স্টাসি কারাবন্দি থেকে শিল্পী সান্তোস
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১০স্টাসির অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রামাণ্য চিত্র বানাচ্ছেন সান্তোস৷ তাঁর এই কাজে সহযোগিতা করছেন সন্তান পাউল৷ ছবিতে দেখা যাবে সাবেক এই বন্দিশালার তিন কয়েদির মুখে বিচিত্র অভিজ্ঞতার বর্ণনা৷ থাকছে হোহেনশোয়েনহাউজেন বন্দিশালার অন্ধকার কুঠুরির বিভিন্ন দৃশ্য৷ তবে এখানেই শেষ নয় সান্তোসের গল্প৷
রয়েছে নিজের ছোট্ট স্টুডিও৷ অধিকাংশ সময় কাটান তাঁর জীবনের নানা অভিজ্ঞতা ও শৈল্পিক মনের কল্পনা তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলে৷ আর সপ্তাহে দুইদিন দর্শনার্থীদের ঘুরে ঘুরে দেখান বন্দিশালার সবকিছু৷ বর্ণনা করেন তাঁর দেখা সেই ভয়াবহ ঘটনাগুলো৷ এখন সবকিছুই স্মৃতি৷ তবে তিনি চান, যেন কখনও মানুষ ভুলে না যায় এসব কালো ইতিহাস৷
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, সোভিয়েত দখলদারিত্বের সময় এবং তার পরেও বেশ কিছু কাল চলেছে স্টাসি বাহিনীর আইন বহির্ভূত নির্যাতন৷ সন্দেহভাজন বন্দিদের ধরে এনে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আগেই চলতো দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ৷ মাটির নিচের ঘনকালো অন্ধকার কুঠুরিতে সবটুকু সময় কাটাতে হতো ভয় আর আতঙ্কে৷ বন্দিদের কেউ জানতো না, তারা কোথায়? কিংবা পরের মুহূর্তটি কেমন হবে? আর মুক্তিই বা কখন মিলবে?
সান্তোসকে এই বন্দিশালায় যেতে হয়েছিল যখন তিনি সাবেক জিডিআর ছেড়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন৷ কারণ তাঁর বান্ধবী ছিলেন পশ্চিমে৷ কিন্তু কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আবেদন করেও কোন কাজ হয়নি৷ তাই অন্য এক বন্ধুকে সাথে নিয়ে পশ্চিমে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন সান্তোস৷ কিন্তু কর্তৃপক্ষের নজর এড়ানো সম্ভব হয়নি৷ ধরা পড়ে যান দু'জনেই৷ দু'বছরের কারাদণ্ড হয় সান্তোসের৷
অবশ্য, পুরোটা সময় তাঁকে ঐ বন্দিশালায় কাটাতে হয়নি৷ পশ্চিম জার্মানি অর্থের বিনিময়ে মুক্ত করেন তাঁকে৷ ১৯৮৩ সালের ৪ আগস্ট জিডিআর ছেড়ে পাড়ি জমান পশ্চিম বার্লিনে৷ সান্তোসের এসব কাহিনী শুনতে শুনতে আজও স্টাসির সেই বন্দিশালা ঘুরে ঘুরে দেখেন হাজারো দর্শনার্থী৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