এনএসএ কেলেঙ্কারি
১৮ জানুয়ারি ২০১৪জার্মানি-ভিত্তিক ফোগলার কোম্পানিতে গাড়ির বিভিন্ন অংশ রং করা হয়, যাতে সারফেস মসৃণ, শক্ত ও মজবুত হয়৷ কর্মীরা সেগুলো ভালো করে পরীক্ষা করেন৷ সামান্য ত্রুটি চোখে পড়লেও সেগুলি সরিয়ে নেন৷
তারপর সেগুলি ল্যাবে মাইক্রোস্কোপের নীচে দেখা হয়৷ কোম্পানির তথ্য-প্রযুক্তি প্রধান যন্ত্রাংশের সারফেসের ত্রুটি কম্পিউটার সফটওয়্যারের নিরাপত্তার ত্রুটির সঙ্গে মিলিয়ে দেখেন৷ দুটি ক্ষেত্রেই ত্রুটি দূর করতে হবে৷ ফোগলার কোম্পানির টিমো এয়ারলেমান বলেন, ‘‘বর্তমানে এনএসএ কেলেঙ্কারির ফলে জার্মানিতে অ্যান্টি ভাইরাস সফটওয়্যার সম্পর্কে সচেতনতা বদলে যাচ্ছে৷ বিশেষ করে মাঝারি মাপের সংস্থাগুলি তথ্য বা প্রযুক্তি চুরি ঠেকাতে অ্যান্টি ভাইরাস সফটওয়্যার ও ফায়ারওয়াল ব্যবহার করছেন৷''
ফোগলার কোম্পানি চলতি বছর থেকে ‘জি-ডাটা' কোম্পানির অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার শুরু করেছে৷ দুই সংস্থাই একই অঞ্চলে অবস্থিত৷ চলতি বছরে ‘জি-ডাটা'-র ব্যবসা ১০ শতাংশেরও বেশি বেড়ে গেছে৷ বিশেষ করে ইউরোপের মাঝারি মাপের কোম্পানিগুলি গুপ্তচরবৃত্তির ভয়ে অ্যামেরিকান সফটওয়্যার ছেড়ে জার্মান সফটওয়্যারের দিকে ঝুঁকছেন৷ জি-ডাটা সফটওয়্যার-এর টর্স্টেন উরবানস্কি বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা বাধ্যতামূলক করতে জার্মানিতে কোনো আইন নেই৷ অ্যামেরিকায় কিন্তু ব্যাপারটা একেবারে আলাদা৷ ২০০১ সালে ‘প্যাট্রিয়ট অ্যাক্ট' অনুযায়ী সব মার্কিন প্রস্তুতকারক সংস্থা এনএসএ, সিআইএ সহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করতে বাধ্য৷''
‘জি-ডাটা'-র সূত্র অনুযায়ী মার্কিন কোম্পানিগুলি সফটওয়্যারের নিরাপত্তায় খুঁত রাখতে বাধ্য, যাতে পিছনের দরজা খোলা থাকে৷ উরবানস্কি আরও বলেন, ‘‘কোনো নিরাপত্তা সফটওয়্যারে ‘ব্যাক ডোর' রেখে দিলে তা শুধু তদন্তকারীদের কাজে লাগে না৷ অপরাধীরাও সেই একই পথে প্রবেশ করতে পারে৷''
ফোগলার কোম্পানি তাদের রং করার প্রক্রিয়া গোপন রাখতে চায়৷ এটাই সংস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মূলধন৷ তাই সেটা শুধু যন্ত্রের মধ্যেই রাখা হয়৷ এয়ারলেমান বলেন, ‘‘চুরি এড়ানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো যন্ত্রের কম্পিউটার ইন্টারনেট সংযোগ থেকে দূরে রাখা অর্থনৈতিক গুপ্তচরবৃত্তি থেকে বাঁচতে অফলাইন থাকাই হয়ত সবচেয়ে ভালো পথ৷''