1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শেষ হলো প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে বানানো জাহাজের অভিযান

২৬ জুলাই ২০১০

সমুদ্র দূষণ হচ্ছে নানা ভাবে৷ এই দূষণের কারণে সমস্যায় রয়েছে পরিবেশ প্রতিবেশ এবং মানুষ৷ তাই কিছু সচেতন মানুষ চেষ্টা করছেন মানুষকে বোঝাতে, নেমেছেন প্রচারে৷ প্লাস্টিক বোতলের জাহাজ ‘প্লাসটিকি’র সমুদ্রযাত্রা সেই প্রচারেরই অংশ৷

https://p.dw.com/p/OUyo
প্লাস্টিক বোতলের জাহাজ ‘প্লাসটিকি’ছবি: AP

আজ আপনাদের সামনে একটা প্রশ্ন৷ বলুন তো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ডাস্টবিন কোথায়? অনেকেই হয়তো এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন৷ যারা একটু মাথা চুলকাচ্ছেন, মানে চিন্তা করছেন, আপনার উত্তরটি সঠিক হবে কি হবে না, তাদের জন্য বলে রাখি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জঞ্জাল ফেলার জায়গাটি আমাদের স্থল ভাগে নয়! এটির অবস্থান সমুদ্রের গভীরে, উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে৷ আর বলে রাখা ভালো এই আবর্জনার প্রায় পুরো অংশই জুড়ে আছে প্লাস্টিকের বোতল৷ ভেবে দেখুন তো! কি সাঙ্ঘাতিক অবস্থা! এমুনিতেই সমুদ্র দূষণের কারণে প্রকৃতির উপর নেমে আসছে নানা ধরনের বিপদ৷ তার উপর এহেন অবস্থা?

তথ্য অনুসারে, সমুদ্রকে বিষাক্ত করে তোলার এই কাজটি শুরু হয় ১৯৯৭ সাল থেকে৷ আর এই কয়েক বছরে সেখানে জমা হয়েছে ১০ কোটি টনেরও বেশি আবর্জনা৷ ভাবুন তো কি শোচনীয় অবস্থা প্রকৃতি আর পরিবেশের?

২০০৬ সালে জাতিসংঘের পরিবেশ সংস্থা জানিয়েছিল, এই ডাস্টবিনের কাছে সাগরের প্রতি বর্গমাইলে গড়ে ৪৬ হাজার প্লাস্টিকের বোতল ভাসতে থাকে৷ এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি রিসাইকেল করা যায় না৷ এ সব বোতলের ৭০ শতাংশই সাগরের পানির নিচে পড়ে থাকে৷ এখন প্লাস্টিকের বোতল জমে ২০ মিটার পুরু স্তর হয়ে আছে৷ তাদের মতে, সাগরের নিচে এগুলো দেখলে মনে হয় একটা প্লাস্টিকের রাস্তা তৈরি হয়েছে৷

এ বিশাল আবর্জনার ৮০ শতাংশ আসে স্থল ভাগ থেকে৷ বাকিটা আসে জাহাজ থেকে৷ তিন হাজার যাত্রীবাহী একটি জাহাজ প্রতি সপ্তাহে ওই অঞ্চলে প্রায় আট টন করে আবর্জনা ফেলছে৷ টোকিও ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানালেন এ সব তথ্য৷

এই অবস্থার অবসান চান কিছু মানুষ৷ তাই তারা নেমেছেন সমুদ্রে৷ ভাসিয়েছেন ভেলা! না ভেলা নয় জাহাজ৷ ছোট একটি জাহাজ৷ এই জাহাজটি বানানো হয়েছে সমুদ্রের নীচে পড়ে থাকা সেই প্লাষ্টিক দিয়েই৷ মাত্র এক সপ্তাহে যে পরিমাণ প্লাস্টিকের বোতল জমা হয়, অর্থাৎ সাড়ে ১২ হাজার প্লাস্টিক বোতল দিয়ে বানানো হয়েছে ১২ টন ৬০ ফুট উঁচু একটি প্লাস্টিকের জাহাজ৷ নাম দেয়া হয়েছে প্লাস্টিকি৷ মানুষকে সচেতন করতেই অভিনব এই জাহাজ৷

২০ মার্চ সানফ্রান্সিসকো থেকে যাত্রা শুরুর পর ক্যালিফোর্নিয়া ও সিডনি হয়ে জাহাজ পৌঁছে গেছে অস্ট্রেলিয়ায়৷ জাহাজটি চলেছে সৌর এবং বায়ু এবং ঢেউ থেকে সৃষ্ট বিদ্যুতের মাধ্যমে৷ চার নাবিক চালাচ্ছেন এটি৷ এদের দলনায়ক ডেভিড দ্য রথশিল্ড৷

এই জাহাজের আরেক নাবিক জো রয়লে৷ তাঁর কথায়, ‘‘এটি আমার জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ৷ আমরা একটি অসাধ্য সাধন করছি৷ আমরা চাই এই সুন্দর পৃথিবী আরও সুন্দর থাকুক৷ তাই আমরা পাল তুলি৷ মানুষকে সচেতন করতেই আমাদের এই অভিযান৷''

প্লাস্টিকির এই অভিযানের পরিসমাপ্তি হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি হারবারে এসে নোঙ্গর করার পর৷ পরিবেশবাদী এই নাবিক দল জানিয়েছে, তাঁরা দাঁড় বেয়েছেন ১৫ হাজার কিলোমিটার৷ সিডনিতে নেমে এই নাবিকদের মন্তব্য, ‘আমরা খুব খুশি৷ খুব! '

প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক