মিশরে বিক্ষোভ অব্যাহত, নিহত শতাধিক
৩০ জানুয়ারি ২০১১মিশরের সর্বশেষ পরিস্থিতি
মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক এবং বিরোধী বিক্ষোভকারীরা নিজ নিজ অবস্থানে অনঢ় রয়েছেন৷ বিক্ষোভকারীরা মোবারকের পদত্যাগ চান, কিন্তু তাতে রাজি নন বর্ষীয়ান এই নেতা৷ প্রতিবাদ-বিক্ষোভ তাই অব্যাহত আছে৷ গত কয়েকদিনের সরকার বিরোধী আন্দোলনে সেদেশে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ১০০ জন৷ সর্বশেষ দাঙ্গায় কায়রোর দক্ষিণে বেনি সুয়ের শহরে প্রাণ হারায় ২২ জন৷ বিক্ষোভকারীরা একটি পুলিশ স্টেশনে হামলার চেষ্টা করলে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে৷ এছাড়া কারফিউ অমান্য করে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় অবস্থান নিয়েছে৷
নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট
মিশরে শান্তি ফিরিয়ে আনতে অবশ্য কিছু রাজনৈতিক সংস্কার শুরু করেছেন মোবারক৷ শনিবার তিনি একজন ভাইস প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেন৷ সেদেশের গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান ওমর সুলাইমানকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ সুলাইমান আন্তর্জাতিকভাবে বেশ সুপরিচিত এক ব্যক্তিত্ব৷
এই নিয়োগে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, মোবারক মিশরের রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিবর্তনের গুরুত্ব অনুধাবন করেছেন৷ সেইসঙ্গে তিনি বুঝতে পারছেন, তাঁর ৩০ বছরের শাসনকাল সম্ভবত আর বেশিদিন স্থায়ী হবে না৷ গণবিক্ষোভ ছাড়াও শারীরিকভাবে অসুস্থ মোবারক, তাছাড়া তাঁর বয়সও ৮২ বছর৷ সবমিলিয়ে এক ক্রান্তিকালে পৌঁছে গেছেন তিনি৷
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
যে কোন কিছুর বিনিময়ে হলেও জনগণের উপর শক্তি প্রয়োগ থেকে মিশরকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা৷ এক যৌথ বিবৃতিতে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজি মোবারককে শক্তি প্রয়োগ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে অবশ্য মিশরকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের প্রতি নমনীয় না হলে আন্তর্জাতিক সাহায্য কমিয়ে দেওয়া হবে৷
মিশরের ভবিষ্যত
মোবারক কিংবা নবনিযুক্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট সুলাইমান কেউই মিশরে তিউনিসিয়ার মত সরকার পতন দেখতে চান না৷ তাছাড়া শনিবার ভোররাতের টেলিভিশন ভাষণেও বেশ দৃঢ়তা দেখিয়েছেন মোবারক৷ যদিও তাতে বিক্ষোভ খুব একটা কমেনি৷ তবে তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্টের মতো দুর্বল কোন অভিব্যক্তি মোবারকের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মিশরের সেনাবাহিনী কি চায়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, সুলাইমানকে নিয়োগের অর্থ হচ্ছে, মোবারক ক্ষমতা ছাড়লেও মিশরের অবস্থা আগের মতোই থাকবে৷ সেক্ষেত্রে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করা নয়, বরং বর্তমান পরিস্থিতির উপসংহারই চাচ্ছে সেনাবাহিনী৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম