1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সিরিয়ার কারাগারে নির্যাতন

১৮ আগস্ট ২০১৬

সিরিয়ায় সরকারি কারাগারে বন্দি অবস্থায় ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৮ হাজার ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে দাবি অ্যামনেস্টির৷ মানবাধিকার সংস্থাটির প্রতিবেদনে বন্দিদের বর্ণনায় উঠে এসেছে নিষ্ঠুর নির্যাতনের অসংখ্য ঘটনা৷

https://p.dw.com/p/1Jk9z
Symbolbild Syrien Gefängnis NEU
ছবি: picture-alliance/AP Photo/B. Tellawi

অ্যামনেস্টি বলছে, যারাই সরকারের বিরোধিতা করেছে, তাদের ভাগ্যেই নেমে এসেছে অপরিসীম অত্যাচার৷ কোনো কোনো হতভাগ্যকে বরণ করতে হয়েছে মৃত্যু৷ নির্যাতনের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া এবং মুক্তি পাওয়া ৬৫ জন বন্দির সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে৷ দামেস্কের গোয়েন্দা সংস্থার বন্দি নির্যাতন কেন্দ্র এবং সায়দানায়া সামরিক নির্যাতন কেন্দ্রে অমানবিক নির্যাতনের বর্ণনা উঠে এসেছে তাদের জবানবন্দিতে৷ প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, চোখের সামনে এক বা একাধিক বন্দিকে নির্মম মৃত্যু বরণ করতে দেখেছেন তারা৷

প্রত্যেক বন্দিকে কারাগারে স্বাগত জানানো হতো মারধরের মাধ্যমে৷ তাদের সাথে পশুর মতো ব্যবহার করা হতো বলেও জানালেন সাবেক বন্দি সামির৷ জানালেন, কারা কর্তুপক্ষ চাইতো যতটা অমানবিকভাবে একটা মানুষকে নির্যাতন করা যায় তার পুরোটা করতে৷ কখনো সামনাসামনি মৃত্যু না দেখলেও নদীর স্রোতের মতো রক্তের ধারা বইতে দেখেছেন এই বন্দিরা৷

আরেক বন্দি ওমর, ২০১২ সালে আটক হওয়ার সময় তার বয়স ছিল ১৭ বছর৷ তিনি সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেয়ার সময় গ্রেফতার হন৷ ওমর জানান, বন্দিরা কারাগারে পৌঁছানো মাত্রই জিজ্ঞেস করা হতো তাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ কিনা৷ তাদের এই প্রশ্নে ওমরের মনে হয়েছিল, তারা আসলে জানতে চায় কার কত তাড়াতাড়ি মৃত্যু হবে৷ ওমরের এক বন্ধু বলেছিল, তার শ্বাসকষ্ট আছে৷ সাথে সাথে তাকে মারধর শুরু হয়, মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত চলে মারধর৷ ওমরের দাবি অনুযায়ী, তার চোখের সামনেই ঘটে এই ঘটনা৷

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে নির্যাতনের যে বর্ণনা দেয়া হয়েছে, তা ভয়াবহ৷ ধর্ষণ, নির্যাতন, বৈদ্যুতিক শক, মানসিক নির্যাতনের মতো অপরাধ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাল৷ বৃহস্পতিবার তারা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে৷

অ্যামনেস্টি আরো জানিয়েছে, বন্দিরা নারী-পুরুষ যে লিঙ্গেরই হোক না কেন, কেউই ধর্ষণের হাত থেকে রেহাই পায়নি৷ সরকারবিরোধী এক কর্মী জানালেন, তার চোখ বেঁধে, হাত পিছমোড়া করে বেঁধে উল্টো ঝুলিয়ে তার পুরুষাঙ্গে বৈদ্যুতিক শক দেয়া হয়েছিল৷ এছাড়া তার পায়ুপথে লৌহদণ্ড ঢুকিয়ে বৈদ্যুতিক শক দেয়া হয় বলেও দাবি করেছেন তিনি৷ এরপর যখন তার চোখ খুলে দেয়া হলো, তিনি দেখলেন তার সামনে তার বাবা দাঁড়িয়ে, যাকে পুরো ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করতে বাধ্য করা হয়েছিল৷

অ্যামনেস্টির হিসাব অনুযায়ী সিরিয়াজুড়ে সরকারি কারাগারগুলোতে ২০১১ সালের মার্চ থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৭ হাজার ৭২৩ জনেরও বেশি ব্যক্তি নিহত হয়েছেন৷ এই হিসাব অনুযায়ী, কারাগারগুলোতে প্রতিদিন গড়ে ১০ জন বন্দির মৃত্যু হয়েছে৷ সেই হিসেবে প্রতি মাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০০ জন বা তারও বেশি৷ ২০১১ সালের মার্চে সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সূচনা হয়৷

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সিরিয়ায় কারাগারের পরিবেশ ভীষণ দূষিত, সেখানে খাদ্যের মান, পানি, পয়ঃরিষ্কাশন ব্যবস্থা অপ্রতুল৷ আর এ কারণে সহজেই সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হন বন্দিরা৷ এই পরিস্থিতিতে অ্যামনেস্টির আবেদন, বিশ্বশক্তি, বিশেষ করে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র যেন সিরীয় কর্তৃপক্ষের ওপর বন্দিদের ওপর অত্যাচার বন্ধের জন্য চাপ সৃষ্টি করে৷

এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য