স্বাধীন কসোভো আইনী স্বীকৃতি পেল
২৩ জুলাই ২০১০আদালতের রায়
বিগত ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সার্বিয়া থেকে নিজেদের স্বাধীন বলে ঘোষণা দিয়েছিল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ কসোভো৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২২ টি দেশ সহ মোট ৬৯টি দেশ এখন পর্যন্ত কসোভোকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও তা কখনোই মেনে নেয়নি সার্বিয়া ও তাদের বন্ধু রাষ্ট্র রাশিয়া৷ আন্তর্জাতিক মহলে সুবিধা করতে না পেরে ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসেই কসোভোর স্বাধীনতাকে সার্বিয়া চ্যালেঞ্জ করেছিল আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে৷ উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে বৃহস্পতিবার আদালত তাঁর রায়ে জানিয়ে দিয়েছে, কসোভোর স্বাধীনতার ঘোষণায় আন্তর্জাতিক আইনের কোন লঙ্ঘন হয়নি৷ আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের প্রেসিডেন্ট হিসাশি ওয়াদা জানান, বিচারক প্যানেলের ১০ জন কসোভোর স্বাধীনতার পক্ষে তাঁদের মত দিয়েছেন৷ বিপক্ষে মত দিয়েছেন চার জন৷
প্রতিক্রিয়া
আদালতের এই রায়ে দুই ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে দুই শিবিরে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কূটনীতিক আদালতের এই রায়কে সার্বিয়ার মুখে মাইক টাইসনের ঘুঁষির সঙ্গে তুলনা করেছেন৷ কসোবোর প্রেসিডেন্ট ফাতমির সেজদিউ বলেছেন এই রায়ের ফলে কসোভোর স্বাধীনতা নিয়ে সকল প্রকারের সন্দেহ দুর হলো৷ প্রধানমন্ত্রী হাশিম থাচি এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ আজকের দিনে কেউ বিজয়ী কিংবা পরাজিত নয়৷ আদালত কসোভোর বাস্তবতাকে সম্মান দেখিয়েছে৷ এবং এটা আমার দেশ, জনগণ এবং এই অঞ্চলের জন্য একটি নতুন অধ্যায়৷'
ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে৷ জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে সার্বিয়া এবং কসোভোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন৷
অন্যদিকে কসোভোকে স্বীকৃতি না দেওয়ার পূর্ব অবস্থানেই রয়েছে সার্বিয়া৷ দেশটির প্রেসিডেন্ট বরিস তাদিক জানিয়েছেন তারা কখনোই কসোভোর স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেবেন না৷ আদালতের রায়ের পর সার্ব পররাষ্ট্র মন্ত্রী ভুক জেরেমিক বলেন, ‘আমি আশা করি, আদালতের এই সুক্ষ্ম সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক মহলের কোন গুরুত্বপূর্ন সদস্য কসোভোর ব্যাপারে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করবেন না৷ আমরা নিশ্চিতভাবেই আমাদের সাংবিধানিক অবস্থান পরিবর্তন করবো না৷'
উল্লেখ্য, সার্বিয়া এখনও কসোভোকে তাদের প্রদেশ বলে দাবি করে৷ এদিকে সার্বিয়ার বন্ধু রাষ্ট্র রাশিয়াও কসোভোকে স্বীকৃতি দেবে না বলে জানিয়েছে৷ তার সঙ্গে কন্ঠ মিলিয়েছে ইউরোপের দেশ স্লোভাকিয়া৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম