২০১৮ সালে যেসব জায়গায় বেড়াতে যাওয়া উচিত
শুরু হয়ে গেছে নতুন বছর৷ কোন মাসে কোথায় বেড়াতে যাওয়া উচিত? দেখে নেওয়া যাক এক নজরে৷ তারপর নিজের ভ্রমণ ক্যালেন্ডার বানিয়ে নিলেই হলো!
জানুয়ারি: গারমিশ-পারটেনকিরশেন
২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর জার্মানিতে যাত্রা শুরু করেছে নতুন কেবল কার বা রোপওয়ে৷ এই কেবল কার ৬০০ যাত্রী নিয়ে খানিকক্ষণের মধ্যেই ২৯৬২ মিটার উঁচু দিয়ে চলতে চলতে পৌঁছে যায় জুগসপিৎসে’তে ৷আবহাওয়া ভালো থাকলে সেখান থেকে দেখা যাবে বাভেরিয়ার মনোরম দৃশ্য৷ ২০১৮ বাভেরিয়ার অস্তিত্বের শতবর্ষ৷
ফেব্রুয়ারি: পিয়ংচ্যাং
২৩তম উইন্টার অলিম্পিক্স মিউনিখে অনুষ্ঠিত হলে বাভেরিয়াতেই থেকে যাওয়া যেতো৷ কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া সে সুযোগ ছিনিয়ে নিয়েছে৷ ক্রীড়ামোদীরা তাই চাইলে ফেব্রুয়ারিতে পিয়ংচ্যাংয়ের টিকিট কাটতেই পারেন৷ সেখানে ফেব্রুয়ারির ৯ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত চলবে শীতকালীন অলিম্পিক৷
মার্চ: নিস
জার্মানিতে থাকলে ফেব্রুয়ারির কার্নিভ্যাল দেখার জন্য কোলন, মাইনৎস কিংবা ড্যুসেলডর্ফে থাকা যেতেই পারে৷ তবে সেই সময় নিসের তাপমাত্রা তুলনামুলকভাবে কম থাকবে৷ ফলে সেখানকার কার্নিভ্যালেও যাওয়া যেতে পারে৷ সেখানে ৩ মার্চ পর্যন্ত কার্নিভ্যাল চলবে৷ তারপর দেখে নেওয়া যেতে পারে আশপাশের জায়গাও৷
এপ্রিল: ভ্যালেট্টা
এপ্রিলে আট ঘণ্টারও বেশি সময় দিনের আলো থাকে মল্টায়৷ চমৎকার আবহাওয়া, অপূর্ব সৈকত আর প্রাসাদ-স্কোয়্যারের ভ্যালেট্টায় অনায়াসে কাটিয়ে দেওয়া যায় এপ্রিলের কয়েকটা দিন৷ নাগান, থিয়েটার, ভিডিও আর্চেরও আসর বসে ভ্যালেট্টায়৷
মে: ট্রিয়ার
অনেকে এই শহরটিকে জার্মানির প্রাচীনতম শহর বলে থাকেন৷ প্রায় দু’হাজার বছরের পুরনো শহর৷ ১৯৮৬ সাল থেকে এই শহরের ঐতিহাসিক রোমান স্থাপত্যগুলি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ৷ এই ট্রিয়ের শহরেই জন্ম কার্ল মার্কসের৷ ১৮১৮ সালের মে মাসে৷ ট্রিয়ারে বড় করে উদযাপিত হবে মার্কসের দ্বিশতবর্ষ৷ তাঁর জীবন নিয়ে থাকবে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও৷
জুন: লিউভার্ডেন
দক্ষিণ ফ্রিসিয়ার শহর লিউভার্ডেন৷ ভ্যালেট্টার চেয়ে কম পরিচিত হলেও সংস্কৃতির দিক থেকে এতটুকু পিছিয়ে নেই এই শহর৷ নিজেদের জাত্যাভিমান নিয়ে অত্যন্ত গর্বিত ফ্রিসিয়ানরা৷ গর্বিত তাঁদের ভাষা নিয়েও৷ ভ্যাডেন সমুদ্র থেকে উডল্যান্ডস পর্যন্ত বিস্তৃত লিউভার্ডেন ও সংলগ্ন এলাকা সংস্কৃতিচর্চার অন্যতম জায়গা৷ ১ জুন থেকে ১০ জুন পর্যন্ত সেখানে কনসার্টের আয়োজন হয়েছে৷
