1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বায়োনিক্স-এর ক্ষেত্রে অগ্রগতি

২১ জুন ২০১৩

মরুভূমির বালুর মধ্যে ‘স্যান্ডফিশ'-এর চলাফেরার রহস্য ভেদ করে বিজ্ঞানীরা বিমান চলাচল সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেই জ্ঞান প্রয়োগ করতে চাইছেন৷

https://p.dw.com/p/18uD4
ছবি: MEHR

ইঙো রেশেনব্যার্গ প্রকৃতির রহস্য উন্মোচন করে আধুনিক প্রযুক্তির মধ্যে তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন৷ বলা যায় তিনি প্রকৃতি থেকে নকল করছেন৷ আপাতত তাঁর নজর ‘স্যান্ডফিশ' বা বালুর গিরগিটির দিকে৷ সাহারা মরুভূমির এই বাসিন্দা দিব্যি বালুর মধ্যে সাঁতার কাটতে পারে৷ তার ত্বক যে বড়ই পিচ্ছিল৷ রেশেনব্যার্গ বলেন, ‘‘চোখকান খোলা রেখেই তো আমরা প্রকৃতির মধ্যে থাকি৷ মরুভূমির মধ্যে অনেকক্ষণ ধরে তাকিয়ে থেকেও এমন আশ্চর্য একটা ব্যাপার কিন্তু সহজে চোখে পড়ে না৷ তারপর মনে হয়, আরে! – এই গুণ তো প্রযুক্তির উপরও প্রয়োগ করা যেতে পারে৷''

বার্লিনের বায়োনিক্স ও বিবর্তন গবেষণা কেন্দ্রে রেশেনব্যার্গ ও তাঁর সহকর্মীরা ‘স্যান্ডফিশ'-এর আশ্চর্য ত্বকের রহস্য ভেদ করার চেষ্টা করছেন৷ নানা রকম শক্ত বা পিচ্ছিল ধাতু ও কাচ নিয়ে পরীক্ষা চলছে৷ তার উপর বিভিন্ন ধরণের বালুকণা ঢেলে পরীক্ষা করা হচ্ছে, সেগুলি কত বাধার মুখে পড়ে৷

05.05.2010 DW-TV Projekt Zukunft sandfisch 1
বালুর মধ্যে সাঁতার কাটে স্যান্ডফিশ

ফল কিন্তু সব সময়েই একই রকম৷ সব বস্তুই ‘স্যান্ডফিশ'-এর ত্বকের তুলনায় বেশি বাধার মুখে পড়ে৷ গবেষকরা সেই ত্বকের কাঠামোর বিশেষ গঠন বুঝতে পেরেছেন৷ এই কাঠামোই সম্ভবত ‘স্যান্ডফিশ'-এর বিশেষ গুণের কারণ৷ এই গঠন নকল করেই কৃত্রিম উপকরণ তৈরি করা হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই সম্ভব হবে৷

বার্লিনের এই প্রতিষ্ঠানে বিমান তৈরি নিয়েও কাজ চলছে৷ সেখানে বিবর্তন ও পাখির ওড়ার প্রক্রিয়ার উপর পরীক্ষা চালানো হয়৷ বাতাসের স্রোতের মুখে নিখুঁতভাবে পাখির ডানার গঠন বোঝার চেষ্টা করেন তাঁরা৷ এভাবে বিমান নির্মাণ শিল্পের জন্য নতুন উপকরণ তৈরির কাজ চলছে, যা বিমানের বাইরের অংশের আকার-আয়তন বদলে তাকে বাতাসের চাপের বাধা মোকাবিলার জন্য আরও উপযুক্ত করে তুলবে৷

সেই সাথে বিবর্তনের স্বরূপও খতিয়ে দেখা হয়৷ বিবর্তন প্রক্রিয়ায় যে রূপান্তর ঘটে, রেশেনব্যার্গ কৃত্রিমভাবে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করেন৷ পরীক্ষা ও ভুলত্রুটির ভিত্তিতেই পরের পরীক্ষা এগোতে পারে৷ এবার এমন এক পাইপ তৈরি করতে হবে, যার দেওয়াল তরল স্রোতের মুখে সবচেয়ে কম বাধা সৃষ্টি করে৷ শুধু অঙ্ক কষে এমন কাজ করা অত্যন্ত কঠিন৷ রেশেনব্যার্গ তাই পরীক্ষা ও ভুলত্রুটির মাধ্যমে লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন৷ যেমন খেলার এক চাকতির মাধ্যমে স্থির করা হচ্ছে, ছয়টি স্ক্রু পাইপটিকে কোন দিকে ঠেলবে৷ কোনো একটি দিকে ঠেললে যদি তরলের চলাচলের আরও উন্নতি হয়, তাহলে সেটাই হবে ভিত্তি৷ এভাবে ধীরে ধীরে আদর্শ ফলাফলের দিকে এগোনো যাবে৷

এমন সব পরীক্ষার ভিত্তিতে গবেষকরা ‘সিমুলেশন'-এর জন্য প্রয়োজনীয় প্রোগ্রামিং করেন৷ এর মাধ্যমে যেমন কোনো সেতুর আকার-আয়তন আরও নিখুঁত করে তোলা যায়৷ অনেক ছোটোখাটো রূপান্তরের মাধ্যমে বিশেষ রকমের হাল্কা অথচ স্থিতিশীল সেতু তৈরি করা যায়৷ প্রকৃতি থেকে শিক্ষা নিয়ে চলা এই পথ অনেক ক্ষেত্রেই বেশি কার্যকর হয়৷ শুধু অঙ্ক কষে যা পাওয়া যায় না৷

এই প্রোগ্রামের বিশেষত্ব হলো, শুরুর ধাপগুলি বদলে দিলে অন্য রকম সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসে৷ প্রথমে মনে হয়, সে সব অর্থহীন৷ কিন্তু বিবর্তন ভিত্তিক কৌশল কখনো খারাপ ফল দেয় না৷

এসবি/ডিজি