সংগীত জগতের এক মহান ব্যক্তিত্ব - এহুদি মেনুহিন
২১ এপ্রিল ২০১১২২ এপ্রিল কিংবদন্তি এই সংগীত শিল্পীর ৯৫ তম জন্ম বার্ষিকী৷
জার্মানি তথা বিশ্বের সংগীতাঙ্গনে পালিত হচ্ছে এই মহান শিল্পীর জন্ম বার্ষিকি৷ একই সঙ্গে তিনি ছিলেন একজন দক্ষ সংগীত নির্দেশক, লেখক ও শিক্ষাবিদ৷ শান্তি ও মানবাধিকারের সপক্ষেও তিনি ছিলেন এক জোরালো কণ্ঠস্বর৷
এহুদি মেনুহিন এর জন্ম ১৯১৬ সালে নিউ ইয়র্কে৷ চার বছর বয়সে বেহালায় তাঁর হাতে খড়ি৷ অসীম প্রতিভাধর এক বিস্ময় বালক হিসেবে পরিচিত হয়েছিলেন তিনি৷ মাত্র সাত বছর বয়সে সানফ্রানসিস্কো সিম্ফোনি অর্কেস্ট্রার সাথে তাঁর প্রথম কনসার্ট৷ তারপর প্যারিস, নিউ ইয়র্ক এবং বিশেষ করে বার্লিনে পশ্চি মের ধ্রুপদী সংগীত জগতের তিন মহীরুহ বাখ, বেটোফেন ও ব্রামস্ এর সংগীত পরিবেশন করে মেনুহিন হয়ে ওঠেন এক কিংবদন্তি৷ তারপর থেকেই শুরু হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাঁর কনসার্ট ভ্রমণ৷ ১৯৮২ সালে লন্ডন রয়াল ফিলহার্মোনিক অর্কেস্ট্রার পরিচালক পদে আসীন হন তিনি৷ ১৯৮৫ সালে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন মেনুহিন এবং থিতু হন লন্ডনে৷ এ সময় ক্যানাডার বিশ্বখ্যাত পিয়ানো বাদক গ্লেন গোল্ডের সাথে একাধিক কনসার্ট পরিবেশন করেন মেনুহিন৷
এহুদি মেনুহিন বিশ্বের বহু খ্যাতিমান শিল্পীর সাথে বাজিয়েছেন তাঁর বেহালা৷ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ষাটের দশকে সেতার সম্রাট পন্ডিত রবি শঙ্করের সাথে তাঁর বিখ্যাত কনসার্ট, ‘ওয়েস্ট মিটস ইস্ট'৷ বিশ্বসংগীতাঙ্গনে, সংগীতপ্রেমিকদের মাঝে বিপুল সড়া জাগিয়েছিল এই ঐতিহাসিক কনসার্ট৷ ১৯৬৭ সালে এই অ্যালবামের জন্য দুজনেই গ্র্যামি পুরস্কারে ভূষিত হন৷
সমাজ কল্যাণমূলক কাজে নিরলস অবদানের জন্যও বহু পুরস্কার এবং সম্মাননায় ভূষিত হন মেনুহিন৷ ১৯৯৩ সালে ইংলেন্ডের রানি তাঁকে ব্যারন উপাধিতে ভূষিত করেন৷ ১৯৯৭ সালে জার্মানির সর্বোচ্চ অসামরিক পদক দিয়ে তাঁকে সম্মানিত করা হয়৷ আন্তর্জাতিক সম্প্রীতি ও সমঝোতা ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ভারত থেকে তিনি জহরলাল নেহেরু পুরস্কার৷ ১৯৯৯ সালের ১২ মার্চ বার্লিনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সংগীত জগতের এই মহান ব্যক্তিত্ব - এহুদি মেনুহিন৷
প্রতিবেদন: মারুফ আহমদ
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক