1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গলদ কোথায়?

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১৯ জুলাই ২০১৩

বিহারের ছাপরা জেলায় একটি প্রাথমিক স্কুলে বিষাক্ত মিড-ডে মিল খেয়ে এখনো পর্যন্ত মারা গেছে ৬ থেকে ১০ বছর বয়সের ২৩টি বাচ্চা৷ মানব-সৃষ্ট এই ট্র্যাজিডির সান্ত্বনা হয়না৷ চলছে দোষারোপ পাল্টা দোষারোপ, রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ি৷

https://p.dw.com/p/19ANX
ছবি: picture alliance/AP Photo

ফরেনসিক রিপোর্টে এবং মতদেহগুলির পোস্ট-মর্টেম রিপোর্টে বলা হয়েছে বিহারের ছাপরা জেলার একটি গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের মিড-ডে মিলে ছিল ‘অরগ্যানোফসফোরাস‘ নামে বিষাক্ত কীটনাশক রাসায়নিক তেল, যা ব্যবহার করা হয় ইঁদুর ও অন্যান্য পোকামাকড় মারার জন্য খেতে খামারে৷ মিড-ডে মিল রান্নার তেল রাখা হয়েছিল ঐ বিষাক্ত কীটনাশকের টিনে, যা খেয়ে ঢলে পড়লো ২৩টি নিষ্পাপ শিশু৷ এসেছিল স্কুলে পড়তে, কিন্তু ঘরে আর ফেরা হলোনা৷

দেশের সুশীল সমাজ জানতে চায়, কেন এমনটা হলো? মিড-ডে মিল স্কিমের গলদটা আসলে কোথায়? গলদটা দিনের আলোর মত পরিষ্কার৷ রান্নার আগে মিড-ডে মিলে যে সব খাদ্যসামগ্রী ব্যবহার করা হয়, যেমন চাল, ডাল, তেল, সবজি ইত্যাদির গুণগত মান পরীক্ষা করা হয়না৷ রান্নার পরেও তা করা হয়না৷ কাগজে-কলমে যেটা করা বাধ্যতামূলক৷ নিয়মবিধি অনুসারে মিড-ডে মিলে প্রোটিন, ক্যালরি-র পরিমাণ ঠিক আছে কিনা তাও পরীক্ষা করার কথা৷ কিন্তু তা কখনই করা হয়না৷ এমনকি মিড-ডে মিল রান্নার স্বাস্থ্যসম্মত জায়গা নেই বেশির ভাগ স্কুলে৷

Indien Schule in Chhapra 16.07.2013
গুরুতর অসুস্থ এক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছেছবি: picture alliance/landov

শিশুদের এই মৃত্যু মিছিলে ইন্ধন জুগিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি৷ ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা ভাঙচুর চালায় স্কুলে, মিড-ডে মিলের অফিসে৷ রাস্তা অবরোধে নামে৷ ভবিষ্যতে মিড-ডে মিল বর্জনের ডাক দেয়৷ বিহারের শাসক দল সংযুক্ত জনতা দলের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের ইস্তফা দাবি জানায় রাজনৈতিক দলগুলি৷

শাসক দলের শিক্ষামন্ত্রী বিরোধী দল লালু প্রসাদের আরজেডি দলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করায়৷ অভিযোগ, ঐ প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা আরজেডি দলের সদস্যা এবং যে মুদিখানার দোকান থেকে তেল কেনা হয়েছিল, তার মালিক প্রধান শিক্ষিকার স্বামী, যিনি আরজেডি দলের সক্রিয় সদস্য৷ বিহার সরকারের বদনাম করাই এর উদ্দেশ্য৷

বিশ্বের বৃহত্তম স্কুল মিল প্রকল্পে সাড়ে দশ কোটি বাচ্চা অন্তর্ভুক্ত৷ উদ্দেশ্য সাধু সন্দেহ নেই৷ সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা প্রসারে গ্রামগঞ্জের গরিব পরিবারের স্কুল-বিমুখ বাচ্চাদের স্কুলমুখী করা এবং শিশুদের পুষ্টিকর আহার জোগানো৷ এই কাজে যুক্ত করা হয় স্বনির্ভর মহিলা গ্যোষ্ঠীগুলিকে, যাতে তাঁরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারে৷ এর জন্য বিপুল ব্যয়ভার নির্বাহে বিশেষ কর বসিয়ে সরকার ২০১১-১২ সালে সংগ্রহ করে সাড়ে সাতাশ হাজার কোটি টাকা৷ কিন্তু গোড়ায় গলদ৷ বাস্তবায়নের প্রতি স্তরে লক্ষিত দুঃখজনক গাফিলতি আর ঔদাসীন্য৷

যথারীতি কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার ঘুম থেকে উঠে খাদ্যসামগ্রীর গুণগত মান পরীক্ষার জন্য একটি মনিটারিং কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা করেছে৷ রাজ্য সরকারের তরফে বিজ্ঞাপন দিয়ে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের মিড-ডে মিল দেবার আগে স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং রাধুঁনিকে আগে তা চেখে দেখতে হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য