1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শান্তি সংলাপ ফের শুরু করতে বৈঠকে কৃষ্ণা-কোরেশী

১৫ জুলাই ২০১০

পথ হারিয়ে ফেলা শান্তি সংলাপকে পথে ফেরাতেই বৈঠকে বসলেন ভারত ও পাকিস্তানের দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণা ও শাহ মেহমুদ কোরেশী৷ ইসলামাবাদে আজই হলো এই বৈঠক৷

https://p.dw.com/p/OMHA
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কৃষ্ণাকে পাকিস্তানে অভ্যর্থনা জানান ভারতে পাকাস্তানের রাষ্ট্রদূত শাহিদ মালিকছবি: AP

ফলাফল কী, তা এখনো জানা যায়নি৷ তবে পরস্পরের প্রতি আস্থা অর্জনই যে বৈঠকের মূল সুর, তা বলছেন বিশ্লেষকরা৷

২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের শান্তি আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়৷ এখন তা পুনরায় শুরুর প্রচেষ্টা চলছে৷ একমাস আগেই পাকিস্তান সফর করে আসেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম৷ আর এবার গেলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণা৷ মুম্বাই হামলার পর ভারতের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটাই প্রথম পাকিস্তান সফর৷ তবে গত বছর নিউ ইয়র্কে মিলিত হয়েছিলেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ আর গত ফেব্রুয়ারি মাসে নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়৷

বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, তা এখনো জানা না গেলেও দুই দেশের কর্মকর্তাদের কথা থেকে এটুকু বোঝা গেল, ভারত তুলেছে সন্ত্রাসের বিষয়টি৷ আর পাকিস্তান জানিয়েছে, যৌথ নদীর পানি বণ্টন নিয়ে তাদের সমস্যার কথা৷ এছাড়া দ্বিপাক্ষিক অন্যান্য বিষয়ও উঠেছে আলোচনার টেবিলে৷ বৈঠকের পর দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে৷ তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাকিস্তানের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, সংবাদ সম্মেলনে কিছুটা দেরি হবে৷ কারণ এক দফা বৈঠকের পর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী খান জারদারি এবং প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানীর সঙ্গে দেখা করেন এস এম কৃষ্ণা৷ এরপর দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফের বসেন বৈঠকে৷ আর তা শেষ হওয়ার পরই হবে সংবাদ সম্মেলন৷ সেখানে যে যৌথ বিবৃতিটি পড়া হবে, তা চূড়ান্ত করতে এখন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন দুই দেশের কর্মকর্তারা৷ ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, পাকিস্তানে সন্ত্রাসের বিস্তার নিয়ে নয়াদিল্লির উদ্বেগের যথার্থতা উপলব্ধি করেছে ইসলামাবাদ৷

দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত হবে, এমন আশা করছেন না বিশ্লেষকরা৷ তাঁরা বলছেন, শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরুর কাজে গতি দিতেই এই বৈঠক৷ যা পরস্পরের আস্থা অর্জনে দাওয়াই হিসেবে কাজ করবে৷ দ্বিপাক্ষিক বিরোধ অবসানে ২০০৪ সালে শান্তি আলোচনা শুরু করে পরমাণু শক্তিধর এই দুটি রাষ্ট্র৷ চার বছর পর মুম্বাই হামলার পর এর ছন্দপতন ঘটে৷

মুম্বই হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই'র যোগসূত্র রয়েছে বলে ভারতের দাবি৷ এস এম কৃষ্ণার সফরের ঠিক আগেই সেই কথাটি আবার তোলেন ভারতের স্বরাষ্ট্র সচিব জি কে পিল্লাই৷ আর ভারতের সংবাদ মাধ্যমগুলো বলে আসছে, কোরেশীর সঙ্গে আলোচনায় এস এম কৃষ্ণারও এই বিষয়টি তোলা উচিত৷ মুম্বাই হামলার পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ডেভিড হেডলির স্বীকারোক্তি আইএসআইকে নিয়ে ভারতের অভিযোগকে আরো জোরালো করে তোলে৷ হেডলি আমেরিকান হলেও তাঁর বাবা এক সময়ে পাকিস্তানের কূটনীতিক ছিলেন৷ কাশ্মীর নিয়ে দীর্ঘকালের বিরোধের মধ্যে আবার মুম্বই হামলার পর পাক-ভারত সম্পর্কে ঘটে চরম অবনতি৷ পাকিস্তান অবশ্য স্বীকার করেছে, হামলার পরিকল্পনার একটি অংশ হয়েছিলো পাকিস্তানে৷ এই জন্য গ্রেপ্তারও করেছে কয়েকজনকে৷ তবে ভারত চায়, আইএসআই'র সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি আমলে নিক ইসলামাবাদ৷

ইসলামাবাদে পররাষ্ট্র দপ্তরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক যখন শুরু হয়, তখনি খবর আসে, পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমের শহর সোয়াতে জঙ্গি হামলা হয়েছে৷ যাতে নিহত হয়েছে অন্তত পাঁচজন৷ এস এম কৃষ্ণা গতকাল ইসলামাবাদ পৌঁছে কথা শুরু করেছিলেন এই সন্ত্রাসবাদ নিয়েই৷ তাঁর বক্তব্য ছিলো, সন্ত্রাসের মূল উৎপাটন করতে হবে পাকিস্তানকে৷ একইসঙ্গে তিনি শুনিয়েছেন আশার বাণী৷ কৃষ্ণা বলেছেন, তিনি আশা করছেন, তাঁর সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে৷ আর বিশ্লেষকরা বলছেন, ভালো ফল পেতে হলে দুই পক্ষকেই নমনীয় হতে হবে৷

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক