রোহিঙ্গাদের রোজা কেমন কাটবে?
দেশ থেকে পালিয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের অনেককে এবার অন্যরকম রমজান মাসের মুখোমুখি হতে হবে৷ তীব্র গরম তাদের জন্য সমস্যা হয়ে উঠতে পারে৷
ফেলে আসা সুখ স্মৃতি
তার নাম মো. হাশিম৷ এএফপির সঙ্গে আলাপকালে ১২ বছরের এই ছেলে দেশে রোজার সয়ম তার সুখের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছে৷ পরিবারের সবাই মিলে একসঙ্গে ইফতার করা, মেন্যু হিসেবে মাছ-মাংসের বিশেষ খাবার, যা শুধু রোজার মাসেই রান্না করা হয়, ঈদের সময় উপহার পাওয়া, নামাজের আগে গাছের ছায়ায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, এ সব কথা জানিয়েছে সে৷
নতুন অভিজ্ঞতা
সুখের কথা বলার পরপরই হাশিম বর্তমানে ফিরে আসে৷ এবারের রমজানে যে সেসব সম্ভব হবে না তা বুঝতে পেরে কিছুটা দুঃখিত হয় সে৷ অবশ্য পরক্ষণে অন্যদের কথা ভেবে নিজেকে কিছুটা ভাগ্যবান ভাবতে শুরু করে সে৷ কারণ সে তো তাও পরিবারের সঙ্গে আছে, এমন অনেক শিশু আছে যাদের সঙ্গে পরিবারের কেউ নেই, একেবারে একা৷
উপার্জন নেই
শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের কাজের অনুমতি নেই৷ ফলে তাদের আয়ও নেই৷ তাই ইফতার আর সেহরিতে ভালোমন্দ খাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও তা পূরণের উপায় নেই৷ ঈদের সময় কাউকে উপহার দেয়া কিংবা পাওয়া, কোনোটারই সম্ভাবনা নেই৷ ত্রাণ সংস্থার দেয়া খাবার আর জামাকাপড়ই তাদের একমাত্র সম্বল৷
তীব্র গরম
আরেকটি সমস্যার কথা জানিয়েছে হাশিম৷ তীব্র গরম৷ ‘‘আমরা এখানে বার্মার মতো রোজা করতে পারবনা, কারণ খুব গরম৷ এখানে কোনো গাছ নেই৷ ত্রিপলও গরম৷ দিনের বেলায় এটি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে৷ ফলে রোজা রাখা খুব কঠিন হবে৷’’
তবুও...
গরমসহ অন্যান্য সমস্যা থাকা সত্ত্বেও রোহিঙ্গারা রোজা রাখবেন বলে জানিয়েছেন ইমাম মুহাম্মদ ইউসুফ৷ ‘‘সূর্যের প্রচণ্ড তাপ থাকায় কঠিন হবে, তবে তবুও আমরা রোজা রাখব,’’ বলেন তিনি৷
ভুল কারণে স্মরণীয়
শরণার্থী শিবিরে থাকা শিশুদের জন্য এবারের রোজা স্মরণীয় হবে, তবে তা সম্পূর্ণ ভুল কারণে, মনে করেন কক্সবাজারে কর্মরত সেভ দ্য চিলড্রেন কর্মকর্তা রবার্টা বুসিনারো৷ এখানে শিশুদের খেলার জন্য শুধু ময়লা আর কাদা ছাড়া কিছু নেই৷