1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা

২০ আগস্ট ২০১৩

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের বর্তমান মেয়াদকালের অনেক অর্জনের কথা সবাইকে মনে করিয়ে দিয়েছেন৷ কিন্তু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রশংসার চেয়ে তাঁর সমালোচনাই হচ্ছে বেশি৷ এর কারণও কিন্তু তাঁর বক্তব্য৷

https://p.dw.com/p/19SmB
ছবি: Harun Ur Rashid Swapan

গত রবিবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, দেশে আগামী নির্বাচন বর্তমান সংবিধান অনুযায়ীই হবে এবং এ সিদ্ধান্ত থেকে তিনি এক চুলও নড়বেন না৷

‘আমার ব্লগে'-এ এই প্রসঙ্গে নাজমুল রানা লিখেছেন, ‘‘এতদিন সবাই আমরা একটি কথা শুনে এসেছি যে ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই'৷ তবে এটা বর্তমানে অবাস্তব৷ এবার শুনবো বাস্তব কথা, সেটা হলো, ‘সবার উপরে প্রধাণমন্ত্রী সত্য, তাহার উপরে নাই'৷ অনেকে হয়ত একটু ভড়কে গেলেন৷ না, না ভড়কাবেন দয়া করে৷ চেয়ে দেখুন না প্রধানমন্ত্রী নিজের ক্ষমতাবলে নিজের স্বার্থ রক্ষার জন্য কেমন মরিয়া হয়ে উঠেছেন৷....দেশের প্রায় কম করে হলেও আশি ভাগ লোক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজের ক্ষমতাকে স্থায়ী করার জন্য সেই কোটি প্রাণের দাবিকে একবারের জন্য বিচেনা না করেই ‘না' বলে দিলেন৷ তিনি সংবিধান থেকে এক চুলও নড়বেন না৷ তা ভালো কথা, সংবিধান মানা ভালো৷ সংবিধানের মাধ্যমেই তো দেশ চলে৷ তবে প্রশ্ন একটাই – সংবিধানটা কাদের সৃষ্টি, স্রষ্টার না মানুষের? আর সংবিধান কি শুধু প্রধানন্ত্রীর কথা বলবে? শুধু কি তাঁর অধিকারই নিশ্চিত করবে? নাকি দেশের সবারটাই করবে? কারণ দেশের সবাই জানে, এমনকি প্রধানমন্ত্রীও জানেন যে, বাংলাদেশে কোনো দলীয় সরকারের আওতায় নির্বাচন হলে তা নিরপেক্ষ হবে না৷ তারপরও কেন এমন করেন? তিনি কি সদা নিজের স্বার্থ নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন? নাকি সাধারণের কথাও একবার ভাববেন?''

সামহোয়্যার ইন ব্লগে একটি ছড়া লিখেছেন সুমাইয়া বরকতউল্লাহ৷ ছড়াটির নাম ‘চুলটানা বিবিয়ানা'৷ ছয় লাইনের ছড়াটি এরকম, ‘‘এই দেখো আমাদের, মাথা ভরা চুল/চুল যদি একচুল, নড়াচড়া করে/শখ করে খোঁপা বেঁধে, গুঁজে দেই ফুল /বেঁধে রাখি ফিতা দিয়ে, শক্ত করে/নড়বে না একদম, কোনো ছলে বলে/ঢেকে রাখি চুল তাই, হিযাবের তলে....''

সুমাইয়া বরকতউল্লাহ অবশ্য কোথাও লিখেননি যে ছড়াটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শুনেই লেখা৷ বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য ছড়াটিকে চিরন্তনও ধরে নেয়া যায়৷ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সাধারণ মানুষের কল্যাণের কথা ভেবে কোনো বিষয়ে প্রকাশ্য, সুস্পষ্ট ঐকমত্য সর্বশেষ কবে দেখা গেছে?

Bangladesch - Landesweiter Streik
প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য কি এমন ধ্ংসাত্মক আন্দোলনের সুযোগ আরো বাড়িয়ে দিলো?ছবি: Reuters

সামহোয়্যার ইন ব্লগেই আবার শেখ হাসিনার বক্তব্যকে সমর্থন করে একটি পোস্ট দিয়েছেন আহমেদ শরীফ৷ ‘একমাত্র হাসিনার হাতেই দেশকে নিরাপদে রাখা সম্ভব, কারণ, আ'লীগ উন্নয়নে বিশ্বাস করে' – দীর্ঘ এই শিরোনামের লেখাটি শুরু হয়েছে এভাবে, ‘‘অনেকের ধারণা, দেশের সামনে এখন একমাত্র সমস্যা হচ্ছে পরবর্তী নির্বাচন৷ পরবর্তী নির্বাচন কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে তা নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের বিপরীতমুখী অবস্থান৷ বিরোধী দল বলছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না৷ সরকারি দলের নিয়ন্ত্রণে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে, তারা এটা বিশ্বাস করে না৷ অথচ ১৫তম সংবিধান সংশোধনীর পর আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করা সম্ভব নয়৷ ক্ষমতাসীন দলের বক্তব্য হচ্ছে গত সাড়ে চার বছরের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় ছয় হাজার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ তার কোনোটিতেই কোনো অনিয়মের অভিযোগ ওঠেনি৷ ওইসব নির্বাচনে সরকার ও বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা প্রায় সমহারে নির্বাচিত হয়েছেন৷ সর্বশেষ পাঁচটা সিটি নির্বাচনে তারা (বিরোধী দল) বিপুল ভোটে এককভাবে বিজয়ী হয়েছেন৷ সেই নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দল কোনো কথা বলেননি৷''

আহমেদ শরীফ তাঁর মূল বক্তব্য স্পষ্ট করতে গিয়ে পরে এক জায়গায় লিখেছেন, ‘‘বর্তমান বিরোধী দল ও তাদের জোট প্রায়ই বলে থাকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তারা ক্ষমতায় যেতে চান৷ ক্ষমতাসীন দলের হাতে গণতন্ত্র নাকি বিপর্যস্ত হচ্ছে৷ কিন্তু তাদের অতীতের ক্রিয়াকর্ম এবং বর্তমানে বিরোধী দলের আন্দোলন সংগ্রামের প্রকৃতি দেখে এটা কি বলা যায় যে, বেগম জিয়া তার রাজনৈতিক সহচরদের নিয়ে ক্ষমতায় গেলে গণতন্ত্রের সুবাতাস বইবে? একথা ঠিক, বর্তমান সরকার আমলেও সবকিছু সঠিকভাবে চলছে এরূপ দাবি করা যাবে না৷ কিন্তু এর থেকে আরো অবনতি হোক এটাতো কখনো প্রত্যাশিত নয়৷ শেখ হাসিনা ও তাঁর মহাজোট সরকারের হাতে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই, এটা নির্দ্বিধায় বলা যায়৷ একইভাবে বলা যায়, বিরোধী দল ক্ষমতায় গেলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিস্তার লাভের যে মারাত্মক আশঙ্কা রয়েছে, বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতাসীন থাকলে ঐরূপ অবস্থা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই৷ বরং বর্তমান সরকার সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে৷ এখন জনগণই বিবেচনা ও বিচার করবে তারা কাকে ক্ষমতায় আনবে৷''

প্রসঙ্গ খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ কিন্তু একই প্রসঙ্গে মতামত কতটা বিপরীতমুখী! দুটো আলাদা ব্লগে নয়, সামহোয়্যার ইন ব্লগেই৷

সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য