তিনি লিখেছেন, ‘‘সুন্দরকে সবাই ভালোবাসে৷ আমরা সব সময় সুন্দর কিছু আশা করি৷ সুন্দর নারী, সুন্দর বাড়ি আর সাথে সুন্দর একটা চাকরি থাকলেতো কোনো কথায় নেই৷ এমন সব চাওয়া পাওয়া শুধু বাঙালিদের নয়৷ বিবেকবান মানুষ হলে তো এসব কিছুই চেয়ে থাকে৷ মানুষের আবেগকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য ডয়চে ভেলেকে আরেকবার ধন্যবাদ৷''
পাঠক বারিক বেশ কয়েকটি ইমেল পাঠিয়েছেন৷ তাঁর লেখা পরের ইমেলটি এরকম – ‘‘সামনে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতর৷ তাই তো রাস্তায় রাস্তায় চাঁদাবাজি৷ যেন সরকারি কর আদায়ে তারা ব্যস্ত৷ চাঁদা আদায়ের এসব দৃশ্য নতুন কিছু নয়৷ প্রতি বছর ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের নানামুখী দুর্ভোগের কথা উঠে এসেছে আপনাদের ওয়েবসাইটে৷ প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল এরকম ‘প্রতি বছর ঈদের সময় ঘরে ফেরা মানুষদের নানামুখী দুর্ভোগে পড়তে হয়'৷ যাদের ভাগ্যে টিকিট মেলে, তাদের গুনতে হয় অতিরিক্ত অর্থ৷ এমন অবস্থায় কি সরকারের কিছুই করার নেই, নাকি সরকারও এসব লোভী মানুষগুলোর একটি৷ যারা সময় বুঝে সাধারণ মানুষের কাছে থেকে অতিরিক্ত অর্থ হাসিল করে তাদের শাস্তি চাই৷''
পরের ইমেল, ‘‘আমি ক্লাব কর্মকান্ড জানিয়ে আপনাদের কাছে একটি ছবি সহ ইমেল পাঠিয়েছি৷ অনেক আশা করেছিলাম আমার ক্লাব কর্মকান্ডের খবর ডয়চে ভেলের পাঠক ভাবনায় স্থান পাবে৷ কিন্ত দুঃখের বিষয় এই যে, ডয়চে ভেলে থেকে আমি কোনো সাড়া পাইনি৷ ফলে আমার ক্লাবের সদস্যগণ হতাশ৷ ডয়চে ভেলে আমার ক্লাবের প্রতি বৈষম্য করায় আমিও হতাশ৷ তাছাড়া আমার যতগুলো চিঠি ডয়চে ভেলের পাঠক ভাবনায় স্থান পেয়েছে সেসব চিঠিগুলোর কোনোটাতেই আমার ক্লাবের নাম দেওয়া হয়নি৷ ডয়চে ভেলের কাছে আমার প্রশ্ন, এখন কি আপনারা কোনো ক্লাবকেই মূল্যায়ন করেন না? এই ইমেলটি গুরুত্বের সাথে দেখার জন্য আমি আপনাদের অনুরোধ জানাচ্ছি৷ আপনাদের অনুপ্রেরণা পেলে আমার ক্লাব থেকে সামনে আরও নতুন নতুন কর্মসূচি নেয়া হবে৷ তাই উত্তরের অপেক্ষাই রইলাম৷''
-
ডয়চে ভেলের ক্যান্টিন
আমরা দুপুরে যা খাই
ডয়চে ভেলের বয়স ৬০ হলো৷ বন অফিসের কর্মী সংখ্যা প্রায় ১৫০০৷ সাংবাদিক কর্মীরা বিশ্বের এক প্রান্তের খবর পৌঁছে দেন অন্য প্রান্তে৷ শ্রোতা, পাঠক আর দর্শকদের সর্বশেষ খবর জানাতে কর্মীদের থাকতে হয় সবসময়ই সতর্ক৷ তাই শরীর, মনকে ফিট রাখতে দুপুরেও চাই মানসম্মত খাবার৷ ক্যান্টিনের খাবার কি তা পূরণ করছে?
-
ডয়চে ভেলের ক্যান্টিন
শেফ কুক
প্রতিদিন রান্না হয় প্রায় ১৪/১৫০০ লোকের জন্য৷ ক্যান্টিনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুক ছাড়াও কাজ করেন প্রায় ২৫ জন কর্মী৷ ‘শেফ কুক’ মিস্টার ম্যুলার বলেন, বিভিন্ন দেশের এবং বিভিন্ন ধর্মের কর্মীরা ক্যান্টিনে খেতে আসেন৷ তাই এদিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়৷ ক্যান্টিনে প্রতিদিন মাংস থাকলেও সপ্তাহে অন্তত দু’দিন মাছ রাখা হয় আর প্রতিদিনই আয়োজন থাকে নানা সবজির৷
-
ডয়চে ভেলের ক্যান্টিন
রকমারি সালাদ
প্রতিদিন থাকে নানা ধরণের কাটা সালাদ, ড্রেসিং মেশানো বা ছাড়া৷ চাইলে নিজের ইচ্ছে মতো বিভিন্ন তেল বা ড্রেসিং মিশিয়ে নেওয়া যায়৷ বেশি স্বাস্থ্য সচেতন যাঁরা, তাঁরা এক বাটি সালাদ আর সাথে এক টুকরো রুটি দিয়েই দুপুরের খাবার সেরে ফেলেন৷
-
ডয়চে ভেলের ক্যান্টিন
অ্যান্টি পাস্টি
এটা এক ধরণের ইটালিয়ান সালাদ৷ বেগুন, বিভিন্ন সবজি, মাছ, মাংশ ছোট করে কেটে অলিভ অয়েলে ভাজা হয়৷ এটা খুবই জনপ্রিয় খাবার, বিশেষ করে গরমের সময়৷ যা সালাদ হিসেবেই পরিচিত, অর্থাৎ ঠান্ডা৷ তবে বেগুন ভাজি দেখে কিন্তু দেশের বেগুনের কথাই মনে করিয়ে দেয়৷
-
ডয়চে ভেলের ক্যান্টিন
নানা রকম গরম খাবার
প্রতিদিন দু’রকমের স্যুপ থাকে৷ কয়েক রকমের গরম খাবার থাকে৷ থাকে বিভিন্ন দেশের খাবারও, অর্থাৎ স্পেনিশ, ইটালিয়ান, চাইনিজ, মেক্সিকান, অ্যামেরিকান, ইন্দোনেশীয়, এমন কি মাঝে মধ্যে ভারতীয় খাবারও থাকে৷ সে খাবার আদতে কতটা ভারতীয় – সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ৷ তবে খাবারের নামগুলো বেশ,মাদ্রাজ আর্ট বা কলকাতা আর্ট ইত্যাদি৷ খাবার নিজেদের ইচ্ছে, পছন্দ এবং প্রয়োজন মতো নিজেরাই প্লেটে তুলে নিতে পারেন যেন অপচয় না হয়৷
-
ডয়চে ভেলের ক্যান্টিন
দৃষ্টি নন্দন ফ্রুট সালাদ
প্রতিদিনই প্রচুর তাজা মৌসুমি ফল নানা ডিজাইন করে কেটে সুন্দর করে সাজানো থাকে৷ মাঝে মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা আম বা পেঁপেও থাকে, তবে সেগুলো আমাদের দেশের ফলের স্বাদের সাথে তেমন মিল নেই৷ তবুও আমাদের কাছে টানে৷ দামও বেশ, ১০০ গ্রাম কাটা ফলের দাম এক ইউরো৷ কাটা ফল পুরোটা বিক্রি না হলে পরের দিন আবার অন্য চেহারায় ভিন্ন স্বাদে ‘মিল্ক শেক’ হিসেবে ক্যান্টিনে উপস্থিত হয়৷ কখনো বা লেখা থাকে ‘স্পেশাল অফার’৷
-
ডয়চে ভেলের ক্যান্টিন
লোভনীয় ডেজার্ট
প্রতিদিনই নানা রকমের, স্বাদের পুডিং, মিষ্টি দই থাকেই আর মাঝে মাঝে থাকে গরম প্যানকেক বা অন্যান্য কেক৷ হঠাৎ কখনো পাটিশাপটা পিঠা বা এ ধরণের কিছু খাবারও দেখা যায়৷ এ সবের চেহারা পরিচিত মনে হলেও খেতে একেবারেই অন্যরকম৷ গরমকালে অবশ্যই থাকে নানা স্বাদের আইসক্রিম৷
-
ডয়চে ভেলের ক্যান্টিন
আগের দিনের বেচে যাওয়া খাবার
আগের দিনের বিফ স্টেক বা মাছ ভাজি থেকে গেলে পরেরদিন অন্য চেহারায়, অন্য রূপে হাজির হয় অন্য কোনো সুন্দর নতুন নামে৷ মিল্ক শেকের মতো৷ মিস্টার ম্যুলারের ভাষায়, নিজের বাড়িতে কেউ খাবার ফেলে দেয়না তবে ক্যান্টিনেই বা তা হবে কেন?
-
ডয়চে ভেলের ক্যান্টিন
খেতে আসেন অন্যরাও
ক্যান্টিনে ডয়চে ভেলের কর্মীরা ছাড়াও বাইরের যে কেউ খেতে পারেন তবে তাদের সামান্য বেশি দাম দিতে হয়৷ ডয়চে ভেলে ভবনের এক পাশে জাতিসংঘের অফিস এবং অন্য পাশে বনের সবচেয়ে উঁচু ভবন পোস্ট টাওয়ার৷ দুই অফিসের কর্মীরাও প্রায়ই আসেন ডিডাব্লিউ’র ক্যান্টিনে৷ প্রতিদিন চার পাঁচ রকমের মেন্যু থাকে৷ দাম তিন থেকে ছয় ইউরোপ মধ্যে৷ অবশ্যই যে কোনো পানীয় বা কফির মূল্য আলাদা৷
-
ডয়চে ভেলের ক্যান্টিন
খাবারের গুণগত মান
খাবারের গুণগত মানের দিকেও লক্ষ্য রাখা হয়৷ তবে কতটা? এ প্রশ্নের উত্তরে শেফ কুক হেসে বলেন, ঘরের খাবারের সাথে তুলনা না করে ক্যান্টিন মনে করে খেলে কোনো অসুবিধা নেই৷ আরো বলেন, বেশির ভাগ রান্নায়ই অলিভ অয়েল ব্যবহার করা হয় এবং আগের তুলনায় এখন মাখনের ব্যবহার কমিয়ে দেওয়া হয়েছে৷
-
ডয়চে ভেলের ক্যান্টিন
কিছুক্ষণের জন্য ‘হলিডে’ অনুভূতি
গরমকালে অনেকেই ক্যান্টিনের বাইরে বসে খেতেই পছন্দ করেন৷ রাইন নদীর গাঁ ঘেষে ডয়চে ভেলে ভবন৷ এর তীরে বসে খেতে কারই বা ভালো না লাগবে? খাওয়ার পর কেউ কেউ পাঁচ/দশ মিনিটের জন্য হেঁটেও আসেন৷
-
ডয়চে ভেলের ক্যান্টিন
ক্যান্টিনের ভেতরে
শীত কালে উপায় না থাকায় সবাই ভেতরে বসেই খায়৷ সাড়ে এগারোটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত ক্যান্টিন খোলা থাকে৷
-
ডয়চে ভেলের ক্যান্টিন
সেল্ফ সার্ভিস
নিজের খাবার নিজেই নিতে হয় এবং খাওয়া শেষ হলে ট্রেটা নিজেকেই তুলে নিতে হয়, যা পরে মেশিনে সরাসরি কিচেনে চলে যায় ধোয়ার জন্য৷ উন্নত দেশে, উন্নত নিয়ম৷ ক্যান্টিনের ভেতরে ও বাইরে অত্যন্ত পরিষ্কার এবং খুবই সুন্দর করে সাজানো৷ শুধু তাই নয়, প্রতিদিন রান্নার পর চুলা থেকে শুরু করে রান্নার প্রতিটি সরঞ্জাম এবং রান্নাঘর ধুয়ে মুছে তকতকে ঝকঝকে করা হয়৷
