1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সন্তানের বৈশিষ্ট্যের জন্য পিতা-মাতা খুব অল্পই দায়ী

১১ মার্চ ২০১০

পিতা-মাতার কাছ থেকে ৭৫টি জেনেটিক বৈশিষ্ট্য নয়, বরং সন্তানের দেহে ৬০টি জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে মাত্র ৩০ টি আসে পিতা-মাতার দেহ থেকে৷ পিতা, মাতা, ছেলে, মেয়ে সবার জিন পরীক্ষার পর এমনই নতুন তথ্য দিলেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা৷

https://p.dw.com/p/MPLt
ফাইল ছবিছবি: dpa

এতদিন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, প্রত্যেক পিতা-মাতার দেহ থেকে সন্তানের দেহে ৭৫ টি জেনেটিক রূপান্তর ঘটে৷ কিন্তু সিয়াটল-এর ‘ইন্সটিটিউট ফর সিস্টেমস বায়োলজি' এবং ‘ইউনিভার্সিটি অব উটাহ' এর বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ গবেষণার পর জানালেন, প্রকৃত ব্যাপার আগের ধারণার কাছাকাছিও নয়৷ বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ‘সায়েন্স' এর বৃহস্পতিবারের সংখ্যায় তাঁদের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে৷ এই গবেষণার ফলে এখন মানব দেহের অনেকগুলো সাধারণ রোগ-ব্যাধির কারণ উদ্ধার বেশ সহজতর হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ এছাড়া সন্তানের স্বাস্থ্যের উপর বংশগত এসব রূপান্তরের কোন প্রভাব পড়ে না বলে গবেষকরা মনে করছেন৷

উটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক লিন জর্ডে বলেন, পিতা-মাতার কাছ থেকে সন্তানের দেহে কী হারে জেনেটিক রূপান্তর ঘটছে তা জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ ‘‘কারণ এই রূপান্তরের হারই হচ্ছে আমাদের ঘড়ি৷ এর প্রতিটি ‘টিক' থেকে আমরা নতুন জেনেটিক রূপ খুঁজে পাই৷ তাই আমরা জানতে চাই যে, এই ঘড়ি কত দ্রুত ‘টিক' করে,'' বলেন জর্ডে৷ সন্তানের দেহে নতুন জেনেটিক বৈশিষ্ট্য সৃষ্টির জন্য পিতা এবং মাতার ক্রোমোসোম পরস্পরের সাথে মিশে গেলেও এই গবেষক দলের সদস্যরা অত্যন্ত নির্ভুলভাবে তাঁদের পরীক্ষাটি সম্পন্ন করতে সমর্থ হয়েছেন৷

Flash Galerie Global Ideas Philippinen Kinder pflanzen 2.jpg
ফাইল ছবিছবি: (c) Robert Donauer

তাঁরা এমন একটি পরিবারকে বেছে নিয়েছিলেন, যেখানে দু'টি সন্তানই খুবই বিরল প্রকৃতির বেশ কিছু অসুখে ভুগছিল৷ ঐ দম্পতির মধ্যে জেনেটিক কোন অস্বাভাবিকতা না থাকলেও তাদের ছেলে এবং মেয়ে দু'জনই ‘মিলার সিন্ড্রোম' এবং ‘প্রাইমারি সিলিয়ারি ডিসকিনেসিয়া – পিসিডি' নিয়ে জন্মেছিল৷ ‘মিলার সিন্ড্রোম' হচ্ছে এমন এক ধরণের অস্বাভাবিকতা যার ফলে মুখমণ্ডল এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিকৃতি ঘটে৷ আর পিসিডি হচ্ছে এমন অসুখ যাতে ফুসফুসে চুলের মতো তন্তু গজিয়ে থাকে এবং তা শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে৷ বিজ্ঞানীদের মতে, ১০ লাখ জনে একজনের মিলার সিন্ড্রোম এবং ১০ হাজার জনের মধ্যে একজনের দেহে পিসিডি দেখা যায়৷ কিন্তু একইসাথে এই দু'টির উপস্থিতি ১০ বিলিয়ন মানুষের মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে হতে পারে, বলে জানান জর্ডে৷

ঐ শিশু দু'টির জেনেটিক রূপান্তরকে ‘হিউম্যান জেনোম প্রোজেক্ট' এবং অন্যান্য তথ্য ভাণ্ডারের সাথে তুলনা করে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেন যে, তাদের প্রত্যেক অসুখের জন্য চারটি রূপান্তরিত জিন দায়ী৷ উল্লেখ্য, মানবদেহে জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী প্রায় ২২ হাজার জিন রয়েছে৷

প্রতিবেদক : হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা : জাহিদুল হক