‘মূর্তি’ বিক্রিও করছে আইএস
হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটের পাশাপাশি ইতিহাস-ঐতিহ্য ধ্বংসেও নেমেছে আইএস৷ ইরাকে কয়েক হাজার বছরের পুরোনো শিল্পকর্ম ধ্বংস করেছে তারা৷ সুযোগ বুঝে কিছু শিল্পকর্ম নাকি বিক্রিও করছে ইসলামি জঙ্গি সংগঠনটি৷
মুছে দিচ্ছে উত্তরাধিকারের চিহ্ন
প্রথমে মসুলের এক জাদুঘরে ধ্বংসলীলা চালায় আইএস৷ ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় শহর মসুলের ওই জাদুঘরে আড়াই হাজার বছরেরও বেশি আগের অমূল্য সব শিল্পকর্ম সংরক্ষিত ছিল৷ হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে বেশিরভাগই প্রায় ধ্বংস করে ফেলেছে আইএস৷
আত্মপরিচয়ের সংকট
দু’হাজার বছরেরও পুরোনো হাত্রা শহরের ধ্বংশাবশেষ৷ প্রাচীন এই নগরীকে বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছে আইএস৷ ইরাকের পর্যটন মন্ত্রী আদেল শিরশাব মনে করেন, আইএস এভাবে শিল্পকর্ম ধ্বংস করে আসলে ইরাক এবং ইরাকের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশকে আত্মপরিচয়ের সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে৷
‘যুদ্ধাপরাধ’
ইরাকের আরেক প্রাচীন নগরী নিনেভেহও ধ্বংস করে দিয়েছে আইএস৷ অনেক বিখ্যাত প্রত্নতাত্তিকের মতে, এই নগরীটি ছিল ‘সভ্যতার সূতিকাগার’৷ এমন একটি নগরীকে ধ্বংস করায় জাতিসংঘও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে৷ জাতিসংঘের মতে, নিনেভে ধ্বংস করা যুদ্ধাপরাধের সামিল৷
ধ্বংস বন্ধে আন্তর্জাতিক উদ্যোগের আহ্বান
আইএস-এর এই ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের কঠোর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছে ইরাক৷ ইরাকের পর্যটনমন্ত্রী মনে করেন, আইএস এভাবে বারবার বিশ্ববাসীর ইচ্ছা এবং অনুভূতিকে অপমান করছে৷ আইএসকে প্রতিহত করার জন্য বিশ্বসম্প্রদায়ের প্রতি কঠিনতম উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি৷
একদিকে ধ্বংস, অন্যদিকে বিক্রি
ইসলামে মূর্তিপূজার স্থান নেই – এমন কথা বলে ইরাকের অনেক বড় বড় মূর্তি ধ্বংস করে ফেলেছে আইএস৷ তবে এমন কারণ দেখিয়ে বড় বড় অনেক শিল্পকর্ম ধ্বংস করে দিলেও ছোট ছোট অনেক মূর্তি তারা বিক্রিও করেছে৷ অতি পুরাতন শিল্পকর্ম আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করে মোটা অংকের টাকা উপার্জন করছে তারা৷
‘যাহা তালেবান, তাহাই আইএস’
ইসলামি জঙ্গীদের হাতে এর আগেও অনেক শিল্পকর্ম ধ্বংস হয়েছে৷ ২০০১ সালে আফগানিস্তানে অনেক বৌদ্ধ মূর্তি ধ্বংস করেছিল তালেবান৷ তাই আইএস-এর ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে তালেবানের ধ্বংসযজ্ঞের তুলনা করছেন অনেকে৷ অবশ্য অনেকে আবার বলছেন, আইএস-এর ধ্বংসযজ্ঞের ব্যাপকতা অনেক বেশি৷