মোটা মানুষের দেশ টোঙ্গায় স্বাস্থ্য নিয়ে দুশ্চিন্তা
১৮ এপ্রিল ২০১১বিশেষ করে দ্বীপরাষ্ট্র টোঙ্গাতে অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার জন্যে মানুষের মধ্যে বাড়ছে অতিরিক্ত ওজনের জন্যে ডায়াবেটিস এবং স্ট্রোক৷
টোঙ্গার সুপার মার্কেটগুলোতে ঢুকলে দেখা যাবে তাকের ওপরে থরে থরে সাজানো রয়েছে অসংখ্য গরুর মাংসের ক্যান৷ সাথে হয়তো রয়েছে ভুট্টা, যব বা অন্য যে কোন উদ্ভিদের সংমিশ্রণ৷ বহু আগে ঐসব তাকেই সাজানো থাকতো ঐতিহ্যবাহী মাছ অথবা নারকেল৷ তারই জায়গা দখল করে নিয়েছে গরুর মাংস, টার্কি ব্রেস্ট, মিট লোফ, লাঞ্চন মিট অথবা স্প্যাম৷
বিভিন্নরকমভাবে এই সমস্ত মাংস মানুষকে প্রলুব্ধ করে৷ কোনটা স্মোকড, কোনটা মরিচ দেওয়া আবার কোনটা পনীর অথবা অতিরিক্ত ক্যালরি সমৃদ্ধ৷ তাহলে ঐ সব অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য ভালো হবে না কেন৷ শুধুই কি আর ভালো, একটু বেশিই ভালো আর কি!
ক্যানের ঐসব লবণ দেওয়া মাংসে চর্বি পুরোটা থেকেই যায়, যার ফলে লোকজনেরও ফুলে যাওয়া রোধ করা যাচ্ছে না৷ বেড়ে চলেছে ওজন৷ টোঙ্গার প্রধান চিকিৎসক মালাকায় আকে বললেন, প্রতিদিনই চলছে কারো না কারো শেষকৃত্য – হয় পাশের বাসার, না হয় আত্মীয়ের অথবা বন্ধুর৷ ডায়াবেটিস অথবা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন সবাই৷ এ এক আশ্চর্য ব্যাপার৷
টোঙ্গার স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, দেশে মোট জনসংখ্যার শতকরা ৯০ ভাগ অতিরিক্ত ওজনের মানুষ আর শতকরা ৬০ ভাগ স্থূলকায় অথবা যাকে বলা হয়ে থাকে ভীষণ মোটা৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউ এইচ ও-র গত বছরে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের যে দশটি দেশে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অতিরিক্ত ওজনের পুরুষ রয়েছে, তারমধ্যে ৮টি দেশই প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত৷
ফিজি ভিত্তিক ডব্লিউ এইচ ও-র পুষ্টি বিশেষজ্ঞ টেমো ওয়াকানিভালু বলেছেন, ঐ অঞ্চলে ওজন সম্পর্কিত বিভিন্ন রোগই চারভাগের তিনভাগ মৃত্যুর জন্যে দায়ী৷ তিনি বলেন, এটি এমন একটি সমস্যা, যা নিয়ে কাজ করতে স্বাস্থ্য বিভাগ হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে৷ তিনি বলেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের যেকোন দেশের একটি হাসপাতালে ঢুকলেই দেখা যাবে, শতকরা ৭৫ থেকে ৮০ ভাগ অস্ত্রোপচারই করা হচ্ছে স্থূলকায় অবস্থার সঙ্গে জড়িত চলাচল করতে না পারার সমস্যাজনিত কারণে৷
প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন