লেবাননে আর্ত মানুষের সেবা
লেবাননের শারীরিক প্রতিবন্ধীরা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি অসহায় – এ কথা বললে খুব একটা ভুল হয়ত হবে না৷ তবে ফ্রান্সিসকুস ফন হ্যারমান তাঁদের জীবনেও সুখ ফিরিয়েছেন৷ দেখুন ছবিঘরে৷
ফ্রান্সিসকুসের হাত ধরে...
১৯৯৭ সালে জার্মানির ফ্রান্সিসকুস ফন হ্যারমান প্রথমবার গিয়েছিলেন লেবাননে৷ সেখানকার প্রতিবন্ধিদের তখন ভীষণ দুর্দশা৷ সুচিকিৎসার ব্যবস্থা তো দূরের কথা, ভালো পরিবেশে বাঁচার অধিকারও ছিল না৷ অনেক সময় তাঁদের পেটানো হতো, বেঁধে রাখা হতো কিংবা ‘স্ট্রেইট জ্যাকেট’ পরিয়ে এমনভাবে রাখা হতো, যাতে হাত নাড়তে না পারে, কোথাও যেতে না পারে৷
একজন করিম....
করিমের পিঠ এখনো ক্ষতচিহ্নে ভরা৷ শরীরের কোনো অঙ্গই ঠিকভাবে চলে না বলে নিজে নিজে চলতে-ফিরতে পারে না৷ ১৯৯৭ সালে ফ্রান্সিসকুসের সঙ্গে যখন তাঁর প্রথম দেখা, তখন সে-ও গৃহবন্দি৷ বাইরে থেকে আর্তনাদ শুনেই তাঁকে দেখতে ছুটে গিয়েছিলেন ফ্রান্সিসকুস৷
পাহাড়ে আবাস
প্রথম লেবানন সফরে এমন অসংখ্য প্রতিবন্ধীকে দেখেছিলেন ফ্রান্সিসকুস৷ তাঁদের জন্য কিছু একটা করার ইচ্ছে জেগেছিল তাঁর মনে৷ ঠিক করলেন, পাহাড়ের ওপর প্রতিবন্ধীদের জন্য একটা বিশেষ ধরনের ‘সামার ক্যাম্প’ বানাবেন৷ জার্মানিতে ফিরে অর্থ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগ্রহ করলেন৷ এক বছর পর ২৭ জন স্বেচ্ছাসেবীকে নিয়ে ফিরে গেলেন লেবাননে এবং পাহাড়ের ওপরে গড়ে তুললেন প্রতিবন্ধীদের জন্য ছোট্ট একটি আবাস৷
ওদের মুখে হাসি
প্রথমে খুব ছোট আঙ্গিকে শুরু করেছিলেন ফ্রান্সিসকুস৷ কিন্তু দিনে দিনে অনেক বড় হয়েছে তাঁর ‘সামার ক্যাম্প’৷ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা অনেক বাড়ানো হয়েছে৷ সব সময় অন্তত দেড়শ প্রতিবন্ধী থাকে সেখানে৷ ফলে সামার ক্যাম্পে খুব আনন্দেই থাকতে পারছেন বিভিন্ন বয়সের প্রতিবন্ধীরা৷
ফ্রান্সিসকুস একা নন
১৯৯৭ সালে ফ্রান্সিসকুস যখন প্রথম ‘সামার ক্যাম্প’-টি নির্মাণের কাজ শুরু করেন, তখন অনেকেই এর সাফল্য নিয়ে সন্দেহ পোষন করেছিলেন৷ কিন্তু ১৮ বছর পর পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপরীত৷ লেবাননের ছাত্ররাও এখন এমন ক্যাম্প তৈরি করছেন৷ পূর্ব বৈরুতে পাহাড়ের ওপরে তৈরি হচ্ছে প্রতিবন্ধীদের জন্য বেশ বড় একটা অবকাশযাপন কেন্দ্র৷ এ বছরই এর উদ্বোধন হবে৷