লাভ প্যারেডে নিহতদের স্মরণে দেশজুড়ে শোক জার্মানিতে
৩১ জুলাই ২০১০গত শনিবার জার্মানির ডুইসবুর্গ শহরে ‘লাভ প্যারেড' উত্সব শেষ হয়েছে মস্ত দুর্ঘটনা দিয়ে৷ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পালিয়ে যেতে গিয়ে ছোট্ট টানেলে পদপিষ্ট হয়ে মারা গেছেন একুশজন গত শনিবার৷ আহত হয়েছেন পাঁচশোরও বেশি মানুষ৷ এই দুর্ঘটনার ঠিক এক সপ্তাহ পরে দেশজুড়ে নিহতদের স্মরণ করা হচ্ছে আজ, শনিবার৷ চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল থেকে শুরু করে অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিত্ব হাজির ডুইসবুর্গ শহরের ছোট্ট গির্জা সালভাটোর-এ৷ রয়েছেন, নিহতদের পরিবারবর্গও৷ প্রার্থনার মাধ্যমে চ্যান্সেলরের উপস্থিতিতে আয়োজিত এই শোক অনুষ্ঠান দেখেছেন গোটা দেশের মানুষ৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের গির্জায় বড় পর্দায় দেখানো হয়েছে এই শোকপালন অনুষ্ঠান৷ কয়েক জায়গাতে বড়পর্দাতে খোলা জায়গাতেও আয়োজন করা হয় এই অনুষ্ঠান সম্প্রচারের জন্য৷
চ্যান্সেলর ম্যার্কেল জাতির এই দুঃখের সময়ে তাঁর গ্রীষ্মের ছুটি সংক্ষিপ্ত করে ফিরে এসেছেন মাঝপথে৷ লাভ প্যারেডের এই দুর্ঘটনা অকস্মাৎ বেশ ভালোই ধাক্বা দিয়েছে জার্মানিকে৷ পুলিশ আগে থেকেই সতর্ক করে বলেছিল, ডুইসবুর্গের মত ছোট্ট শহরে লাভ প্যারেডের মত এত বড় মাপের অনুষ্ঠান করাটা ঠিক হবে না৷ দেখা গেছে পুলিশের আশঙ্কাই সঠিক ছিল৷ নিরাপত্তার গাফিলতিতেই এই দুর্ঘটনা নাকি অন্য কোন কারণ রয়েছে এর নেপথ্যে, তা জানতে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন৷ কিন্তু হাজার তদন্ত করেও নিহতদের ফিরে পাওয়া যাবে না কোনদিনই, আক্ষেপ স্বজনহারা অনেকেরই৷
স্বজনহারাদের রোষেই ওদিকে পুলিশ প্রহরায় কার্যত গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন ডুইসবুর্গ শহরের মেয়র আডল্ফ জাওয়ারল্যান্ড৷ লাভ প্যারেডের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাফিলতির জন্য মেয়রকে দায়ী করে শহরের বাসিন্দারা তাঁর পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে৷ বেশ কয়েকটি হুমকি টেলিফোন আর ইমেলও পেয়েছেন মেয়র ইতিমধ্যে৷ যার প্রত্যেকটারই বক্তব্য, খুন করা হবে মেয়রকে৷ এই অবস্থায় আজকের শোক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সাহস পান নি মেয়র জাওয়ারল্যান্ড৷ খুনের হুমকি পাওয়ার পর থেকেই তাঁকে ঘিরে পুলিশ প্রহরা বসানো হয়েছে৷ সেই অবস্থাতেই তিনি এখন কার্যত গৃহবন্দী৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম