শিশুর অ্যালার্জি রোধে গর্ভবতী নারীর যা করণীয়
আজকাল কথায় কথায় নানা ধরনের অ্যালার্জির কথা শোনা যায়৷ তবে গর্ভবতী নারী কিছুটা সতর্ক হলে সন্তানের অ্যালার্জির ঝুঁকি অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব৷
সতর্ক হতে হবে শিশুর জন্মের আগেই!
জার্মানির ত্বক ও অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞদের করা এক সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, সন্তান জন্মের পর অনেক মা-বাবাই অ্যালার্জি সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে উঠেন৷ এতে অবশ্য তেমন কোনো উপকার হয় না৷ কারণ সন্তানের অ্যালার্জির ঝুঁকি কমাতে হলে শিশুর জন্মের আগেই মা এবং বাবাকে সতর্ক হতে হবে৷ শিশুর জন্মের পরে নয়!
মা-বাবা
বাবা-মায়ের যদি অ্যাজমা, ফুলের রেণু থেকে অ্যালার্জি বা হে ফিভার, ধূলোবালি বা বিভিন্ন খাবারে অ্যালার্জি থাকে, তাহলে স্বাভাবিকভাবে তার সন্তানেরও সেই সব অ্যালার্জি হতে পারে৷ এছাড়া শিশুর মা এবং বাবা – দু’জনেরই যদি অ্যালার্জি থাকে, তাহলে তাঁদের সন্তানের অ্যালার্জি হওয়ার আশংকা থাকে আরো বেশি৷ জানান জার্মান বিশেষজ্ঞ এরহার্ড হাকলার৷
ধূমপান
গর্ভবতী হওয়ার সাথে সাথেই শিশুর মা এবং বাবার ধূমপান করা উচিত নয়৷ তাছাড়া জন্মের পর শিশু যতদিন মায়ের দুধ পান করে, এমনকি তার পরেও বাবা-মায়ের ধূমপান থেকে দূরে থাকা উচিত৷ বাড়িতে কেউ ধূমপান করলে তা শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে বাধাগ্রস্ত করে৷ কারণ তখন অ্যাজমা বা শ্বাসনালীর মতো অন্যান্য অ্যালার্জি হওয়ার ঝুঁকি শিশুর মধ্যে বেশি থাকে৷
বিভিন্ন বাদাম, বেগুন, মাংস...
শিশু যতদিন মায়ের দুধ পান করে, অন্তত ততদিন শিশুর মাকে সুসম খাবার খেতে হবে৷ বাদাম, বেগুন বা গরুর মাংসের মতো খাবারে যদি মায়ের অ্যালার্জি থাকে, তাহলে সে সমস্ত খাবার থেকে মাকে দূরে থাকতে হবে অবশ্যই৷
পোষা জীবজন্তু
যে বাড়িতে ছোট বাচ্চা থাকে, সেখানে পোষা জীবজন্তু রাখা ঠিক নয়৷ বিশেষ করে বেড়াল৷ কারণ বেড়াল শিশুর অ্যালার্জির জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ৷ পাখিও ঝুঁকিমুক্ত নয়৷ তবে কুকুরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা গেলে, তারা তেমন ঝুঁকিপূর্ণ নয় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা৷
বেবির ঘর
নতুন অতিথীর জন্য অনেক বাড়িই নতুন ফার্নিচার ও জিনিসপত্র দিয়ে সুন্দর করে সাজানো হয়৷ জার্মানিতে বেশিরভাগ পরিবারেই মেয়ে শিশু হলে তার জন্য সবকিছু গোলাপি আর ছেলের জন্য নীল রঙের জিনিস দিয়ে সাজানো হয়৷ অথচ কাঠের নতুন ফার্নিচার থেকেও শিশুর অ্যালার্জি হতে পারে৷ তাই ফার্নিচার কেনার সময় বিষয়টা পরিবারের সকলকে মনে রাখতে হবে, জানান ড. এরহার্ড হাকলার৷
ঘরে নতুন রং
শিশুর ঘর মনের মতো করে সাজাতে অনেকেই ঘরে নতুন রং করেন৷ কিন্তু রঙের মধ্যে থাকে নানা রকম ক্ষতিকর উপাদান, যা থেকে শিশুর অ্যালার্জি হওয়ার আশঙ্কা থাকে৷ তাই ঘরে যদি রং করতে হয়, তবে অবশ্যই পরিবেশবান্ধব রং ব্যবহার করা উচিত৷
মুক্ত বাতাস
দিনে তিনবার দশ মিনিট করে শিশুর ঘরের জানালা বড় করে খুলে দিতে হবে, যাতে ঘরে কোনোরকম গন্ধ না থাকে বা ফাঙ্গাস না পড়ে৷ এছাড়া বিছানার চাদর, বালিশ নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে৷ শিশুর মা-বাবা এবং পরিবারের সকলে এই নিয়মগুলো মেনে চললেই একমাত্র অ্যালার্জির ঝুঁকি থেকে শিশুকে দূরে রাখা সম্ভব৷