স্মরণে হিটলারের পরাজয়ের দিন
৭০ বছর আগের এই দিনে প্রায় সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া যুদ্ধের দামামা বন্ধ হয়েছিল৷ সেদিনই হিটলারের বাহিনী আত্মসমর্পন করেছিল৷ তাই জার্মানি প্রতি বছর স্মরণ করে সেই দিনটিকে৷
দীর্ঘতম যুদ্ধের স্মৃতি
আখেন শহরের হ্যুর্টিগেনের কাছের এই জঙ্গলে হিটলারের বাহিনীর সঙ্গে মিত্র বাহিনীর ভয়াবহ যুদ্ধ হয়েছিল৷ ১৯৪৪ সালের অক্টোবরে শুরু হয়ে ১৯৪৫ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চলে এই যুদ্ধ৷ তারপর আত্মসমর্পন করে জার্মানরা৷ জার্মানির মাটিতে আর কোথাও এত দীর্ঘ যুদ্ধ হয়নি৷
রেমাগেনের সেই ‘অলৌকিক’ সেতু
রেমাগেন শহরের এই সেতুটি ‘মিরাকল অফ রেমাগেন’ নামে পরিচিত৷ এমন নামকরণের কারণও আছে৷ ১৯৪৫ সালের ৭ই মার্চ প্রথমবারের মতো রাইন নদীর ওপরের এই সেতু অতিক্রম করে মিত্র বাহিনী৷ শুরু হয় জার্মান বাহিনীর বোমা বর্ষণ৷ মিত্র বাহিনী দখল করে নেয়ার দশ দিন পর ধসে পড়ে ব্রিজটি৷ কিন্তু আধুনিক জার্মানি সেই ইতিহাস ভুলেনি৷ ব্রিজটির ধ্বংসাবশেষের মধ্যেই গড়ে তোলা হয়েছে ‘শান্তির জাদুঘর’৷
রাইশভাল্ডের সমাধি
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত অ্যামেরিকান যোদ্ধাদের মৃতদেহ যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হলেও ব্রিটিশ যোদ্ধাদের জার্মানিতেই সমাধিস্থ করা হয়৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের ১৫টি সমাধি রয়েছে জার্মানিতে৷ এর মধ্যে রাইশভাল্ড বনাঞ্চলের এই ‘কমনওয়েলথ ওয়ার সেমেট্রি’-ই সবচেয়ে বড়৷ ৭৬৫৪ জনকে সমাধিস্থ করা হয় এখানে৷
সবচেয়ে বড় যুদ্ধের স্মৃতি
জার্মানির মাটিতে সবচেয়ে বড় যুদ্ধটি হয়েছিল এই সিলো হাইটসে৷ ১৯৪৫ সালের ১৬ এপ্রিল বার্লিন অভিমুখে অভিযানের অংশ হিসেবে আক্রমণ শুরু করে সোভিয়েত বাহিনী৷ ৯ লাখ সৈন্য নিয়ে গড়া সোভিয়েত বাহিনীর মুখোমুখি হয়েছিল ৯০ হাজার জার্মান৷ অনেক সৈন্য মারা যায় সেই যুদ্ধে৷
রুশ-জার্মান জাদুঘর
১৯৪৫ সালের ৮ই থেকে ৯ই মে-র মধ্যে বার্লিন-কার্লহোর্স্ট অফিসার্স মেস-এ আত্মসমর্পনের দলিলে স্বাক্ষর করে জার্মান বাহিনী৷ সেখানেও গড়ে তোলা হয়েছে জাদুঘর৷ জাদুঘরের মূল আকর্ষণ ইংরেজি, জার্মান এবং রুশ ভাষায় লেখা আত্মসমর্পনের সেই দলিল৷
সোভিয়েত সৈন্যদের স্মরণে
১ হাজার বর্গ মিটার জায়গা জুড়ে ট্রেপটাওয়ারের এই স্মৃতিসৌধ৷ দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় বার্লিন অভিযানে যেসব সোভিয়েত সৈন্য প্রাণ হারিয়েছিলেন, তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই গড়ে তোলা হয় এটি৷ স্মৃতিসৌধের মূল কাঠামোটি আসলে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দুটি প্রতীকি পতাকা৷ ‘রেড আর্মির’ প্রয়াত সদস্যদের স্মরণ করতে পতাকা দুটির আদল তৈরি করা হয়েছে লাল গ্রানাইট পাথর দিয়ে৷
পস্টডাম সম্মেলন
নাৎসি বাহিনীর আত্মসমর্পনের পর জার্মানির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনায় বসে মিত্র শক্তির প্রধান তিন দেশ যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং রাশিয়ার প্রধান৷ পস্টডামের সেসিলিয়ানহোফ প্যালেসে বসে সেই বৈঠক৷ হ্যারি ট্রুম্যান, উইনস্টন চার্ইল এবং জোসেফ স্ট্যালিন অংশ নিয়েছিলেন সেই বৈঠকে৷