এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই৷ সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকজন ধর্মীয় নেতার কাছ থেকেই ইসলামকেই প্রশ্নবিদ্ধ করার মতো মন্তব্য এসেছে৷ হঠাৎ ইমামদের এমন তৎপরতা শুরুর কারণও বোঝার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ৷

বিবিসি বাংলা বিভাগ দাবা খেলা সম্পর্কে সৌদি ধর্মীয় নেতার মন্তব্যের যথার্থতা যাচাই করার উদ্দেশ্যে হাজির হয়েছিল বাংলাদেশের স্বনামধন্য দাবাড়ুদের কাছে৷ সৌদি মুফতির মন্তব্যকে যথারীতি প্রত্যাখ্যানই করেছেন তাঁরা৷ দাবাড়ুরা বলেছেন, দাবা একটি নির্দোষ খেলা, যাতে বুদ্ধির চর্চা হয় এবং মস্তিষ্ক ক্ষুরধার হয়৷ বিশ্বখ্যাত দাবাড়ু গ্যারি ক্যাসপারভ-ও এর তীব্র নিন্দা করেছেন৷

খ্যাতিমান মহিলা দাবাড়ু রানি হামিদ জানিয়েছেন, দাবা খেলা সম্পর্কে সৌদি গ্র্যান্ড মুফতির এ ধরনের মন্তব্য শুনে তার খারাপ লেগেছে৷ তিনি বলেন, ‘‘লোকে হয়ত ভাববে, আমরা বুঝি খারাপ কোনো কাজ করছি৷ অথচ আমরা তো দাবা খেলি সময় কাটানোর জন্য, আনন্দের জন্য৷ এটা এত নির্দোষ একটা খেলা৷ দাবা খেললে বুদ্ধির চর্চা হয়, অংকে ভালো করা যায়৷ কারণ এটা তো বুদ্ধির খেলা৷''

রানি হামিদ জানিয়েছেন, তিনি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দাবা খেলে যাবেন৷

বাংলাদেশের প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ বলেছেন, দাবা খেলা নিয়ে কোনো নেতিবাচক পদক্ষেপ কখনও টিকতে পারেনি৷ তাঁর মতো, ‘‘ভালোবাসা এবং সংগীত যেভাবে আপনাকে আনন্দ দেয়, দাবা খেলা থেকেও আপনি সেই আনন্দ পেতে পারেন৷''

নিয়াজ মোর্শেদ জানান, ‘‘আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেই কিন্তু ইরানে দীর্ঘ সময় দাবা খেলা নিষিদ্ধ করেছিলেন৷ ইরানে এক সময় দাবা খেলা হতো না৷ কিন্তু খামেনেই নিজেই কিন্তু আবার দশ বছর পর এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন৷

সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

বন্ধুরা, আপনারা কি ইমাম সামি আবু-ইউসুফ অথবা সৌদি গ্র্যান্ড মুফতিকে সমর্থন করেন? জানান নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য