লেখক: নুরুননাহার সাত্তার
- ভাই বারিক, আপনার ইমেল আমরা পেয়েছি এবং মনোয়োগ দিয়ে পড়েছি, ধন্যবাদ৷ আপনি ঠিকই লক্ষ্য করেছেন যে আপনার নাম ঠিকানার সাথে ক্লাবের নামটি দেওয়া হয়না৷ আসলে আমাদের রেডিও অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবার পর থেকে পাঠক বন্ধুদের কাছ থেকে খুবই কম চিঠিপত্র পাচ্ছি৷ আগে ক্লাব গঠন করার জন্য শ্রোতাদের উৎসাহ দেওয়া হতো, শ্রেষ্ঠ ও কর্মমুখর ক্লাব নির্বাচন করা হতো, শুধু ক্লাবগুলোর জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হতো ডয়চে ভেলে থেকে৷ সেসব কিছুই আর এখন হচ্ছে না৷ ক্লাবগুলোরও কিছু নিয়মকানুন ছিলো, যেমন প্রতি সপ্তাহে অনুষ্ঠান সম্পর্কে মতামত জানিয়ে আমাদের কাছে চিঠি লিখতে হবে, ক্লাবের পক্ষ থেকে ডয়চে ভেলেকে জনপ্রিয় করতে ক্লাবের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে এবং সেসবের ছবি আমাদের কাছে পাঠাতে হবে, ইত্যাদি নানা বিষয়৷ এসব কিছুই আর এখন হয় না৷ তবে কখনো হবে না সেকথা অবশ্য বলা যায় না৷ আশা করবো আপনারা আমাদের সাথে থাকবেন এবং মতামত জানাবেন৷ আপনি এখন নিয়মিত আমাদের কাছে মতামত লিখে পাঠাচ্ছেন সেজন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ বাংলা বিভাগের সবার পক্ষ থেকে৷
বারিকের লেখা পরের ইমেল৷ ‘‘জার্মানির একটি মসজিদ তৈরিতে খরচ হয়েছে ৭৫ কোটি টাকা যেখানে একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন ১২০০ মুসল্লি৷ সুবহানআল্লাহ! এই প্রতিবেদনটি একজন মুসলমানের কাছে খুবই আনন্দের সংবাদ৷ এমন সব প্রতিবেদনের জন্য ডয়চে ভেলেকে ম্যানি ম্যানি থ্যাংকস৷ সামনে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈলুল ফিতর৷ এই ঈদ নিয়ে আপনাদের কি কোনো বিশেষ অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা আছে? থাকলে জানাবেন আশা করি৷''
এই বন্ধুরই লেখা আজকের শেষ ইমেল৷ ‘‘ডয়চে ভেলের ক্যান্টিনের খবর দিয়ে ছবিঘরটি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে৷ এ ধরনের মানসম্মত খাবার সব শ্রেণির মানুষের জন্যই প্রয়োজন৷ খাবার মানুষের শক্তি যোগায়, কর্মে উৎসাহ আনে৷''
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: জাহিদুল হক