শ্রীলঙ্কায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের তদন্তের জন্য চাপ বাড়ছে
২৬ এপ্রিল ২০১১২০০৮ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তামিল বিদ্রোহীদের নির্মূল করতে শ্রীলঙ্কার সরকার দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে ব্যাপক সামরিক অভিযান চালিয়েছিল৷ শেষ পর্যন্ত তামিল টাইগারদের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে৷ কিন্তু সেই সংঘাতে হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিল বলে অসংখ্য অভিযোগ উঠেছিল৷ সেই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে জাতিসংঘের প্যানেল এই সব ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের প্রস্তাব রেখেছে৷ প্রায় ২০০ পৃষ্ঠার রিপোর্ট অনুযায়ী শুধু সরকার নয়, তামিল বিদ্রোহীরাও যুদ্ধাপরাধের জন্য সমানভাবে দায়ী৷ আন্তর্জাতিক স্তরে নিরপেক্ষ এক কাঠামোর আওতায় সেই যুদ্ধাপরাধের তদন্ত হওয়া উচিত বলে প্যানেল মনে করে৷
সোমবার প্রকাশিত রিপোর্টকে কেন্দ্র করে খোদ জাতিসংঘের মধ্যেই বিতর্ক দানা বাঁধছে৷ মহাসচিব বান কি মুন বলছেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে এমন কোনো তদন্তের নির্দেশ দিতে পারেন না৷
সদস্য দেশগুলিকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং এক্ষেত্রে অবশ্যই শ্রীলঙ্কার সরকারের সম্মতির প্রয়োজন রয়েছে৷ নিরাপত্তা পরিষদ, সাধারণ পরিষদ, মানবাধিকার পরিষদ বা অন্য কোনো সভায় এই উদ্যোগ নিতে হবে৷ তার পরেই বান এমন তদন্তের নির্দেশ দিতে পারেন৷ আপাতত তিনি সরাসরি শ্রীলঙ্কার সরকারের উদ্দেশ্যে ‘আন্তরিকভাবে তদন্ত' করার আবেদন জানিয়েছেন৷
সমালোচকরা বলছেন, প্রচলিত রীতি অনুযায়ী এগোলে এমন এক তদন্তের সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ হয়ে যাবে৷ প্রথমত, কলম্বো সরকার কখনোই স্বেচ্ছায় এমন তদন্তে সম্মতি জানাবে না৷ নিরাপত্তা পরিষদ কোনো উদ্যোগ নিলে রাশিয়া ও চীন ভেটো প্রয়োগ করতে পারে৷ তাছাড়া শ্রীলঙ্কা আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতেরও সদস্য নয়৷ পরিষদের অস্থায়ী সদস্য ভারতও এমন উদ্যোগের বিরোধিতা করবে৷ এপর্যন্ত মাত্র দু'টি ক্ষেত্রে নিরাপত্তা পরিষদ ব্যতিক্রমি উদ্যোগ দেখিয়েছে৷ সদস্য দেশগুলি সুদানের দারফুর অঞ্চলে সংকট এবং লিবিয়ায় বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সরকারি অভিযানের ক্ষেত্রে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছে৷
‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ' গোষ্ঠীর প্রতিনিধি ফিলিপ বোলোপিয়ন বান কি মুনের মনোভাবের সমালোচনা করেছেন৷ তাঁর মতে, চীন ও রাশিয়া এক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন না করলেও বাকিরা অবশ্যই এমন তদন্তে সমর্থন জানাবে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার