1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ম্যামথ’রা বিলুপ্ত হল কি করে?

৩১ মার্চ ২০১০

প্রাগৈতিহাসিক সুবিশাল লোমশ ও দাঁতাল হস্তি ম্যামথরা নাকি প্রায় ১০,০০০ বছর আগে মানুষের অতিরিক্ত শিকারের ফলে লোপ পায়৷ কিন্তু এ’অভিযোগ সত্য না’ও হতে পারে, বলছেন বিজ্ঞানীরা৷

https://p.dw.com/p/MiiY
ছবি: DW-TV

ম্যামথ নামধারী ঐ দানবীয় দাঁতালদের ডাইনোসরদের পর্যায়ে ফেলার কোনো উপায় নেই৷ ম্যামথরা ‘প্রাক-ঐতিহাসিক' হলেও, বস্তুত মানুষরা অক্ষর এবং লিপি আবিষ্কার করার অনেক পর অবধি তারা বেঁচে ছিল৷ শেষ তুষার যুগের আগে ইউরেশিয়া এবং উত্তর আমেরিকার বিস্তীর্ণ তৃণভূমিতে ম্যামথদের বড় বড় দল ঘুরে বেড়াতো৷ তার অনেক পরেও তাদের একটি দল সুমেরু সাগরের একটি দ্বীপে বেঁচে ছিল৷ দ্বীপটির নাম ব়্যাঙ্গেল আইল্যান্ড৷ আজ সেটি রুশ মালিকানায়৷

রেডিওকার্বন ডেটিং করে দেখা গেছে যে শেষ ম্যামথরা সম্ভবত খ্রীষ্টজন্মের ১,৭০০ বছর আগেও ঐ ব়্যাঙ্গেল আইল্যান্ডে বেঁচে ছিল৷ মানবেতিহাস তার অনেক আগেই শুরু হয়ে গেছে৷

দোষ কার বা কিসের?

এখন প্রশ্ন ওঠে, ম্যামথরা হঠাৎ লোপ পেল কেন? আদৎ উত্তর ছিল, মানুষের শিকারের ফলে৷ পরে তার সঙ্গে যুক্ত হয়, ইউরোপ এবং এশিয়ার অংশবিশেষে জঙ্গল বাড়তে থাকার ফলে নাকি তৃণভোজী ম্যামথরা স্রেফ না খেতে পেয়ে মরে৷

In Kleinwelka bei Bautzen im Saurierpark von Franz Gruß entsteht ein neues Bild der Evolutionsgeschichte.
সত্যিই কি মানুষের অতিরিক্ত শিকারের ফলে লোপ পায় ম্যামথ?ছবি: picture alliance / ZB

তার পরের যুক্তি হল, ম্যামথরা মানুষের নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হয়েছে৷ তাদের লোম দেখলেই বোঝা যায় যে, তারা তুষারের জীব৷ তুষার যুগের অন্ত ঘটা'ই তাদেরও অন্ত ঘটায়৷

সেই তুষারদ্বীপ

বিজ্ঞানীদের মনোযোগ গিয়ে পরে ব়্যাঙ্গেল আইল্যান্ডের ওপর৷ দ্বীপটি প্রায় ৯,০০০ বছর আগে অবধি একটি প্রাকৃতিক তুষারসেতুর মাধ্যমে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল৷ ১২,০০০ থেকে ৯,০০০ বছরের মধ্যে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সেই সেতুটি উধাও হয় এবং দ্বীপটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে৷ এবং ব়্যাঙ্গেল আইল্যান্ডে মানুষের পদার্পণ ঘটে ম্যামথরা বিলুপ্ত হবার প্রায় ১০০ বছর পরে৷

তত্ত্বের বৈচিত্র্য

তাহলে বাকি থাকে তিনটি সম্ভাবনা: হয় ঐ শেষ ম্যামথরা কোনো নতুন রোগজীবাণু অথবা ভাইরাসের শিকার হয়েছে, নয়তো তারা কোনো একটি বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণ হারিয়েছে৷ নয়তো - এবং এ'টি ছিল তৃতীয় যুক্তি - তাদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় তাদের জিন-বৈচিত্র্যও কমে গেছে এবং তা' থেকেই তাদের বিলোপ ঘটেছে৷

কিন্তু সুইডেনের স্টকহোল্ম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ম্যামথের হাড় থেকে ডিএনএ নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেছেন যে, শেষ পর্যায়েও তাদের জিন-বৈচিত্র্য কিছুমাত্রায় কমেনি৷

কাজেই ম্যামথদের বিলুপ্তির রহস্য তুষারাচ্ছন্নই থেকে যাচ্ছে৷

প্রতিবেদক: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম