1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মৌমাছির হুল ফোটানোয় অসুখ সারে?

২৩ মার্চ ২০১০

হ্যাঁ, মৌমাছির বিষ প্রয়োগ করে চিকিৎসার পদ্ধতিটির নাম ‘এপিথেরাপি’৷ হাজার তিনেক বছরের পুরনো৷ আজও পাওয়া যায় চীনে এবং আর কোথায় জানেন? গাজা স্ট্রিপে!

https://p.dw.com/p/MZey
মৌমাছিদের আসল কাজ: মধু তৈরীছবি: BilderBox

গতকাল রয়টার্সের একটি মনোজ্ঞ খবর: রাজধানী বেইজিং-এর উত্তর-পূর্ব এলাকায় আছে এক কাং তাই মৌমাছি ক্লিনিক৷ প্রথাগত চীনা ভেষজবিদ্যা অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয় সেখানে৷ তারই মধ্যে পড়ে মৌমাছির হুল ফুটিয়ে চিকিৎসা৷ অনেকটা এ্যাকুপাংচারের মতো৷ তফাৎ শুধু এই যে ডাক্তাররা শরীরের বিশেষ বিশেষ অংশে সুঁচ না ফুটিয়ে মৌমাছিদের হুল ফোটান৷ চিমটে দিয়ে ধরে ধরে একটি একটি করে মৌমাছি বসানো হয়৷ মৌমাছিটি হুল ফুটিয়ে, বিষ ঢেলে দিয়েই প্রাণত্যাগ করে৷ হুল এবং বিষ থেকে যায় রোগীর শরীরে কয়েক ঘণ্টা ধরে৷ এবং তা'তেই নাকি রোগী আরাম পায়৷

18.03.2007 pz bienen 7
গবেষণাগারেও পৌঁছেছে মৌমাছিরাছবি: DW-TV

গুণাগুণ

হোমিওপ্যাথির মতো এপিথেরাপির কার্যকরিতা সম্পর্কে প্রথাগত বিজ্ঞানের সন্দেহ থেকে গেছে৷ কিন্তু এপিথেরাপির সমর্থকরা বলেন, এ'তে নাকি মাল্টিপল সক্লেরোসিস এবং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অর্থাৎ ধমনীর কাঠিন্য এবং গেঁটেবাতের মতো রোগ থেকে সৃষ্ট ব্যথার উপশম হয়৷ এবং ব্যথা কমে মূলত মৌমাছির বিষে যে মেলিটিন নামক প্রদাহ-উপশমকারী পদার্থটি আছে. তার কল্যাণে৷ মৌমাছির বিষে নাকি রক্ত চলাচলও ভালো হয়৷ তবে মৌমাছির হুল ফোটানোর বড় সমস্যাটি হল: যদি কারো মৌমাছির বিষে এ্যালার্জি থাকে৷

18.03.2007 pz bienen 6
হুল তো নয়, ইঞ্জেকশনছবি: DW-TV

কাই তাং মৌমাছি ক্লিনিকের ডাক্তাররা হাসপাতালের প্রাঙ্গণেই তাঁদের মৌচাক রাখেন৷ মৌমাছিগুলি ইটালি আর পারস্য উপসাগরীয় মৌমাছিদের একটা সংমিশ্রণ৷ ক্লিনিকে রোজ জনা তিরিশেক রোগীর মৌমাছি চিকিৎসা হয়৷ প্রত্যেক রোগীকে চার-পাঁচবার থেকে শুরু করে ১০০ বার হুল ফোটানো হয়! রোগীরাও নাকি চীনের দূর দূর অঞ্চল থেকে আসেন, কেননা মৌমাছি চিকিৎসার সবচেয়ে বড় গুণ হল, এ'টি সাধারণ এ্যালোপাথি চিকিৎসার চেয়ে সস্তা৷

গাজা স্ট্রিপে

ওদিকে এএফপি সংবাদ সংস্থার স্ক্রলে মাস চারেক আগে এই ধরণেরই একটা খবর চোখে পড়েছিল৷ খবরটা গাজা স্ট্রিপ থেকে৷ হামাস গাজা স্ট্রিপে ক্ষমতা দখল করা যাবৎ গাজার মানুষদের মিশর ইত্যাদি গিয়ে চিকিৎসা করানো বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ কাজেই রতিব সামুর নামে - ডাক্তার বলব, না এ্যাকুপাংচারিস্ট বলব, জানি না - তাঁর ব্যবসা জমে উঠেছে৷ সামুর তাঁর ‘ক্লিনিক' খোলেন ২০০৩ সালে৷ ক্লিনিকে তাঁকে দেখতে পাওয়া যাবে এক রোগীর কাছ থেকে আরেক রোগীর কাছে যাচ্ছেন হাতে একটি ছোট বাক্স নিয়ে৷ বাক্স থেকে শোনা যাচ্ছে রুদ্ধ মৌমাছিদের ক্রুদ্ধ গুঞ্জন৷ সামুর এই ক্লিনিক খোলার আগে পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুবান্ধবদের উপর এই অদ্ভুত চিকিৎসার ফল পরীক্ষা করে দেখেছিলেন৷ এখনও রোগ নিজে নির্ণয় করেন না, ডিগ্রীধারী ডাক্তারের মত নেন৷ সামুরের ক্লিনিকে রোগীদের প্রতিবারে চার থেকে ছ'বার হুল খেতে হয়৷

দায়মুক্তি

ওদিকে ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়া'তে ন'বছর বয়সি এক স্কুলের ছেলে ডেভিড ইউসুফ গত বছরের মার্চ মাসে তাদের স্কুলেরই কাছে একটি সরবতের স্টলের কাছে দাঁড়িয়ে ছিল৷ ভন ভন করে ঘুরছিল মৌমাছিরা৷ ডেভিড তাদেরই একটিকে ধরে সহপাঠিনী দিয়ান নির্মালাসারি'র বাঁ গালে বসিয়ে দেয়৷ মৌমাছিও যথারীতি হুল বসিয়ে দেয়৷ মেয়েটির বাবা'মা আদালতে মামলা করেন৷ ডেভিডের নাকি তিন বছরের জেল হতে চলেছিল! অবশেষে মাননীয় বিচারক মামলা বরখাস্ত করেছেন এই বলে যে, ‘‘এ'মামলা আদালতে আসাই উচিত হয়নি... এটা হল ছোটদের সাধারণ দুষ্টুমির ঘটনা৷''

প্রতিবেদক: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই