সংকট কাটাতে গ্রিসে নতুন কৃচ্ছ্রতা পরিকল্পনা অনুমোদন
৩ মার্চ ২০১০এদিকে, জার্মানির সরকার এক বিবৃতিতে গ্রিসের এই কঠোর কৃচ্ছ্রতা পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছে৷ অর্থনীতি উদ্ধার পরিকল্পনায় সাহায্য পাওয়ার আশায় একপ্রকার শূন্য থলে হাতেই এই শুক্রবার ও রোববার বার্লিন ও প্যারিসে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসছেন গ্রিক প্রধানমন্ত্রী গিয়র্গস পাপান্দ্রেও৷
গ্রিক সরকারের মুখপাত্র গিওর্গস পেতালোতিস জানিয়েছেন, দুইভাগে ভাগ করে এই কৃচ্ছ্রতা পরিকল্পনার অর্থ যোগাড়ের চিন্তা করা হয়েছে৷ ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ইউরো সরকারি ব্যয় কমানো হবে এবং বাকি ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন যোগাড় করা হবে নতুন করে বাড়ানো কর এবং রাজস্ব আয় থেকে৷
মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই পরিকল্পনা অনুযায়ী সরকারি চাকুরেদের অবসর বোনাস প্রায় ৩০ শতাংশ কমানো হচ্ছে৷ সরকারি এবং বেসরকারি খাতের পেনশন স্থগিত করা হচ্ছে এবং একইসঙ্গে অন্যান্য বোনাস ও বৃত্তি বন্ধ করা কিংবা কমানো হচ্ছে৷ আর বর্ধিত কর ও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সকল বিক্রির ওপর কর ১৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২১ শতাংশ করা হচ্ছে৷ এছাড়া সিগারেট, সব ধরণের অ্যালকোহল, বিলাসবহুল গাড়ি, ইয়ট, গহনা ও অলঙ্কারাদিসহ সব বিলাসদ্রব্যের ওপর কর বাড়ানো হয়েছে৷
এই কৃচ্ছ্রতা পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী পাপান্দ্রেও সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘দেশ এবং অর্থনীতির অস্তিত্বের প্রশ্নে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া অপরিহার্য ছিল৷'' এই কৃচ্ছ্রতা পরিকল্পনার প্রতিবাদে ট্রেড ইউনিয়নগুলোর সম্ভাব্য শ্রমিক বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক বিরোধিতা দমনের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এইসব সিদ্ধান্ত অবশ্যই কার্যকর করা হবে যাতে করে আমরা সংশয়বাদী এবং আমাদের নামে কালিমা লেপনকারীদের হাত থেকে রেহাই পেতে পারি এবং একটু দম নিয়ে লড়াইটা চালিয়ে যেতে পারি৷''
ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি গ্রিসকে উদ্ধারে এগিয়ে না আসে তাহলে দেশটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের দ্বারস্থ হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷ অবশ্য সেটা নির্ভর করছে তাঁর প্যারিস এবং বার্লিন সফরের সাফল্যে বা ব্যর্থতার ওপর৷
ওদিকে, গ্রিসকে উদ্ধারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিকল্পনার অন্যতম প্রধান সহায় জার্মানি এক বিবৃতিতে একে স্বাগত জানিয়েছে৷ জার্মান সরকারের উপমুখপাত্র ক্রিস্তফ স্টিগমানস বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে গ্রিসের সরকার তাদের ওপর আস্থা রাখার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে পারবে বলে আশাবাদী জার্মানির সরকার৷
গত কয়েক মাসের মধ্যে এটা গ্রিসের এ ধরণের তৃতীয় অর্থনৈতিক উদ্ধার পরিকল্পনা৷ গত বছর গ্রিসের বাজেট ঘাটতি অনুমানের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বলে প্রকাশ হয় পড়ার পর থেকেই ইইউ এবং ঋণদাতাদের প্রচণ্ড চাপের মুখে এসব পরিকল্পনা নেয় দেশটি৷ ২০০৯ সালে গ্রিসের বাজেট ঘাটতি ছিল ১২ দশমিক ৭ শতাংশ৷ যা কিনা ইইউ দেশগুলোর নিজেদের জন্য বেঁধে দেওয়া বাজেট ঘাটতির সর্বোচ্চ মাত্রা ৩ শতাংশের প্রায় চারগুণেরও বেশি৷
প্রতিবেদক : মুনীর উদ্দিন আহমেদ
সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক