1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘গ্রহণযোগ্যতা’ পাননি সিসি

১ জুন ২০১৪

ফলাফল কী হতে পারে আগেই জানা ছিল, তারপরও মিশরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অর্ধেকের কম ভোটারের অংশগ্রহণ এবং বাক্সে ভোট বাড়াতে নানা কৌশলের কারণে প্রশ্নের মুখে পড়েছে সাবেক সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির বিপুল বিজয়৷

https://p.dw.com/p/1C9np
সাবেক সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসিছবি: picture alliance/AP Photo

মিশরের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে যে ফল প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে অবসরপ্রাপ্ত ফিল্ড মার্শাল সিসি পেয়েছেন ৯৬ শতাংশ ভোট৷ পাঁচ কোটি ৪০ লাখ ভোটারের মধ্যে ৪৬ শতাংশ এবারের নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন বলে দাবি করা হলেও, তা প্রত্যাখ্যান করেছেন সিসির একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হামদিন সাবাহি৷ তিনি নিজে ৩ শতাংশেরও কম ভোট পেয়েছেন৷

২০১২ সালের নির্বাচনের কথা বাদ দিলে মিশরের জনগণ শাসক হিসেবে কেবল সেনাপ্রধানদেরই দেখে এসেছে৷ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সিসি প্রেসিডেন্ট হিসাবে আইনি বৈধতা পেলেও তাঁর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে৷

Ägypten Wahlen 26.05.2014
পর্যবেক্ষকদের ধারণা, ভোটের হার ছিল ২০ শতাংশ, তবে সরকারি হিসেবে সেটা ৪৬ছবি: Getty Images

হোসনি মুবারকের তিন দশকের স্বৈরাশাসনের অবসানের পর, ২০১২ সালে মিশরের ইতিহাসের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা মোহাম্মদ মুরসি৷ কিন্তু মাত্র এক বছরের মাথায় তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয় এবং সিসির নেতৃত্বে সেনাবাহিনী মুরসিকে উৎখাত করে৷

মুসলিম ব্রাদারহুড নিষিদ্ধ হওয়ায় এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আল-সিসির জয় এতটাই নিশ্চিত ছিল যে ভোটারদের মধ্যে কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ দেখা যায়নি মোটেই৷ যদিও সিসি ৮০ শতাংশ ভোট বাক্সে পড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন৷

সরকারি প্রচারমাধ্যম শেষ পর্যন্ত ৪৬ শতাংশ ভোট পড়ার কথা দাবি করলেও পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এই হার ২০ শতাংশের মতো হবে৷ আর বামপন্থি প্রার্থী হামদিন সাবাহির দাবি, ভোট পড়ার হার কোনোভাবেই ১৫ শতাংশের বেশি হবে না৷

Präsidentschaftswahlen in Ägypten 28.05.2014
৯৬ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন সিসিছবি: Reuters

এই সংখ্যা বাড়ানোর জন্য ভোটের প্রথম দিন ভোটগ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়৷ এরপর বুধবারের ভোট চলার মধ্যেই ভোটের সময় আরো একদিন বাড়ানোর চেষ্টা চলে৷

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাপদাহের কারণে অনেকেই কেন্দ্রে যেতে না পেরে ভাটের দিন বাড়ানোর আবেদন করেছেন৷ তবে অনেকেই একে ‘জালিয়াতির চেষ্টা' হিসাবে আখ্যায়িত করায় বুধবারই ভোটগ্রহণ শেষ হয়৷

কায়রোর ২৮ বছর বয়সি স্থপতি ওমর আমিন বলেন, ‘‘এটা রীতিমতো হাস্যকর৷ কে জিতবে সেটা আর চিন্তার বিষয় নয়, কতো ভোট পাবে – সেটাই মুখ্য৷''

আমিনের মতো অনেকেই ভোট দিতে যাননি এবং এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন৷ তাঁদের মন গলাতে ভোটের দ্বিতীয় দিন বুধবার মিশরে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি নেয়া হয় আরো কিছু ব্যবস্থা৷ বিপণি বিতানগুলো স্বাভাবিক সময়ের আগেই বন্ধ করে দেয়া হয়৷ আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি নেতারা ফতোয়া দেন – ভোট না দেয়া আর রাষ্ট্রকে অসম্মান করা সমার্থক৷ এমনকি মিশরীয় কপটিক চার্চের পোপও ভোট দেয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে বিবৃতি দেন৷

মিশরীয় এক তরুণী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘‘ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করায় মুসলিম ব্রাদারহুডকে তাঁরা সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়েছিল৷ এখন দেখছি এঁরাও ভোটের জন্য ধর্মীয় নেতাদের ব্যবহার করছেন৷''

কেবল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোই নয়, যাঁরা ভোট দেননি তাঁদের সমালোচনায় মুখর হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমও৷ এক টিভি উপস্থাপক তো বলেই ফেলেছেন – যাঁরা ভোট দিতে যাননি তাঁদের আত্মহত্যা করা উচিত৷

এর জবাবে আইনের ছাত্র মার্ক দিমিত্রি রসিকতার সুরে বলেন, ‘‘আমি বরং আত্মহত্যাকেই বেছে নিতাম, তবু ভোট দিতে যেতাম না৷''

২৩ বছর বয়সি দিমিত্রির বিশ্বাস, ক্ষমতায় এখন যেই আসুক, মিশরের ভাগ্য বদলানো তাঁদের পক্ষে সম্ভব হবে না৷

‘‘কেবল তরুণরাই এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারে৷ আমরা মিশরকে আরো ভালো অবস্থায় দেখতে চাই৷ কিন্তু এ জন্য সময় দরকার৷ মিশর শাসন করার বয়স যখন আমাদের হবে, আমরা তা করব অন্যভাবে৷''

দিমিত্রির সহপাঠী আহমেদ মোহাম্মেদ সেইফ বলেন, ‘‘মিশরের বিচার ব্যবস্থা যথেষ্ট শক্তিশালী৷ কিন্তু এই দেশটা প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মে চলে না৷ এখানে সর্বত্র দুর্নীতি৷ এর পরিবর্তন প্রয়োজন এবং কেবল নতুন প্রজন্মের পক্ষেই এটা করা সম্ভব৷''

জেকে/ডিজি (আইপিএস, এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য