শরণার্থীদের যেভাবে সাহায্য করছে জার্মানরা
গত বছর ২ লক্ষ শরণার্থী এসেছে জার্মানিতে৷ এ বছর সংখ্যাটা সাড়ে সাত লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা৷ নতুন দেশে, নতুন পরিবেশে শরণার্থীদের টিকে থাকতে নানাভাবে সহায়তা করছে জার্মানরা৷ তারই কিছু নমুনা দেখুন আজকের ছবিঘরে...৷
শরণার্থীদের জন্য লাইব্রেরি
গ্যুন্টার রাইশার্ট পেশায় স্থপতি৷ নুরেমব্যার্গে শরণার্থীদের জন্য একটা দারুণ লাইব্রেরি তৈরি করেছেন তিনি৷ বই তো আছেই, সঙ্গে বিনা খরচে জার্মান ভাষা শেখার সব ব্যবস্থাই আছে সেই লাইব্রেরিতে৷ সেখানে অভিবাসন প্রত্যাশীদের সন্তানদের লিখতে শেখানোর জন্য আলাদা ক্লাসও নেন গ্যুন্টার৷ যুদ্ধ চলছে এমন দেশ থেকে আসা শিশুদের আতঙ্ক থেকে বের করে আনার জন্য লাইব্রেরিতে বিশেষ ব্যবস্থাও রেখেছেন গ্যুন্টার রাইশার্ট৷
দোভাষীদের সহায়তা
জার্মানিতে জার্মান ভাষা না জানলে অনেক সময়ই মুশকিলে পড়তে হয়৷ তার ওপর ইংরেজিও না জানলে তো চলা দায়৷ তাই বার্লিনে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন অনেক জার্মান তরুণ-তরুণী৷ নাটালিয়া তাঁদেরই একজন৷ অন্য দোভাষীদের মতো অবসর সময়ে তাঁরও কাজ ডাক্তার দেখানো, কাজ খোঁজার মতো কিছু কাজের সময় অভিবাসীদের সঙ্গে থাকা এবং তাঁদের কথা সব জায়গায় বুঝিয়ে বলা৷
ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া
ডর্টমুন্ডের ৪০০ শরণার্থীকে এখন আর ইন্টারনেট নিয়ে ভাবতে হয় না৷ তাদের ঘরে বিনা খরচে ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ সে ব্যবস্থা করে দিয়েছেন সভেন বোরশার্ট এবং তাঁর বন্ধুরা৷
হটলাইনে তাঁরা আছেন
বার্লিনের ‘গুটে-টাট ডট ডিই’ ফাউন্ডেশন শরণার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবসময় প্রস্তুত৷ তাদের এই অফিসে হটলাইনে ফোন করে স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তা পেতে পারেন শরণার্থীরা৷
শিক্ষকদের পাশে শিক্ষার্থীরা
শরণার্থীদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন দেশে যাঁরা শিক্ষকতা করতেন৷ জার্মানিতে তাঁদের উপযোগী কাজ জোগাড় করে দিতে অনেক জার্মানই আগ্রহী৷ তাঁদের বেশির ভাগই ছাত্র-ছাত্রী৷ তাঁরা সবাই মিলে অ্যাকাডেমিক এক্সপেরিয়েন্স ওয়ার্ল্ডওয়াইড (এইডাব্লিউ) নামের একটি অ্যাকাডেমি গড়েছেন যার কাজই হলো শরণার্থী শিক্ষাবিদদের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ ঘটিয়ে দেয়া এবং তাঁদের জার্মান ভাষা শিখতে সহায়তা করা৷
ফেসবুকের সহায়তায় দোকান
ম্যুলহাইমের এই দোকানটি শরণার্থীদের জন্যই তৈরি করেছেন রাইনহার্ড সেহলস৷ এক বছর আগে তিনি ফেসবুকে সবার উদ্দেশ্যে কিছু ইরাকি শরণার্থী পরিবারের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন৷ তারপর থেকে ধীরে ধীরে দাঁড়িয়ে যায় দোকানটি৷ রাইনহার্ড দোকানটির নাম দিয়েছে ‘ওয়েলকাম ইন ম্যুলহাইম’৷
খেলাচ্ছলে অর্থসংগ্রহ
নিকোল ট্সানাকিস এবং কর্নেলিয়া কপ ড্যুসেলডর্ফ থেকে হামবুর্গ গিয়েছেন এই লংবোর্ডে চড়ে৷ এভাবে ৪৪৪ কিলোমিটার অতিক্রম করার উদ্দেশ্য ছিল শরণার্থীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা৷ হামবুর্গে পৌঁছাতে পাঁচ দিন লেগেছে তাঁদের৷ ওই পাঁচ দিনে ৭ হাজার ইউরো উঠিয়েছেন তাঁরা৷ পুরো টাকাটাই যাবে শরণার্থী কল্যাণ সংস্থা ‘স্টে’-র তহবিলে৷
তারকারাও পাশে
শরণার্থীদের সহায়তায় জার্মানির অনেক তারকাও এগিয়ে এসেছেন৷ টিল শোয়াইগার গড়ে দিচ্ছেন অস্থায়ী বাড়ি, যাতে তাঁর দেশের নতুন অতিথিদের খোলা আকাশের নীচে কষ্ট করে থাকতে না হয়৷
নিজের বাড়িই যখন আশ্রয়শিবির
সিডিইউ-এর সাংসদ মার্টিন পাটসেল্ট নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন ইরিত্রিয়া থেকে আসা দুই শরণার্থীকে৷ পরিবারে দুজন নতুন সদস্য আসায় সাংসদের স্ত্রী-ও নাকি খুব খুশি৷
ব্যারাকই এখন শরণার্থী শিবির
নর্থ ফ্রিজিয়ার একটি শহরে কিছুদিন আগেও যে ব্যারাকটি ছিল এখন তা হয়ে গেছে শরণার্থী শিবির৷ ৬০০ শরণার্থী থাকেন সেখানে৷ তাঁদের জীবন চলে সরকার এবং স্থানীয়দের সহায়তার ওপর৷ অনেক পরিবারে তো ছোট ছোট বাচ্চা আছে, তাঁদের কথা ভেবে ডায়াপার দিতে এসেছেন ব্রিগিটে ভোটকা৷