শোয়ারৎসেনেগার অভিনীত সেরা ছবিগুলো
অস্ট্রিয়ার এক বডিবিল্ডার যে কী করে হলিউডের টপ স্টার হয়ে যেতে পারেন, আর্নল্ড শোয়ারৎসেনেগার বা ‘আর্নি’ তার সেরা দৃষ্টান্ত৷ ফ্যান্টাসি থেকে শুরু করে অ্যাকশন ফিল্ম বা কমেডি – একটির পর একটি ছবি হিট হয়েছে প্রধানত আর্নির কারণে৷
কোনান দ্য বার্বেরিয়ান (১৯৮২)
‘কোনান’ ছবিটি আর্নল্ড শোয়ারৎসেনেগারকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দেয়৷ এক মুক্তিপ্রাপ্ত ক্রীতদাস হিসেবে কোনান সব রকমের প্রতিবন্ধকের সম্মুখীন হয় ও শেষমেষ জয়লাভ করে৷ ফ্যান্টাসি ছবিটির শুটিং হয় স্পেনে৷ বহু দৃশ্যে সংলাপের পরিবর্তে আবহসংগীত ব্যবহার করা হয়েছে৷
দ্য টার্মিনেটর (১৯৮৪)
‘দ্য টার্মিনেটর’ ছবিটিতে আর্নির সংলাপ আরো কমে গিয়েছিল৷ সারা ছবিতে এই ‘কিলিং মেশিন’-টিকে মাত্র ৭০টি শব্দ উচ্চারণ করতে হয়েছে৷ তার মধ্যে আর্নির ‘আই ভিল বি ব্যাক’ বা ‘আমি ফিরব’, এই সংলাপটি কিংবদন্তি হয়ে রয়েছে৷ ভবিষ্যতে যিনি ‘টাইট্যানিক’ ছবি পরিচালনা করবেন, সেই জেমস ক্যামেরন এই কম বাজেটের ছবিটি তৈরি করেছিলেন৷ তিনি কি জানতেন যে তিনি অ্যাকশন ফিল্মের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় সংযোজন করছেন?
টুইন্স (১৯৮৮)
১৯৮৮ সালে শোয়ারৎসেনেগার অ্যাকশন ছেড়ে কমেডিতে আসেন৷ ‘টুইন্স’ ছবিটিতে ড্যানি ডে ভিটো তাঁর যমজ ভাই-এর ভূমিকায় অভিনয় করেন৷ পেশিবহুল, সুঠাম আর্নল্ডের পাশে ছোটখাট, গোলগাল ড্যানি ডে ভিটোর জুটি বক্স অফিস মাত করে ও শোয়ারৎসেনেগারকে হলিউডের এ-লিস্ট অভিনেতার পর্যায়ে তুলে দেয়৷
দ্য টার্মিনেটর ২: জাজমেন্ট ডে (১৯৯১)
জেমস ক্যামেরনের ‘টি২’ ছবিটি ছিল হলিউডের প্রথম ছবি, যা তৈরি করতে দশ কোটি ডলারের বেশি খরচা পড়েছে – শেষমেষ ‘টার্মিনেটর-টু’ তার বাজেটের পাঁচ গুণ অর্থ কামায়৷ এই ছবিতে টার্মিনেটরকে প্রোগ্রাম করা হয়েছে, যাতে সে মানবজাতিকে বাঁচাতে পারে৷ এবারেও ছবির একটি সংক্ষিপ্ত সংলাপ বিশ্বখ্যাতি অর্জন করে: ‘‘আস্তা লা ভিস্তা, বেবি৷’’
ট্রু লাইজ (১৯৯৪)
অ্যাকশন ফিল্ম আর কমেডির পর আর কী করা যেতে পারে? স্বভাবতই অ্যাকশন-কমেডি৷ জেমস ক্যামেরনের সঙ্গে শোয়ারৎসেনেগারের তৃতীয় ছবিতে তিনি একজন সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধী স্পেশাল এজেন্ট, কিন্তু কথাটা তাঁর স্ত্রীর জানলে চলবে না৷ স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেন জেমি লি কার্টিস৷ ছবিটি সমালোচকদেরও প্রশংসা পেয়েছিল৷
ব্যাটম্যান অ্যান্ড রবিন (১৯৯৭)
ছবিটিতে ‘মিস্টার ফ্রিজ’-এর ভূমিকায় আর্নির অভিনয় দেখে তাঁর ফ্যান বা সমালোচক, কেউই বিশেষ উৎসাহ বোধ করেননি৷ ছবিতে তাঁকে ‘পয়জন আইভি’-র ভূমিকায় উমা থার্মানের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে৷ টিম বার্টনের পরিচালিত ছবিটি বক্স অফিসেও বিশেষ সাফল্য লাভ করেনি৷
দ্য টার্মিনেটর ৩: রাইজ অফ দ্য মেশিনস (২০০৩)
আরো কয়েকটি ফিল্ম ফ্লপ করার পর শোয়ারৎসেনেগার আবার টার্মিনেটরের ভূমিকায় ফেরেন – তাঁর ইংরেজিতে যে অস্ট্রিয়ান টান আছে, সেটাই তাঁর সহায় হয়৷ তিনি নাকি ইচ্ছে করেই ঐ টানটা রেখেছিলেন, বলে শোয়ারৎসেনেগার দাবি করে থাকেন৷ এই ছবিটির পর শোয়ারৎসেনেগার কিছুদিন সিনেমা থেকে অবসর নেন ও ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল অবধি ক্যালিফর্নিয়ার গভর্নর হিসেবে কাজ করেন৷
টার্মিনেটর: জেনিসিস (২০১৫)
চতুর্থ টার্মিনেটর ছবিতে ৬৭ বছর বয়সি শোয়ারৎসেনেগার ‘টি-৮০০’-র ভূমিকায় অভিনয় করেছেন৷ মাথার কয়েকটা চুল সাদা হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও নায়িকা সারা কনর ও বিশ্বের বাকি বাসিন্দাদের আসন্ন পতনের হাত থেকে রক্ষা করতে আর্নির কোনো অসুবিধা হয়নি৷ তিনি তো বলেইছিলেন: ‘আই ভি বি ব্যাক’, ‘আমি ফিরব’৷