স্মার্টফোনের পর এবার আসছে সুপারফোন
২৭ মার্চ ২০১০মোবাইল ফোনের বাজারে ২০০৯ সালটা ছিল ‘টাচস্ক্রিন'এর – ২০১০ সালে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে অন্যান্য বাড়তি গুণাগুণের দিকে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাস শহরে সিটিআইএ মেলায় এই প্রবণতার কিছুটা পূর্বাভাষ পাওয়া গেল৷ ‘স্প্রিন্ট' কোম্পানি তাইওয়ানের ‘এইটটিসি'র সঙ্গে হাত মিলিয়ে একঝাঁক নতুন পরিষেবা সহ আমেরিকায় যে নতুন এক মোবাইল ফোন চালু করতে চলেছে, তা নতুন এক যুগের সূচনা করছে৷
‘এইচটিসি ইভো ফোর-জি' – এই নামের পেছনে লুকিয়ে রয়েছে নতুন এই ডিভাইস৷ দক্ষিণ এশিয়ায় যেখানে মোবাইল ফোনের দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগের জন্য এখনো থ্রি-জি নেটওয়ার্কই পুরোপুরি চালু করা যাচ্ছে না, সেখানে বিশ্বের অন্য কিছু অঞ্চলে আরও একধাপ এগিয়ে ফোর-জি চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে৷ ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে এই ফোনে সেকেন্ডে ১০ মেগাবাইট ফাইল ডাউনলোড করা যায়৷ এমন শক্তি ধারণ করতে পাতলা এই মোবাইল ফোনে রয়েছে ১ গিগাহারৎস প্রসেসর৷ সেইসঙ্গে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমকে এই ফোনের জন্য উপযুক্ত করে তোলা হয়েছে৷
চমকের তালিকার এখানেই শেষ নয়৷ ফোনের একদিকে প্রায় সবটা জুড়েই রয়েছে ১০.৯ সেন্টিমিটার মাপের বিশাল এক পর্দা৷ ৭২০ পি মানের হাই-ডেফিনেশন ভিডিও দেখা যাবে তাতে৷ ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরাকে অনায়াসে এইচডি ভিডিও তোলার জন্যও ব্যবহার করা যাবে৷ দ্রুতগতির ফোর-জি নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে ইউটিউব'এর হাই-ডেফিনেশন ভিডিও দেখতে পারেন৷ চাইলে নিজের তোলা ভিডিও দ্রুত আপলোড করতে পারেন৷ বেশীক্ষণ ধরে ভিডিও দেখার জন্য ফোনকে দাঁড় করাবার এক স্ট্যান্ডও রয়েছে৷ তারপরেও যদি পর্দা ছোট লাগে কোনো চিন্তা নেই৷ ফোনের এইচডিএমএ সকেটে তার গুঁজে অন্য প্রান্ত লাগিয়ে দিন আপনার নতুন বিশাল এইচডি ফ্ল্যাটস্ক্রিন টেলিভিশনের সঙ্গে৷ তখন ভিডিও প্লেয়ারের কাজ করবে এই ফোন৷
এইচটিসি'র এই ফোনের ব্রাউজারের সঙ্গে কম্পিউটারের ব্রাউজারেরও প্রায় আর কোনো তফাতই নেই৷ এমনকি ফ্ল্যাশ-অ্যানিমেশনও সামলাতে পারে এই ব্রাউজার৷ মাত্র ৩ সেকেন্ডের মধ্যে পর্দায় ফুটে উঠবে ‘গুগল আর্থ'এর মানচিত্র৷ রয়েছে আরও অনেক গুণাগুণ৷
ভবিষ্যতের এই ফোনের কেবল একটাই সমস্যা রয়েছে৷ এই সমস্যার সঙ্গে প্রযুক্তির যত না সম্পর্ক রয়েছে, তার থেকেও বেশী সম্পর্ক রয়েছে বিভিন্ন দেশের নীতিমালার উপর৷ আসলে এই মুহূর্তে দ্রুতগতির মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগের জন্য সমান্তরালভাবে একাধিক প্রযুক্তি চালু করার চেষ্টা চলছে৷ যেমন ইউরোপে বর্তমানে ইউএমটিএস মানের উত্তরসূরি হিসেবে ক্রমশঃ এলটিই নামের এক নতুন প্রযুক্তি বাজারে আনা হচ্ছে৷ এতে সেকেন্ডে ১.২ গিগাবাইট গতিতে ডাউনলোড করা সম্ভব৷ ফলে ‘এইচটিসি ইভো ফোর-জি' আমেরিকায় স্প্রিন্ট নেটওয়ার্কে দিব্যি চললেও ইউরোপে আনলে প্রায় পঙ্গু হয়ে পড়বে৷ তখন হয়তো ফোনের আলাদা এলটিই সংস্করণ বাজারে আনতে হবে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম