হেরোইনের চেয়েও ক্ষতিকর হচ্ছে মদ
১ নভেম্বর ২০১০অনেকেই হয়তো চমকে উঠবেন, এটি কি করে হয়? কারণ পশ্চিমা দেশগুলো ছাড়া আরও অনেক দেশ আছে যেখানে মদ্যপান বৈধ৷ অন্যদিকে হেরোইন কিংবা কোকেনের সামান্য পরিমাণও কারও কাছে পাওয়া গেলে পুলিশি জেরায় তার অবস্থা একেবারে যাচ্ছেতাই৷ তবে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের হিসাব মতে, মদ্যপানের ফলে যে কেবল মদ্যপায়ীই ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা নয়, এর ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে সামাজিক পর্যায় পর্যন্তও৷ এবং এই ক্ষতির পরিমাণ হেরোইন কিংবা কোকেনের চেয়ে অনেক বেশি৷
ব্রিটেনের ইন্ডিপেন্ডেন্ট সায়েন্টিফিক কমিটি অন ড্রাগস বা আইএসসিডি এবং ইউরোপীয়ান মনিটরিং সেন্টার ফর ড্রাগস অ্যান্ড ড্রাগস অ্যাডিকশন বা ইএমসিডিডিএ, এই দুটি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীদের করা এক গবেষণাতে বের হয়ে এসেছে নতুন এই তথ্য৷
এই গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন আইএসসিডি এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ডেভিট নাট৷ তাঁর এই গবেষণা সম্প্রতি একটি মেডিকেল জার্নালেও প্রকাশিত হয়েছে৷ উল্লেখ্য, এক বছর আগেও এই প্রফেসর ডেভিড নাট ব্রিটেনের মাদক অপব্যবহার উপদেষ্টা পরিষদ বা এসিএমডির সদস্য ছিলেন৷ তখন তিনি জানিয়েছিলেন যে গাঁজার চেয়ে অ্যালকোহল অনেক বেশি ক্ষতিকর৷ তাঁর এই কথার জেরে পরবর্তীতে তাঁকে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগও করতে হয়েছিল৷
বিজ্ঞানীরা এই গবেষণায় দেখার চেষ্টা করেন যে সেবনকারীর জন্য এবং অপরের জন্য মাদক কতটুকু ক্ষতিকর৷ এক্ষেত্রে সেবনকারীর নয়টি বিষয় এবং অপরের জন্য ছয়টি বিষয় খতিয়ে দেখা হয়৷ গবেষণা শেষে দেখা যায়, ১০০ নম্বরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭২ নম্বর পেয়েছে অ্যালকোহল বা মদ৷ এরপর হেরোইন ৫৫ ও ক্র্যাক ৫৪ নম্বর পেয়ে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে৷ কোকেন এবং তামাকের অবস্থান পঞ্চম এবং ষষ্ঠ৷
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে, প্রতি বছর অ্যালকোহল জনিত কারণে সারা বিশ্বে ২৫ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়৷
গবেষক প্রফেসর ডেভিড নাট বলেন, ‘‘এটা বিশেষভাবে লক্ষ্য করার মত যে অ্যালকোহল এবং তামাকের মত বৈধ মাদক ক্ষতির দিক থেকে অনেক সামনে৷ তার মানে অবৈধ মাদকের মত এসব বৈধ মাদকও কোন অংশেই কম ক্ষতিকর নয়৷'' কিন্তু প্রশ্ন, বিজ্ঞানীদের এই তত্ত্ব কি কোন পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে?
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়