জুলাই: মস্কো
রাশিয়ায় এবার বসছে ফুটবল বিশ্বকাপের আসর৷ প্রথম খেলা ও ফাইনাল হবে মস্কোর অলিম্পিক্স স্টেডিয়ামে৷ সুতরাং জুলাইয়ে মস্কো গেলে ম্যাচ দেখার সুযোগও থাকছে৷ এছাড়া রেড স্কোয়্যার, গাম, বলশয় থিয়েটার তো আছেই৷ এছাড়া মস্কোর এক্সক্লুসিভ শপিং মলে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগও রয়েছে৷
আগস্ট: সেন্ট পেটার-ওর্ডিং
গ্রীষ্মে বহু জার্মানই ছুটি কাটাতে যান নর্থ সি অথবা বাল্টিকে৷ জার্মানির মধ্যে ঘুরতে হলে এ ধরনের একমাত্র জায়গা হলো সেন্ট পেটার-ওর্ডিং৷ সেখানকার বালিয়ারি, জল মনোমুগ্ধকর৷ তবে সেন্ট পেটার-ওর্ডিংকে মানুষ চেনেন তার অভিনব স্টিলট হাউসের জন্য৷
সেপ্টেম্বর: ফ্রাঙ্কফুর্ট
সেপ্টেম্বরে ফ্র্যাঙ্কফুর্টে৷ তখন মাইন নদীর ধারের শহরে উদযাপিত হবে ’নিউ ওল্ড টাউন’৷ মধ্যযুগে বর্তমান জার্মানির শহরগুলির সাপেক্ষে ফ্রাঙ্কফুর্টের সিটি সেন্টার ছিল সবচেয়ে বড়৷ ১৯৪৪ সালের বোমারু হানায় যার অধিকাংশই ধ্বসে পড়ে৷ ২০১২ সাল থেকে ক্যাথিড্রাল ও রোমারবার্গ স্কোয়্যারের মধ্যবর্তী অঞ্চলে ৩৫ টি টাউন হল নতুন করে তৈরি করা হয়, যার মধ্যে ১৫টি পুরনো হলের অনুকরণ আর ২০টি সম্পূর্ণ নতুন৷
অক্টোবর: বেলফাস্ট
‘গেম অফ থ্রোনে’র পোকাদের বেলফাস্ট সম্বন্ধে কোনও তথ্যই দিতে হবে না৷ আয়ারল্যান্ডের ক্যাপিটাল এবং কসওয়ে কোস্টকে লোনলি প্ল্যানেট ২০১৮ সালের সেরা পর্যটন স্থানের শিরোপা দিয়েছে৷ আধুনিক শহর এবং আশ্চর্য ল্যান্ডস্কেপের মিশেল দেখে আসাই যায় অক্টোবর মাসে৷
নভেম্বর: ভেরডুন
১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছিল৷ ১০০ বছর পর ফ্রান্সের এই শহরে দেখে আসা যায় যুদ্ধের মেমোরিয়াল এবং মিউজিয়াম৷ বিশ্বযুদ্ধে ভগ্নাবশেষে পরিণত হয়েছিল ভেরডুন৷ প্রায় ৩ লক্ষ সৈন্যের মৃত্যু হয়েছিল৷ ভেরডুনের জঙ্গল এখনও সেই যুদ্ধের স্মৃতি বহন করছে৷
ডিসেম্বর: বার্লিন
বছর শেষ৷ অথচ বার্লিনেই যাওয়া হলো না৷ ফলে ডিসেম্বরে যেতেই হবে বার্লিনে৷ ওই সময় বার্লিনের আবহাওয়া মোটেই আরামদায়ক নয়৷ কিন্তু ক্রিসমাসের সাজ মন ভরিয়ে দেয়৷ ২০১৮ সাল শেষ হওয়ার আগে মিউজিয়াম স্কোয়্যার আর জেমস সিমন গ্যালারির সেন্ট্রাল এন্ট্রান্স তৈরির কাজও শেষ হয়ে যাবে৷ আশা করা যায় বার্লিনের নতুন এয়ারপোর্ট তৈরির কাজও ততদিনে খানিক দূর এগোবে৷ ২০২০ সালের মধ্যে তা শেষ হওয়ার কথা৷