1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া গুপ্তচর বিনিময়

৯ জুলাই ২০১০

রাশিয়ায় অনেক দিন আগেই ধরা পড়েছিলো চার গুপ্তচর৷ একই অভিযোগে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ধরে ১০ জনকে৷ তবে তাঁদের কাউকে কারাগারে আর আটকে থাকতে হলো না৷ সমঝোতার মধ্য দিয়ে বন্দি বিনিময় করেছে দুই দেশ৷

https://p.dw.com/p/OEs0
পরমাণু বিশেষজ্ঞ ইগোর সুতিয়াগিন ২০০৪ সাল থেকে রাশিয়ার জেলে রয়েছেনছবি: AP

বলা হচ্ছে, ইতিহাসে দুই পরাশক্তির গুপ্তচর বিনিময়ের এটাই সবচেয়ে বড় ঘটনা৷

যুক্তরাষ্ট্রের ঘটনাটি গত মাসের শেষ দিকের৷ রাশিয়ার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ১০ জনকে আটক করে এফবিআই৷ এর মধ্যে চার দম্পতি এবং পেরুর বংশোদ্ভূত এক মার্কিন নাগরিকও রয়েছেন৷ বৃহস্পতিবার তাঁদের তোলা হয় নিউ ইয়র্কের আদালতে৷ তাঁরা নিজেদের দোষ স্বীকার করেন এবং ক্ষমা চান৷ এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ১০ জনকে আটক করার পর নড়েচড়ে বসে রাশিয়া৷ তাদের কারাগারে আগে থেকেই ছিলেন চারজন৷ যুক্তরাষ্ট্রে আটক ব্যক্তিদের ছাড়াতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে দেন-দরবার শুরু করে তারা৷ দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়৷ আর এর ফলাফলই হলো গুপ্তচরদের মুক্তি৷

যুক্তরাষ্ট্রের এবিসি টেলিভিশন জানায়, ১০ গুপ্তচরকে নিয়ে একটি রুশ বিমান মস্কোর পথে শুক্রবার সকালে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় পৌঁছে গেছে৷ অন্যদিকে চার বন্দির ক্ষমার আদেশে স্বাক্ষর করেন রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ৷ ওই চারজনকে মস্কো থেকে ভিয়েনায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানান রুশ কর্মকর্তারা৷ সেখানেই তাঁদের মার্কিন কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে৷

USA Russland Agentenaustausch Anna Chapman Spion
রাশিয়ার গুপ্তচর আনা চ্যাপম্যানছবি: AP

মস্কো বলছে, গুপ্তচর বিনিময়ের এই ঘটনা রুশ-মার্কিন সম্পর্কের নতুন দিগন্তের সূচনা করলো৷ এটা দুই দেশের মধ্যে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে দুই প্রেসিডেন্টের আন্তরিকতারই বহিঃপ্রকাশ৷ স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে গত শতকের ৮০'র দশকে প্রথম গুপ্তচর বিনিময় শুরু করে দুই পরাশক্তি৷ এই ইতিহাসে বর্তমান ঘটনাটিই যে সবচেয়ে বড়, তা জানালেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক হোল্ডার৷ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘যে সমঝোতা হয়েছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের কথা বিবেচনা করলে তা ইতিবাচক৷''

এফবিআই কর্মকর্তারা বলছেন, রুশ গুপ্তচররা নাম ভাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রে থাকতেন৷ তাঁরা সরকারি গোপন নথিপত্র হাতানোর চেষ্টা চালাচ্ছিলেন৷ এদের নাম হলো- ভ্লাদিমির গুরিয়েভ ও তাঁর স্ত্রী লিডিয়া গুরিয়েভ, আন্দ্রে বেজরুকভ ও তাঁর স্ত্রী এলেনা ভাভিলোভা, মিখাইল কুতসিক ও তাঁর স্ত্রী নাতালিয়া পেরেভারজেভা, মিখাইল সেমেনকো ও তাঁর স্ত্রী আনা চ্যাপম্যান, মিখাইল ভাসেনকভ এবং পেরুর বংশোদ্ভূত ভিকি পেলায়েস৷ দম্পতিদের সঙ্গে সন্তানরাও ছিলো৷ শিশুগুলোর ভবিষ্যত তাঁদের বাবা-মা'ই ঠিক করবেন বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন৷ এর মধ্যে পেরুর ভিকিকে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে রাশিয়া৷ তার থাকার জন্য রুশ কর্তৃপক্ষ একটি বাড়ি দিচ্ছে, পেনশনও পাবেন মাসে ২ হাজার ডলার করে৷ ইচ্ছা করলে পেরুসহ কয়েকটি দেশেও যেতে পারবেন তিনি৷ তাঁর সন্তানরা মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলে সে খরচও দেবে রাশিয়া৷ ভিকির আইনজীবী জন রড্রিগেজ বলেন, তিনিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন৷ তাই তাকে এই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে৷

অন্যদিকে রাশিয়া যাঁদের ছেড়ে দিচ্ছে, তাঁরা হলেন- ইগর সুতিয়াগিন, সের্গেই স্ক্রিপাল, আলেক্সান্ডার জাপরজস্কি ও গেনাদি ভাসিলেঙ্কো৷ এদের মধ্যে সুতিয়াগিন একজন পরমাণু বিজ্ঞানী৷ ২০০৪ সাল থেকে তিনি ধরা পড়েন৷ তারপর থেকেই ছিলেন কারাগারে৷ অভিযোগ রয়েছে, কারাগারে তাঁর ওপর মানসিক নির্যাতন চালানো হতো৷ এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন৷ তার স্বাস্থ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিলো৷

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক