1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সিরিয়াল কিলার’ নার্স!

২৯ আগস্ট ২০১৭

ছ’জন রোগীকে হত্যার দায়ে নিলস এইচ. নামের পুরুষ নার্সটি ইতিমধ্যেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছে৷ সে আরো ৮৪ জন রোগীর মৃত্যুর জন্য দায়ী হতে পারে, বলে তিন বছরের তদন্তের পর প্রকাশ৷

https://p.dw.com/p/2j0Cw
Deutschland Prozess um ehemaligen Krankenpfleger Niels H.
ছবি: picture alliance/dpa/C. Jaspersen

নিলস এইচ.-এর কৃত হত্যাকাণ্ডগুলি ঘটে ২০০৩ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে ডেলমেনহর্স্ট ও ওল্ডেনবুর্গের দু'টি ক্লিনিকে৷ আদালতের বিচার অনুযায়ী সে রোগীদের এমন ইনজেকশন দিত, যার ফলে রোগীর হার্ট ফেল করার বা ব্লাড সার্কুলেশন ফেল করার লক্ষণ দেখা দিত৷ তখন নিলস এইচ. তাদের আবার বাঁচিয়ে তুলত, যাতে সহকর্মীদের সামনে সে ত্রাণকর্তা হিসেবে প্রশংসা পেতে পারে৷ কিন্তু রি-অ্যানিমেশন সবসময়ে কাজ করত না৷ এভাবে ছ'টি হত্যাকাণ্ডের জন্য নিলস এইচ.-কে আদালতে পেশ করা হয়৷ বিচারকমণ্ডলী তাকে দু'টি হত্যা, দু'বার হত্যার প্রচেষ্টা ও গুরুতর শারীরিক হানি ঘটানোর দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন৷ নিলস এইচ. স্বয়ং আদালতে এ কথাও বলে যে, সে ৩০ জন রোগীর মৃত্যুর জন্য দায়ী৷ 

হাসপাতালে হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ‘কার্ডিও' নাম দিয়ে ওল্ডেনবুর্গ পুলিশের যে বিশেষ তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়, তারা প্রায় তিন বছর তদন্তের পর এবার ঘোষণা করেছেন যে, নিলস এইচ. শুধু মামলায় উল্লিখিত ছ'জন রোগীই নয়, সম্ভবত আরো ৮৪ জন রোগীর মৃত্যুর জন্য দায়ী৷

আজ ৪০ বছর বয়সি পুরুষ নার্স নিলস এইচ.-কে ডেলমেনহর্স্ট ক্লিনিকের আইসিইউ বিভাগে ছ'টি হত্যাকাণ্ডের জন্য সাজা দেওয়া হয়৷ যদি আরো ৮৪টি হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে সে জার্মানিতে দায়রা অপরাধের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ‘সিরিয়াল কিলার'-দের মধ্যে গণ্য হবে৷

১০০-র বেশি মৃতদেহ কবর থেকে বার করা হয়েছে

তদন্তকারীরা যে নিলস এইচ.-এর সব অপরাধের হদিশ পেয়েছেন, এমন নয়, কেননা একাধিক মৃত রোগীকে দাহ করা হয়েছে, যার ফলে কবর থেকে দেহাবশিষ্ট বার করে ময়না তদন্ত করা সম্ভব হয়নি – বলে জানান ওল্ডেনবুর্গের পুলিশ প্রধান ইওহান ক্যুহনে৷ নয়ত গত তিন বছরে তদন্তকারীরা শত শত রোগীর মেডিক্যাল রেকর্ড পরীক্ষা করে দেখেছেন, ২০০ জন রোগীর মৃত্যুর ঘটনা খুঁটিয়ে বিবেচনা করেছেন, এছাড়া ১০০-র বেশি রোগীর মৃতদেহ কবর থেকে বার করে ময়না তদন্ত করে দেখা হয়েছে, লাশে কোনো ওষুধের চিহ্ন আছে কিনা৷

নিলস এইচ প্রথম ধরা পড়ে, যখন একজন মহিলা নার্স তাকে হাতে-নাতে ধরে ফেলেন৷ সেটা ছিল ২০০৫ সালের ঘটনা৷ কিন্তু তার অপরাধের ব্যাপকতা উপলব্ধি, তদন্ত ও নথিবদ্ধ করতে আরো দশ বছর সময় লেগে গেছে৷ 

নিলস এইচ.-এর ডিউটি থাকলেই এত বেশি রোগী মারা যান কেন, তা নিয়ে ক্লিনিকে কথাও উঠেছিল৷ সে যে রোগীদের হত্যা করছে, ডেলমেনহর্স্টে তার বাস্তব হদিশও ছিল, বলে সরকারি কৌঁসুলির বিশ্বাস – যে কারণে দু'জন সাবেক সিনিয়র ফিজিসিয়ান ও বিভাগীয় হেড নার্সের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার দরুণ নরহত্যার মামলা করা হচ্ছে৷ ওল্ডেনবুর্গ ক্লিনিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখনও তদন্ত চলেছে৷

ওল্ডেনবুর্গের পুলিশ প্রধান ইওহান ক্যুহনে-র মতে এর মধ্যে অনেক হত্যাকাণ্ড রোধ করা সম্ভব ছিল৷ তদন্তকারীদের মতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আরো সত্বর সক্রিয় হওয়া ও পুলিশকে সচেতন করা উচিত ছিল৷ ওল্ডেনবুর্গ ক্লিনিকেও নিলস এইচ. সংক্রান্ত অনেক কিছু চোখে পড়েছিল, বলে ক্যুহনে জানান৷

ফলশ্রুতি

জার্মান রোগী সুরক্ষা নিধি নিলস এইচ.-এর ঘটনার ফলশ্রুতি দাবি করেছে৷ পুলিশের বিশেষ কমিশনের সর্বাধুনিক বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে নিধির সভাপতি অয়গেন ব্রিশ জানিয়েছেন যে, নিলস এইচ.-এর পর্যায়ক্রমে হত্যাকাণ্ডের পরেও জার্মানির ২,০০০ হাসপাতালের অনেকগুলিতে নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া জোরদার করা হয়নি৷ অধিকাংশ হাসপাতালে বেনামিতে খবর প্রদানের কোনো ব্যবস্থা নেই৷ অনেক ক্ষেত্রে সরকারি ময়না তদন্তের প্রয়োজন৷ এছাড়া হাসপাতাল ও বৃদ্ধাশ্রমে মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ পরিসংখ্যান ও ওষুধপত্র প্রদানের উপর বিশদ নিয়ন্ত্রণ রাখা উচিত, বলে ব্রিশ-এর দাবি৷

এসি/ডিজি (ডিপিএ, এএফডি, এপি)