1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আপনার কথা শুনে ফ্রিজ ওভেনকে বলবে রান্না করতে!

২৮ জানুয়ারি ২০১২

‘স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্সেস’ মানে ঘরে ব্যবহারের জিনিসপত্র যদি বুদ্ধিমান হয় তাহলে জীবনটা আরেকটু সহজ হয়ে যায়৷ ব্যাপারটা আলোচিত হচ্ছে বহুদিন ধরে৷ এবার বাস্তবায়নের পালা৷

https://p.dw.com/p/13sIS
ফাইল ছবিছবি: M. Klaussner

ধরুণ, আপনি অফিসে৷ এসময় কেউ একজন ফোন করে রাতে আপনার অতিথি হতে চাইলো৷ কিন্তু হয়তো আপনি কাজে এতটাই ব্যস্ত যে অতিথিকে আপ্যায়ন করার মতো যথেষ্ট সময় নেই৷ এই পরিস্থিতিতে আপনাকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসতে পারে ‘স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্সেস'৷ যেমন বুদ্ধিমান রেফ্রিজারেটর, ওভেন, রোবোটিক ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ইত্যাদি৷ তাহলে যেটা হবে সেটা হলো, আপনার কাছে থাকা স্মার্টফোন দিয়ে আপনি ঐসব বুদ্ধিমান গ্যাজেটগুলোকে কাজের নির্দেশ দিতে পারবেন৷ ফলে নিজে ঘরে না থেকেও রান্না তৈরি হয়ে যাবে৷ আর আপনার অতিথিও আপ্যায়িত হয়ে যাবে৷

এমন ফ্যান্টাসির কথা এতোদিন শুধু শোনা যাচ্ছিল৷ কিন্তু এবার সেটার একটা বাস্তব রূপ দেখা গেছে৷ অ্যামেরিকার লাস ভেগাসে সম্প্রতি শেষ হয়ে যাওয়া কনজিউমার ইলেকট্রনিক শো'তে এধরণের গ্যাজেট দেখা গেছে৷

স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্স উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার এলজি৷ তারা মেলায় একটা রেফ্রিজারেটর নিয়ে এসেছিল যেটাতে একটা টাচস্ক্রিন রয়েছে৷ ফ্রিজের ভেতরে কী কী আছে এবং কোন জায়গায়, সেটা লেখা রয়েছে ঐ স্ক্রিনে৷ এছাড়া ফ্রিজে থাকা দুধের মেয়াদ কতদিন আছে সেটাও স্ক্রিনে দেখতে পাওয়া যায়৷

NO FLASH Weihnachtsgans
ছবি: picture-alliance/Tobias Hase

এই ফ্রিজকে বাইরে থেকে স্মার্টফোনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়৷ যেমন আপনি বাজার করার সময় ফোনের মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন ফ্রিজে কী কী জিনিস আছে৷ আর কী কী কিনতে হবে৷ আবার আপনি যদি ফ্রিজকে জানিয়ে দেন আপনি কী রান্না করতে চান তাহলে ফ্রিজ সেটা জানিয়ে দেবে ওভেনকে৷ আর ওভেন সে অনুযায়ী কাজ শুরু করে দেবে৷

এর মানে হচ্ছে, ঐসব গ্যাজেটকে আপনার কথা শোনাতে হবে৷ এবং গ্যাজেটগুলোকেও নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতে হবে৷ এসব নিশ্চিত করতে গ্যাজেটগুলোর মধ্যে ওয়াই-ফাই কানেক্টিভিটি প্রয়োজন৷ এলজি সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছে৷ একই সঙ্গে ঘরের কাজে সহায়ক এসব যন্ত্রপাতিগুলোকে জ্বালানি সাশ্রয়ী করতেও গবেষণা করছে এলজি৷

দক্ষিণ কোরিয়ার আরেকটি কোম্পানি স্যামসাং'ও বুদ্ধিমান ফ্রিজ নিয়ে কাজ করছে৷ তাদের উদ্ভাবিত ফ্রিজকে আপনি শুধু বলবেন, আপনার এটা এটা প্রয়োজন৷ ব্যস, ফ্রিজই সেটা বাজার করে আনবে! ব্যাপারটা এরকম - ফ্রিজে যে টাচস্ক্রিনটা রয়েছে সেটা ব্যবহার করে আপনাকে ফ্রিজকে জানিয়ে দিতে হবে আপনার এক কেজি আপেল আর এক হালি ডিম দরকার৷ সঙ্গে সঙ্গে ফ্রিজ সেটা এসএমএস বা সংক্ষিপ্ত বার্তার মাধ্যমে জানিয়ে দেবে দোকানিকে৷ দোকানি তখন সেগুলো বাসায় পৌঁছে দেবে৷ অবশ্য এজন্য কতগুলো নির্দিষ্ট দোকানের সঙ্গে ফ্রিজের সংযোগ থাকতে হবে৷ দক্ষিণ কোরিয়ায় সংক্ষিপ্ত পরিসরে এই ব্যবস্থা চালুও হয়ে গেছে৷

ফ্রিজের পর এবার বুদ্ধিমান ভ্যাকুয়াম ক্লিনার বা ঘর পরিষ্কারক যন্ত্রের খবর৷ এলজি'র তৈরি একটা রোবোটিক ক্লিনারে রয়েছে তিনটি ক্যামেরা৷ আপনার কাছে থাকা স্মার্টফোন দিয়ে আপনি ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের ক্যামেরা ব্যবহার করতে পারবেন৷ আপনি দেখতে পারবেন ঘরের কোথায় ময়লা জমে আছে৷ সে অনুযায়ী ক্লিনারকে নির্দেশ দিতে পারবেন৷

এই যে এতসব স্মার্ট গ্যাজেট এগুলো আসলে ‘কানেক্টেড হোম' ধারণার একটা অংশ৷ বাইরে থেকেও ঘরের জিনিসপত্র ব্যবহার করতে পারাই এর লক্ষ্য৷ এখন হয়তো খুবই সীমিত পরিসরে এর ব্যবহার হচ্ছে৷ কেননা এগুলোর দাম এখনো সাধারণের হাতের নাগালে নয়৷ তবে এলজি অ্যামেরিকার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জন টেলর আশা করছেন, খুব শীঘ্রই এগুলো সাধারণ ব্যবহারকারীদের সামর্থ্যের মধ্যে নিয়ে আসা যাবে৷

ঘরের জিনিসপত্র প্রস্তুতকারকদের প্রতিষ্ঠান ‘ অ্যাসোসিয়শন অব হোম অ্যাপ্লায়েন্স ম্যানুফ্যাকচারার্স'এর ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ম্যাসনার বলছেন, গত বছরের মেলায় একটা বড় প্রশ্ন ছিল, কবে নাগাদ স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্সগুলো বাজারে আসবে৷ গত এক বছরে এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে৷

সংশ্লিষ্টদের এসব কথাবার্তায় মনে হচ্ছে, সেদিন আর বেশি দূরে নয় যখন আমার, আপনার মতো সাধারণ মানুষও এসব বুদ্ধিমান যন্ত্রগুলোর মালিক হতে পারবো৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য