রামাসানের আঘাতে তছনছ ফিলিপাইন্স
‘সুপার টাইফুন’ হাইয়ানের আঘাত সামলে উঠতে না উঠতেই ফিলিপাইন্সে আবার ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত৷ এবার রামাসান৷ এই ঘূর্ণিঝড়ও কেড়ে নিয়েছে বেশ কিছু মানুষের প্রাণ, চার লাখের মতো মানুষ হয়েছে ঘরছাড়া৷ এ নিয়েই আজকের ছবিঘর৷
হিংস্র হাওয়া
ফিলিপাইন্সের মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের হাওয়াকে বলেন ‘গ্লেন্ডা’৷ মঙ্গলবার ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার বেগে ছুটে আসে রামাসান৷ মুহূর্তেই উড়ে যায় শত শত বাড়ির ছাদ৷ রাস্তায় উল্টে যায় গাড়ি, বিদ্যুতের খাম্বা আর গাছ৷ ম্যানিলা এবং ম্যানিলা থেকে একশ কিলোমিটার দূরের লোকালয়েও চলে প্রকৃতির এই ধ্বংসযজ্ঞ৷
বছরের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়
এ বছরের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় রামাসান সরাসরি আঘাত হানলে ম্যানিলার ক্ষতি আরো বেশি হতো৷ একটু পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ায় আরো বড় বিপর্যয় থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গেছে ফিলিপাইন্সের রাজধানী৷ প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ছুটে আসা এ ঝড়ে তছনছ হয়ে গেছে উত্তর দ্বীপপূঞ্জের কিছু দরিদ্র জেলের ঘরবাড়ি৷
স্থবির জনজীবন
বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়ার হানায় ম্যানিলা স্থবির হয়ে পড়ে৷ গাছপালা আর বিদ্যুতের খাম্বা উপড়ে পড়ায় ম্যানিলা ও আশপাশের কয়েকটি রাজ্যের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়৷ ম্যানিলার বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা মেরালকো জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৫৩ লাখ বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে তারা৷ অনেক এলাকায় নতুন করে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করতে বেশ সময় লাগবে বলেও সংস্থাটি জানিয়েছে৷
স্কুল-কলেজ বন্ধ...
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ম্যানিলা ও আশপাশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অনেকগুলো বাজার এখন বন্ধ৷ অনেক সরকারি অফিসেও আপাতত কাজকর্ম হচ্ছেনা৷ দু’শরও বেশি অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত রাখা হয়েছে৷ মঙ্গলবার থেকে ম্যানিলায় কোনো ওভারহেড ট্রেনও চলছেনা৷
ঘরছাড়া, দিশেহারা...
রামাসানের আঘাতে এ পর্যন্ত ৪ লাখ মানুষ ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে৷ আশ্রয়কেন্দ্রই এখন তাদের ঘর৷ ফিলিপাইন্সে প্রতি বছর গড়ে অন্তত ২০ বার ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে৷ প্রশান্ত মহাসাগরে ঝড় সৃষ্টি হলেই দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দীপপুঞ্জে নেমে আসে আতঙ্ক৷
‘বজ্রদেব’
‘রামাসান’ শব্দের অর্থ ‘বজ্রের দেবতা’৷ ফিলিপাইন্সে বর্ষা শুরু হয়েছে জুন থেকে৷ এই মাঝে ‘বজ্রের দেবতা’, অর্থাৎ রামাসানের প্রচণ্ড আঘাত৷ গত বছরের নভেম্বরে আঘাত হানা হাইয়ানের তুলনায় কম শক্তিশালী হলেও রামাসানের ক্ষতি সামলাতেও সময় লাগবে৷ হাইয়ানের আঘাতে ৬ হাজার ৩’শ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল, এক হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ৷
দুঃস্বপ্নের হানা...
ছবির এই জায়গাটিতে আঘাত হেনেছিল হাইয়ান৷ এবার এখানে শুধু একটু বৃষ্টি আর হালকা ঝড় হয়েছে৷ তাতেই এলাকা জুড়ে নেমে আসে আতঙ্ক৷ আলফ্রেডো কোয়া গত বছর স্বচক্ষে দেখেছেন হাইয়ানের তাণ্ডব৷ বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় আসছে শুনে মনে হয়েছিল আবার বুঝি জীবন বাঁচাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সাঁতরাতে হবে তাঁকে৷ এবার তাঁর এলাকায় অবস্থায় সেই পরিস্থিতি হয়নি৷