সংসদ রেখে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩বর্তমান সংসদ বহাল রেখেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে এমন ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷ তাই ২৪ অক্টোবর ৯ম জাতীয় সংসদের অধিবেশন শেষ হলেও সংসদ সদস্যরা বহাল থাকবেন৷ তাঁরা পাবেন সব সুযোগ-সুবিধা, পদে থেকেই নির্বাচনে অংশ নেবেন তাঁরা৷
কিন্তু সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এর বিরোধিতা করেছেন৷ ঢাকায় এক সেমিনারে তাঁরা বলেছেন সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হলে তা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে না৷ নির্বাচনের সময় সবার জন্য সমান সুবিধা নিশ্চিতের যে নীতি তা কার্যকর করা যাবে না৷ সেমিনারে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার, সংবিধান বিশেষজ্ঞ, নির্বাচন বিশেষজ্ঞসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে তাঁদের কথা বলেন৷
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেন৷ তিনি বলেন নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে এখন রাজনৈতিক সংকট চলছে৷ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে৷ একতরফা নির্বাচন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না৷
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন প্রশাসনকে দলীয়করণের ব্যাপারে দুই দলের বিরুদ্ধেই সমান অভিযোগ আছে৷ তাই দলীয় কোনো সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে প্রশাসন যে নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে না, তা বুঝতে কারোর অসুবিধা হওয়ার কথা নয়৷ আর সংসদ সদস্যরা তাঁদের পদে বহাল থেকে নির্বাচন করলে তাঁদের প্রভাব থাকবেই৷
সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন কেউ বাঘের পিঠে চড়লে আর নামতে চান না৷ কারণ এতদিন তিনি রক্ত খেয়েছেন, এখন নামলেইতো বাঘে তার রক্ত খাবে৷ আর এই পরিস্থিতিতে যে সংকট তৈরি হয়েছে কেউ তার সমাধানের পথ দেখালে বা সমাধানের কথা বললে তাতে নাকি বিভ্রান্তি ছড়ান হয়৷ তিনি বলেন তবুও বলতে হবে৷ তাঁর মতে নির্বাচনি আইনের আরো সংস্কার প্রয়োজন৷ আর নির্বাচন করতে হবে সংসদ ভেঙে দিয়ে৷
বক্তারা বলেন, প্রতি নির্বাচনের আগেই দেশে একটি সংকট তৈরি হয়৷ সৃষ্টি হয় সাংঘর্ষিক পরিবেশের৷ এর একটি স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন৷ তাই নির্বাচন কমিশনকে যেমন স্বাধীন এবং শক্তিশালী করা প্রয়োজন তেমনি নির্বাচন ব্যবস্থার একটি স্থায়ী কাঠামো প্রয়োজন৷ এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে সমঝোতায় এসে একটি পথ বের করার আহ্বান জানান তাঁরা৷ নয়তো প্রতি নির্বাচনের আগেই দেশে সংঘাত, সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে উঠবে বলে তাঁদের অভিমত৷
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা: দীপুমনি বলেছেন নির্বাচন হবে সংবিধানের আলোকে৷ সরকারের মেয়াদের শেষ তিন মাসে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার৷ সংবিধান অনুযায়ী তাতে সংসদ বহাল রেখেই নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে৷