1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লাল ড্রাগনের সঙ্গে নাচছে আফগানিস্তান

ফ্লোরিয়ান ভাইগান্ড/এসিবি৮ নভেম্বর ২০১৪

পশ্চিমা সৈন্যরা আফগানিস্তান ছাড়ছে আর প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ দেশটি ফিরছে চীনের দিকে৷ ডয়চে ভেলের ফ্লোরিয়ান ভাইগান্ড মনে করেন, আফগানিস্তানের সতর্ক থাকা উচিত, কারণ, এর ফলে তালেবান ফাঁকতালে প্রচুর টাকা পেয়ে যেতে পারে৷

https://p.dw.com/p/1Dj2Y
Der chinesische Präsident Xi Jinping mit dem afghanischen Präsidenten Ashraf Ghani Ahmadzai
ছবি: Getty Images

আফগানিস্তান প্রাকৃতিক সম্পদে কতটা সমৃদ্ধ এ নিয়ে কি কেউ খুব একটা ভেবেছে? পাগড়ি, জোব্বা, বোরখা, কাদামাটির তৈরি ঘর- এসব দেখলে দেশটিকে মধ্যযুগীয় চিন্তাধারার দেশই মনে হয়৷ ভাবমূর্তি সেরকমই৷ কিন্তু এই দেশেরই রয়েছে প্রচুর খনিজ সম্পদ, যার আনুমানিক মূল্য এক ট্রিলিয়ন ইউরো!

উত্তর দিকে তুর্কমেনিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আছে প্রচুর প্রাকৃতিক গ্যাস৷ উত্তরপূর্ব, অর্থাৎ চীনের কাছের এলাকায় আছে দুষ্প্রাপ্য খনিজ ধাতু, যা কিনা ট্যাবলেট এবং স্মার্টফোন তৈরিতে কাজে লাগে৷ এবং মধ্য আফগানিস্তানে মাটির নিচে লুকিয়ে আছে তামার বিশাল মজুদ৷ এত তামা এ অঞ্চলে তো বটেই, এমনকি সারা বিশ্বেই বোধহয় আর কোথাও নেই৷

পরিকাঠামো, খনি থেকে সম্পদ উত্তোলনের জন্য দক্ষ কর্মী এবং প্রশিক্ষিত প্রকৌশলীর অভাবের কারণে আফগানিস্তান যে এত প্রাকৃতিক সম্পদ একা উত্তোলন করে কাজে লাগাতে পারবেনা তা বোঝাই যায়৷ আফগানিস্তান স্বাভাবিক কোনো দেশ হলে নানা দেশের পুঁজি বিনিয়োগকারীরা ছুটে আসতো, উন্নয়ন প্রকল্পে অংশ নেয়ার জন্য নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতো৷ পাশাপাশি খনিজ সম্পদ উত্তোলনের কাজেও তারা অংশ নেয়ার চেষ্টা করতো৷

Afghanischer Präsident Ashraf Ghani in Peking
লাভের জন্য দরকার হলে তালেবানের সঙ্গেও হাত মেলাবে চীনছবি: Reuters/Takaki Yajima

কিন্তু ১০ বছর তালেবানের সঙ্গে যুদ্ধ করার পর পশ্চিমা দেশগুলো সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করেছে৷ তারা দেশে ফিরে যেতে চায়৷ সম্প্রতি ব্রিটেন তাদের সৈন্যপ্রত্যাহার পর্ব শেষ করেছে৷ সাহায্য সংস্থার কর্মীরাও হয়তো আগামী দু-এক বছরের মধ্যে ফেরার পথ ধরবে৷ এর প্রভাব শিক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডেও পড়বে৷

বিদেশীদের ফিরে যাওয়ার এই সময়টাতেই আফগানিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি প্রথম বিদেশ সফরে গিয়েছিলেন৷ তিনি কিন্তু ওয়াশিংটনে যাননি, গিয়েছিলেন বেইজিংয়ে৷

পশ্চিমা দেশগুলোও আফগানিস্তানের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেছে৷ কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের কোম্পানিগুলো আফগানিস্তানে কাজ করতে আগ্রহী নয়৷ তারা বলছে, ওখানে কাজ করা খুব বেশি ঝুঁকিপূর্ণ৷ দুর্নীতিগ্রস্থ প্রশাসন অথবা তালেবানের সঙ্গে কাজ করতে কেইবা চায়৷ হয় প্রতারিত হবেন, নয়তো হানাহানির মাঝে বিনিয়োগ করা সমস্ত টাকা হারাবেন- দুটোর একটা তো হবেই৷ কাজের ন্যূনতম নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না পেলে, কর্মীদের উপযুক্ত বেতন দিতে না পারলে কোম্পানিগুলো বাণিজ্যিক আত্মহত্যা করতে যাবে কেন?

Deutsche Welle REGIONEN Asien Paschtu Dari Florian Weigand
ফ্লোরিয়ান ভাইগান্ড, ডয়চে ভেলেছবি: DW/P. Henriksen

চীনের উদ্যোক্তারা নিজেদের নাগরিকদের ক্ষতি মেনে নিয়েও কাজ করতে যেতে পারে৷ আফগান যুদ্ধে এ পর্যন্ত অনেক চীনা নির্মাণকর্মী মারা গেছে৷ চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো তারপরও কাজ চালিয়ে যাচ্ছে৷

যা হোক, চীনের সঙ্গে ব্যবসায় নামার আগে আফগানিস্তানের উচিত নিজের স্বার্থ সম্পর্কে খুব স্বচ্ছ ধারণা রাখা৷ চীন তো লোগার প্রদেশের তামা খনি পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপন করাসহ অনেক ভালো ভালো প্রস্তাব দিয়েছে৷ এই রেলযোগাযোগটি হলে পুরো আফগানিস্তানই লাভবান হবে৷ কিন্তু রেল যোগাযোগ স্থাপনের কাজটা শেষ করা যায় কিনা সেটাই দেখার বিষয়৷

এ নিয়ে একটু সংশয় দেখা দিলেই চীন শুধু নিজের লাভের দিকে মন দেবে৷ লাভের জন্য দরকার হলে তালেবানের সঙ্গেও হাত মেলাবে৷ তাতে ক্ষতি হবে কার? আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষ এবং অংশত গণতান্ত্রিক বর্তমান কাবুল সরকার আর পশ্চিমা গোষ্ঠীর৷ খনিজ সম্পদ বিক্রির এক ট্রিলিয়ন ইউরোর ছোট্ট একটা অংশও যদি তালেবানের হাতে যায়, তাহলে তারা হয়তো ‘ইসলামিক স্টেটস'-এর চেয়েও বেশি ধনবান হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য