শখের বশে বিমান বানান যিনি
১১ মার্চ ২০১৫গ্লাইডারটি খদ্দেরের কাছে দেয়ার আগে শেষবার কারিগরি দিক পরীক্ষা করেন আক্সেল লাঙে নিজেই৷ একেকটি গ্লাইডারের দাম ২ লাখ ৪০ হাজার ইউরো৷ লাঙে এভিয়েশনের সিইও লাঙে বলেন, ‘‘আমাদের খদ্দেররা সাধারণত প্রচুর ফ্লাই করেন৷ তাঁরা মূলত প্রশিক্ষিত বৈমানিক৷ আমাদের ২৫ শতাংশ খদ্দেরই বাণিজ্যিক বিমান চালান এবং প্রচুর সময় বিমানেই কাটান৷''
১৫ বছর বয়স থেকেই প্লেন বিক্রির সঙ্গে যুক্ত লাঙে৷ এখন তিনি একজন এয়ারোনটিকাল ইঞ্জিনিয়ার এবং নিজেই বিমান তৈরি করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘বিমানের পাখা অনেক বিস্মৃত হলে উড়ালের সময় বিশেষ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়৷ এটি বিমানকে ভাসিয়ে রাখতে সহায়তা করে৷ ফলে ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র এক হাজার মিটার উচ্চতায় থেকেও অনায়াসে ৫৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়া যায়৷''
যেভাবে তৈরি হয়
এ সব বিমানের কাঠামো তৈরি হয় কার্বন ফাইবার দিয়ে৷ ২০ জনের একটি দল এই কাজ করে৷ তারা লেয়ারের পর লেয়ার ফাইবার এভাবে গ্লু দিয়ে জোড়া লাগান৷ এ জন্য নিবিড়ভাবে হাত দিয়ে কাজ করতে হয়৷ প্রতি মাসে সাধারণত একটি গ্লাইডার বা সেলপ্লেন তৈরি করেন তাঁরা৷
আক্সেল লাঙে এই বিষয়ে বলেন, ‘‘বিমানের গঠন মূলত বক্রাকার বা বাঁকা হয়৷ আপনি যদি এগুলো রোবট দিয়ে করতে চান, তাহলে অত্যন্ত জটিল কম্পিউটার প্রোগ্রামের দরকার হবে৷ তাই এগুলো হাতে তৈরিই বেশি অর্থবহ৷ তাছাড়া হাতের কাজ সস্তাও৷''
ওজন গুরুত্বপূর্ণ
অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে নিয়ে গ্লাইডারের ডিজাইন করেন লাঙে৷ যেহেতু বিমানটি শুধুমাত্র বাতাসে ভর করে ওড়ে, তাই এটির ওজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু৷ ফলে সকল গ্লাইডার দেখতে পাতলা ও মসৃণ হয়৷
কাজটি জটিল৷ আর লাঙের প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ কর্মীই অভিজ্ঞ কারিগর, বিমান নির্মাতা নন৷ একটা পর্যায়ে তারা বিমান তৈরির প্রেমে পড়ে গেছেন৷ যেমনটা বললেন প্রধান ছুতার মিস্ত্রী মিশায়েল কামলে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা একটি চমৎকার যুগে বাস করছি৷ শত বছর আগে এগুলো ছিল অত্যন্ত দুঃসাহসিক কাজ৷ মানুষ সেসময় তাদের সর্বোচ্চ শ্রম দিয়েছেন৷ কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে তেমন সাফল্য পাননি৷ আর এখন আমরা চমৎকার একটি সময়ের সাক্ষী হচ্ছি৷''
প্রতিটি বিমান তৈরি শেষে নিজেই পরীক্ষা করেন লাঙে৷ গ্লাইডিং শুরু করতে দু'হাজার মিটার উপরে উঠে যান তিনি৷ এরপর হাওয়ায় ভাসা ছাড়া কিছু করার নেই৷