1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্বয়ংসম্পূর্ণ টয়লেট

মার্টিন রিবে / এসি৪ জানুয়ারি ২০১৪

উন্নয়নশীল বিশ্বের অনেক দেশ অগ্রগতির অনেক পরিচয় দিলেও টয়লেটের অভাব আজও একটা বড় সমস্যা৷ এর পরিণতি পরিবেশ দূষণ সহ স্বাস্থ্যের নানা সমস্যা৷ জার্মানিতে এমন এক কমোড উদ্ভাবন করা হয়েছে, যা এই সমস্যার সমাধান করতে পারে৷

https://p.dw.com/p/1AkiS
Klo der Zukunft
ছবি: DW

স্বয়ংসম্পূর্ণ টয়লেট দিয়ে মুশকিল আসান | অন্বেষণ

পয়ঃ-প্রণালীর অভাব

বিশ্বের বহু দেশেই এ ধরনের দৃশ্য দেখতে পাওয়া যাবে৷ রোগ-জীবাণু ভর্তি ময়লা পানি বা জল৷ হাজার মানুষের মলমূত্র সেখানে গিয়ে পড়ার ফলে তা থেকে প্রতিদিন পাঁচ হাজার শিশু প্রাণ হারায়৷ কোটি কোটি মানুষ এই দূষণের ফলে অসুখে পড়েন৷ আবিষ্কারক রাল্ফ অটারপোল বলেন, ‘‘কার্যকরী পয়ঃ-প্রণালী না থাকার ফলে জনস্বাস্থ্যে নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি হয়, যেমন কলেরা ও অন্যান্য পেটের রোগ৷ শিশুদের বিশ-পঁচিশবার পেট নামলে অনেক সময়ে তারা তা থেকেই মারা যায়, যা অতি দুঃখজনক৷''

নতুন দিশা

রাল্ফ অটারপোল একটি নতুন ধরনের কমোড উদ্ভাবন করেছেন, যা সারা বিশ্বে লাখ-লাখ শিশুর জীবন বাঁচাতে সক্ষম৷ এই কমোডের দাম একশো ইউরোর বেশি হবে না, অথচ মলমূত্র বাইরের জলে গিয়ে পড়বে না৷ অটারপোল বলেন, ‘‘এই কমোডের বৈশিষ্ট্য হলো, এর যা আয়তন, তাতে একটি পরিবারের এক সপ্তাহের মলমূত্র, শুচিকর্মের পানি ইত্যাদি কমোডেই জমা থাকতে পারবে৷ এক সপ্তাহ পরে সেগুলো পাম্প করে বার করে দিতে হবে৷ কাজেই এই কমোড ব্যবহার করার সময় যতো কম জল খরচ করা যায়, ততোই ভালো৷ সে জন্য এই শাওয়ার-হেডটি রাখা হয়েছে৷ এই কমোড বসে কিংবা উবু হয়ে ব্যবহার করা চলে, যে দেশে যেরকম প্রথা৷''

কমোডের ভেতরে আবর্জনা পচে উঠে যাতে গন্ধ না হয়, সেজন্য ল্যাক্টিক অ্যাসিড ব্যাকটিরিয়া আর শর্করার একটি সংমিশ্রণ যোগ করা হয়৷ অটারপোল বলেন, ‘‘এটা যেমন ল্যাক্টিক অ্যাসিড গেঁজিয়ে করা একটি সলিউশন৷ এভাবে আমরা রোগজীবাণু মেরে ফেলতে চাই, যুগপৎ দুর্গন্ধ আটকাতে চাই৷''

বাস্তব প্রয়োগ

বিজ্ঞানীরা হামবুর্গের কেন্দ্রীয় রেল স্টেশনের টয়লেট থেকে নেওয়া মলমূত্র পরীক্ষা করে দেখছেন, কী পরিমাণ শর্করা দিলে টয়লেটে ল্যাক্টিক অ্যাসিড ব্যাকটিরিয়াগুলি ঠিকমতো বাড়তে পারে৷ টয়লেটের আবর্জনা একটি মিশ্র সার তৈরির কারখানায় নিয়ে গিয়ে সেখানে কাঠকয়লার সঙ্গে মিশিয়ে শুকিয়ে নেওয়া হয়৷ কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তা থেকে টেরা প্রেটা নামের যে কালো মাটির মতো দেখতে মিশ্র সার তৈরি হয়, তা খুবই কার্যকরী৷

কাঠকয়লা মেশানোটাই এই ‘কালোমাটির' বৈশিষ্ট্য৷ এই কাঠকয়লাতেই পুষ্টিকর পদার্থ বহন করে, এখানে অণুজীবরা বাসা বাঁধে৷ কাঠকয়লা বিপুল পরিমাণ জল ধরে রাখতে পারে৷ এশিয়া-আফ্রিকার গ্রামে-গ্রামে, শহরে-শহরে যে কাঠ পুড়িয়ে রান্না হয়ে থাকে, তা থেকেই যথেষ্ট কাঠকয়লা পাওয়া যেতে পারে৷ রাল্ফ অটারপোল-এর ‘মিশ্র সার কমোডের' জন্য তা বিশেষভাবে উপযোগী৷

কমোডের ময়লার সঙ্গে কাঠকয়লা যোগ করে সৃষ্ট মিশ্র সার প্রধানত পুনর্বনায়ন প্রকল্পে ব্যবহার করা হবে, যা জলবায়ুর পক্ষেও মঙ্গলজনক৷ অটারপোল বলেন, ‘‘টেরা প্রেটা মিশ্র সার দিয়ে আমরা জমি এমনভাবে তৈরি করতে পারি, যাতে মাটিতে আরো বেশি পানি ধরা থাকবে৷ সেই জল ধীরে ধীরে বাতাসে ছড়ানোর ফলে স্থানীয় জলবায়ুর ভারসাম্য বজায় থাকবে৷ এভাবে এই কমোডের ব্যবহার সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের উপর তার একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বৈকি৷''

টয়লেটে ফ্লাশের চেন টানা হল মান্ধাতার আমলের ব্যাপার৷ ভবিষ্যতের কমোড থেকে পানিতে ময়লা গিয়ে পড়বে না, বরং জমিতে সার দেওয়া যাবে, জলবায়ুর উন্নতি ঘটবে৷

বিশেষ ঘোষণা: এই সপ্তাহের অন্বেষণ কুইজে অংশ নিতে ক্লিক করুন এখানে

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য