1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শেঙেন চুক্তি কার্যকরী হয় ১৫ বছর আগে

২৬ মার্চ ২০১০

আজ থেকে ৩০ বছর আগে লাক্সেমবুর্গের শেঙেন শহরে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, এবং তার আরো ১৫ বছর পরে যে চুক্তি ইউরোপের অংশবিশেষে কার্যকরী হয়, সেই শেঙেন চুক্তির নাম আজ সারা বিশ্বের মানুষ জানে৷

https://p.dw.com/p/MfGH
পোল্যান্ডের শেঙেন চুক্তিতে যোগদানের আগে জার্মান-পোলিশ সীমান্তের চেকপোস্ট তুলে নেওয়া হচ্ছেছবি: AP

১৯৮৫ সালে বেনেলাক্স রাষ্ট্রগুলি, জার্মানি এবং ফ্রান্স প্রথম শেঙেন চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করে৷ চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল সীমান্তে পুলিশি নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়ে একটি একীকৃত পণ্যের বাজার সৃষ্টি করা৷ সে'যাবৎ শেঙেন বস্তুত একাধারে মানুষ ও পণ্যের অবাধ যাতায়াতের এবং অন্যদিকে ইউরোপের একীকরণ, এমনকি স্বাধীনতা তথা উদারতার একটি প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ অবশ্য ‘‘শেঙেনের'' এই যাত্রা খুব সহজ হয়নি৷ শেষমেষ ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে যখন পূর্ব ইউরোপের আটটি দেশ এবং মাল্টা ‘‘শেঙেনে'' যোগদান করে, তখন জার্মানির মতো দেশে প্রত্যাশার চেয়ে ভীতিই বেশী পরিলক্ষিত হয়েছিল৷

অকারণ ভীতি

সে'সময় জার্মানির মানুষদের চেয়েও বেশী, তার রাজনীতিক এবং বার্তামাধ্যমগুলির প্রথম এবং প্রধান, উক্ত ও অনুক্ত ভয় ছিল আন্তঃ-সীমান্ত অপরাধবৃত্তি বাড়ার ভয়, বিশেষ করে যখন পোল্যান্ড অথবা চেক গণরাজ্যের মতো পূর্বের প্রতিবেশীদের সঙ্গে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির বিচারে জার্মানির দুস্তর ব্যবধান৷ ঠিক সেই কারণেই অনেকের মুখেই শোনা গিয়েছিল যে এবার অপরাধবৃত্তি ঠিক সেই পরিমাণে বাড়বে৷ কিন্তু আজ তার দু'বছরের বেশী পরে দেখা যাচ্ছে যে, সীমান্তের কাছাকাছি এলাকাগুলিতে গাড়ি চুরির ঘটনা কিছুটা বাড়া ছাড়া অপরাধবৃত্তি বস্তুত কমেছে৷ যেমন জার্মানির পূর্বাঞ্চলের ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্য পোল্যান্ডের সঙ্গে তার সীমান্ত অঞ্চলে অপরাধবৃত্তির পরিসংখ্যান রাখছে ২০০৮ সাল থেকে৷ এবং সেই পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে যে, ২০০৮ সালে সীমান্ত অঞ্চলে অপরাধ ২০০৭ সালের তুলনায় ১২.৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে৷ এবং ২০০৭ সালে পোল্যান্ড শেঙেন চুক্তির অংশ ছিল না৷

Schengen SIS Offene Grenze Deutschland und Tschechien
জার্মান-চেক সীমান্তে অবাধ গাড়ি চলাচলছবি: picture-alliance/ dpa

কিন্তু অবাধ স্বাধীনতা নয়

অবশ্য সীমান্তে স্থায়ী নিয়ন্ত্রণ উঠে যাওয়ার অর্থ অবাধ স্বাধীনতা নয়৷ সেটা বোঝালেন বার্লিনের ফেডারাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মার্কুস বায়ার: ‘‘এটা জানা থাকা দরকার যে, সীমান্তে স্থায়ী নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়ার মানে এই নয় যে, পুলিশ পুরোপুরি সরে যাচ্ছে৷ এবং অপরাধবৃত্তির বর্তমান পরিস্থিতিতে তা উচিৎ'ও নয়৷ জার্মানি এক হিসেবে ইউরোপের মাঝখানে এবং সেই অর্থে অপরাধীদের আসা-যাওয়ার পথে৷ কাজেই ফেডারাল পুলিশ তাদের তথাকথিত সীমান্ত-পরবর্তী নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অথবা সরাসরি তাদের খোঁজ করে ঠিকই ধাওয়া করছে৷''

বায়ার আরো বললেন শেঙেন সদস্যদেশগুলির মধ্যে কম্প্যুটারের মাধ্যমে অপরাধ এবং অপরাধী সংক্রান্ত তথ্যের আদানপ্রদানের কথা৷ বহু ক্ষেত্রেই দু'দেশের পুলিশ একসঙ্গে টহলদারিতে যাচ্ছে৷ অনেক ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরো বহুদূর এগিয়েছে, যেমন জার্মান পুলিশ অপরাধীদের পোল্যান্ডের মধ্যে ঢুকে ৪৫ কিলোমিটার অবধি ধাওয়া করতে পারে৷

অর্থনৈতিক বিচারেও জার্মানি শেঙেন চুক্তি থেকে লাভবানই হয়েছে এবং হবে৷ জার্মানির পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত অঞ্চলগুলিতে আঞ্চলিক ব্যবসায় বৃদ্ধি পেয়েছে - তার কারণ সময় সময় অতি সাধারণ: সীমান্তের চেকপোস্টে এখন আর লরী-গাড়ির লাইন দাঁড়ায় না৷ জার্মনিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শ্রমিকের অভাব৷ সে অভাবও খানিকটা দূর করছে পূর্বের প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে আগত শ্রমিকরা৷

প্রতিবেদক: হার্ডি গ্রাউপনার, অনুবাদ: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: ফাহমিদা সুলতানা