সিরিয়ায় ভোট
৩ জুন ২০১৪সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় মঙ্গলবার সকালে ভোটগ্রহণ শুরু হয়৷ সেদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেড় কোটির বেশি মানুষকে ভোটাভুটিতে অংশ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে৷ তবে দামেস্ক সরকারের বিরোধী পক্ষ এই নির্বাচনকে ‘অবৈধ' আখ্যা দিয়েছে৷ রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্টদের হিসাবে, দেশটিতে গৃহযুদ্ধে গত তিন বছরে এক লাখ ষাট হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে৷
মঙ্গলবারের নির্বাচনে বর্তমানে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পুনরায় জয় লাভের বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছে৷ তবে সিরিয়ায় গত ৫০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন৷ ২০০৭ সালে দ্বিতীয়বারের মতো সাত বছরের জন্য প্রেসিডেন্টের আসনে বসেন আসাদ৷ সেবার গণভোটের আয়োজন করা হয়, যেখানে আসাদের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন না৷
এবার দু'জন অপরিচিত ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে গত এপ্রিলে সিরিয়া সংসদের অনুমতি লাভ করেন৷ মাহের হাজ্জার এবং হাসান আল-নওরি গত এপ্রিলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হন৷ তবে দেশটির পশ্চিমা সমর্থিত বিরোধী দল ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল' নির্বাচন বর্জন করেছে এবং সেদলের নেতা আহমেদ আল-জেরবা ভোটের দিন সবাইকে ‘ঘরে অবস্থানের' আহ্বান জানিয়েছেন৷
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন ক্যারি গত মাসেই সিরিয়ার নির্বাচনকে ‘সাজানো প্রহসন, একধরনের অপমান এবং জালিয়াতি' হিসেবে আখ্যা দেন৷ জার্মানিসহ এগারো দেশের সমন্বয়ে তৈরি ‘ফ্রেন্ডস অফ সিরিয়া গ্রুপ' এক যৌথ বিবৃতিতে এই নির্বাচনকে ‘গণতন্ত্রের প্যারোডি' হিসেবে অভিহিত করেছে৷
প্রসঙ্গত, সিরিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে গৃহযুদ্ধ চলায় মঙ্গলবারের নির্বাচনে দেশটির অনেক অঞ্চলের মানুষ অংশ নিতে পারছেন না৷ শুধুমাত্র সরকার নিয়ন্ত্রত এলাকাগুলোর বাসিন্দারা ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন৷ বিদ্রোহীদের দখলে থাকা রাজধানী দামেস্কের একাংশ, আলেপ্পো এবং উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের অনেক এলাকায় কোনো ভোটাভুটি হচ্ছে না৷
তবে গৃহযুদ্ধের কারণে দেশের বাইরে লেবানন এবং জর্ডানে অবস্থানরত অনেক সিরীয়কে ভোট দিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে সিরিয়ার সরকার৷
৪৮ বছর বয়সি বাশার আল আসাদ ২০০০ সালে তাঁর বাবা হাফেজের কাছ থেকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন৷ সাত বছর মেয়াদি এই পদে তৃতীয়বারের মতো অবস্থান করতে মঙ্গলবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তিনি৷
এআই / ডিজি (এএফপি, এপি, রয়টার্স)