1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সালমোনেলা দিয়ে ক্যানসার মোকাবিলা

মার্টিন রিবে/এসবি২৮ আগস্ট ২০১৫

ক্যানসার মোকাবিলার লক্ষ্যে বিজ্ঞানী ও গবেষেকরা অক্লান্ত কষ্ট করে চলেছেন৷ এবার এক মারাত্মক ব্যাক্টিরিয়াকে কাজে লাগিয়ে টিউমারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাফল্য পেয়েছেন জার্মান বিজ্ঞানীরা৷

https://p.dw.com/p/1GNAh
Symbolbild Pferdefleischskandal
ছবি: Fotolia/Sven Weber

মানবজাতির কাছে ক্যানসার অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ৷ এই রোগ নিরাময়ের কোনো একক ওষুধের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না৷ বরং এর বিপরীতটাই ঘটছে৷ প্রতি বছর ক্যানসারের ফলে আরও মানুষ মারা যাবে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে দিচ্ছে৷ তাই ক্যানসার চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন আইডিয়ার প্রয়োজন রয়েছে৷

সালমোনেলা রোগের প্যাথোজেন হিসেবে কুখ্যাত৷ তবে কিছুকাল ধরে ক্যানসার গবেষকরা এই আগ্রাসী ব্যাক্টিরিয়াকে এমনভাবে পরিবর্তন করতে চাইছেন, যাতে তারা তাদের ধ্বংসাত্মক শক্তি ক্যানসারের টিউমারের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করে৷ আইডিয়াটা নতুন নয়, কিন্তু এই প্রথম সালমোনেলার আক্রমণাত্মক শক্তি বশে আনা সম্ভব হয়েছে৷ ইমিউনোলজিস্ট ড. সিগফ্রিড ভাইস বলেন, ‘‘ব্যাক্টিরিয়া কাজে লাগিয়ে ক্যানসার মোকাবিলার আইডিয়া বহু পুরানো৷ আমরা সালমোনেলা বেছে নিয়েছি, কারণ বহুদিন ধরে আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি৷ এই ব্যাক্টিরিয়ার আগ্রাসী শক্তি যে টিউমারের মোকাবিলার জন্য উপযুক্ত, তার প্রমাণ পাওয়া গেছে৷''

জার্মানির ব্রাউনশোয়াইগ শহরের হেল্মহলৎস সংক্রমণ গবেষণা ইনস্টিটিউট সালমোনেলা ব্যাক্টিরিয়াকে এমনভাবে পরিবর্তন করতে সমর্থ হয়েছে, যাতে সেটি প্রথমে টিউমারের উপর হামলা চালায়, তারপর শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতার কাছে আত্মসমর্পণ করে৷

কিন্তু সমস্যা হলো, এমন আগ্রাসী জীবাণু দিয়ে ক্যানসারাস টিউমার চিকিৎসার অনেক ঝুঁকি রয়েছে৷ এমনকি এর ফলে ক্যানসার রোগীর মৃত্যুও হতে পারে৷ তবে ইঁদুরের উপর কিছুটা দুর্বল সালমোনেলা প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া গেছে৷ ড. ভাইস বলেন, ‘‘আমরা যদি সেগুলিকে খুব বেশি দুর্বল করে দেই, তখন চিকিৎসার জন্য তারা আর সক্রিয় থাকবে না৷ এ ক্ষেত্রে সঠিক ভারসাম্য চাই৷ অর্থাৎ ব্যাক্টিরিয়াকে একদিকে অত্যন্ত আগ্রাসী থাকতে হবে৷ অন্যদিকে সেটিকে এতটা দুর্বল করতে হবে, যাতে সেটি আর বিপজ্জনক না থাকে৷''

গবেষকরা ব্যাক্টিরিয়ার মধ্যে এক ধরনের সুইচ তৈরি করছেন, দূর থেকে যা নিয়ন্ত্রণ করা যায়৷ সুইচ অন থাকলে সেটি আগ্রাসী হয়ে ওঠে৷ অফ করে দিলে শরীরের নিজস্ব প্রতিরোধ ক্ষমতা সেটিকে ধ্বংস করতে পারবে৷

সালমোনেলা এমনভাবে পরিবর্তন করা হয়, যাতে সেটি বিশেষ ধরনের এক শর্করার মধ্যে আগ্রাসী হত্যাকারী হিসেবে বেড়ে ওঠে৷ কিন্তু ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে শরীরে ঢুকিয়ে দিলে এবং শর্করার অভাব দেখা দিলে সেটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এক নিরীহ ব্যাক্টিরিয়ায় পরিণত হয়৷ বায়োলজিস্ট ডিনো কোচিয়ানচিচ বলেন, ‘‘ইঁদুরের শরীরে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ব্যাক্টিরিয়া ঢুকিয়ে দিলে এবং তারপর শর্করা যোগ করলে আরও মারাত্মক প্যাথোজেনিক স্ট্রেন দেখা যায়৷ শর্করা থেকে বেরিয়ে গেলে, বা তার অভাব দেখা গেলে তারা নিস্তেজ হয়ে পড়ে, আর তেমন বিপজ্জনক থাকে না৷ থেরাপিতে আমরা সেটাই কাজে লাগানোর চেষ্টা করি৷''

শরীর আগ্রাসী সালমোনেলার মোকাবিলা করে এবং একই সঙ্গে টিউমার কোষের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে৷ সালমোনেলা ঠিক কী করে, গবেষক দলের প্রধান তা দেখিয়ে দিলেন৷ ড.ভাইস বলেন, ‘‘এখানে টিউমার সহ একটি ইঁদুর আছে৷ আমরা তার লেজের শিরায় সালমোনেলা ঢুকিয়ে দিচ্ছি৷ সেগুলি রক্তের স্রোতের সঙ্গে সঙ্গে টিউমারে ঢুকে পড়ে৷ তখন সেই টিউমার ধ্বংস হয়ে যায়৷ একইসঙ্গে ব্যাক্টিরিয়া বংশবৃদ্ধি করতে শুরু করে৷ লিম্ফ নোড এবং কাছের লিম্ফ নোড-গুলিতে প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে ওঠে৷ টিউমারের সেই কোষগুলি তখন টিউমারে ঢুকে পড়ে এবং তার মোকাবিলা করে সেটিকে ধ্বংস করে দেয়৷ ফলে ইঁদুর টিউমার-মুক্ত হয়ে পড়ে৷''

গবেষকরা নিশ্চিত, যে মানুষের উপর এই প্রক্রিয়া প্রয়োগ করতে আরও অনেক সময় লাগলেও সালমোনেলা ও আমাদের ইমিউন সিস্টেমের আদান-প্রদানের সম্ভাবনা ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নতুন পথ খুলে দিচ্ছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান