মিনিয়েচার বার্লিন
বার্লিনের আলেস্কান্ডারপ্লাৎসের টেলিভিশন টাওয়ারে ‘লিটল বিগ সিটি’ নাম দিয়ে একটি মিনিয়েচার বার্লিন প্রদর্শিত হচ্ছে৷ বার্লিনের আট শতাব্দীর ইতিহাসের একটা আভাস পাওয়া যাবে এই খুদে বার্লিন থেকে৷
ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণের চার ঘোড়ায় টানা রথ
আলেক্সান্ডারপ্লাৎসকে বার্লিনবাসীরা ভালোবেসে ডাকেন আলেক্স৷ আলেক্স-এর মধ্যমণি হলো এই টেলিভিশন টাওয়ার, যার নীচেরর প্যাভিলিয়নে ‘লিটল বিগ সিটি’ বা ‘ছোট্ট বড় শহর’ প্রদর্শনীটি দেখতে পাওয়া যাবে৷ স্কেল হল ১:২৪, অর্থাৎ প্রদর্শনীর সব কিছু আদতের ২৪ ভাগের এক ভাগ৷
মার্লিন ডিট্রিশ, অ্যালবার্ট আইনস্টাইন ও সম্রাট মহান ফ্রেডেরিক
অভিনেত্রী মার্লিন ডিট্রিশ ও ফ্রেডেরিক দ্য গ্রেট নামে পরিচিত জার্মান সম্রাটের জন্ম বার্লিনে৷ বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন নাৎসিরা ক্ষমতা দখল করার আগে বার্লিনে ১৮ বছর কাটিয়েছেন৷
বার্লিনে বিশের দশক
মানে ঠিক তিন বছর পরে যা শুরু হতে চলেছে, সেই দশক নয়; তার প্রায় ১০০ বছর আগের বার্লিন – নাচে, গানে, জীবনের উচ্ছ্বল আনন্দে ভরা এক শহর, যদিও তখন ওপরমহলের মানুষজনের প্রমোদে ঢালিয়া দিনু মনের পাশেই ঘনাচ্ছিল অর্থনৈতিক মন্দা আর বেকারত্বের কালো মেঘ৷
রাইখসটাগের অগ্নিকাণ্ড
১৯৩৩ সালে নাৎসিরা যে কিভাবে ক্ষমতা দখল করে, রাইখসটাগে আগুন ধরানোটা তার প্রতীক৷ এভাবেই নাৎসিরা জার্মানিতে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অজুহাত পায়৷
বিভক্ত বার্লিন
১৯৬৩ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি বার্লিনবাসী তথা জার্মানদের মন কেড়ে নেন শুধু এটুকু বলে: ‘‘ইশ বিন আইন বার্লিনার’’ – ‘আমিও বার্লিনের এক বাসিন্দা’৷ ঠান্ডা লড়াই-এর আমলে শ্যোনেব্যার্গের পৌরভবনের সামনে কেনেডির সেই ভাষণ ও উক্তি ‘লিটল বিগ সিটি’-তে স্থান পেয়েছে৷
কারিভুর্স্ট মানে কারি পাউডার দেওয়া সসেজ
অ্যামেরিকানদের কাছে হটডগ যা, জার্মান তথা বার্লিনবাসীদের কাছে কারিভুর্স্ট ঠিক তাই৷ ১৯৬০ সালে বার্লিনের পূর্বাঞ্চলে প্রথম কারিভুর্স্ট স্ট্যান্ডটি খোলা হয়৷ সেই ‘কোনোপকে’জ ইমবিস’ দোকানটি আজও বেঁচে আছে – তবে একটি নতুন বাড়িতে৷
বার্লিন ক্রয়েৎসব্যার্গ
বিভক্ত বার্লিনের একটি প্রখ্যাত বা কুখ্যাত এলাকা ছিল ক্রয়েৎসব্যার্গ৷ আশির দশকে পশ্চিম বার্লিনের এই এলাকাটিতে বাড়ি জবরদখল ও বোহেমিয়ান জীবনযাত্রার খুব চল ছিল, নাইট ক্লাব আর বারে ভিড় লেগে থাকত৷ একটি জনপ্রিয় জার্মান গানের লাইন হল: ‘ক্রয়েৎব্যার্গে রাত ফুরোতে চায় না...৷’
মার্গট ও এরিশ হোনেকার
এরিশ হোনেকার ছিলেন সাবেক পূর্ব জার্মানির সবচেয়ে প্রতাপশালী রাজনীতিকদের মধ্যে একজন – তবে শুধু জার্মান পুনর্মিলন অবধি; তারপর দু’জনকেই দেশ ছেড়ে দক্ষিণ অ্যামেরিকায় পাড়ি দিতে হয়৷
ইতিহাসের সাক্ষীরাও আছেন
মিনিয়েচার বার্লিনে যে শুধু নামকরা লোকেদের দেখতে পাওয়া যাবে, এমন নয়৷ সানি ম্যুলারের মতো ‘সাধারণ’ মানুষ. যিনি ১৯৮৯ সলের ৯ই নভেম্বর বার্লিন প্রাকারের পতনের সময় তাঁর মাকে নিয়ে ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণের দিকে গিয়েছিলেন, সে ধরনের ‘লিটল বিগ’ মানুষদেরও দেখতে পাওয়া যাবে বার্লিনের লিটল বিগ সিটিতে৷ ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণের কাছে কে এক সজ্জন সানিকে দেয়াল টপকাতে সাহায্য করেন৷
কে বলে বার্লিন ঘুরে আসতে সময় লাগে?
বার্লিনের টিভি টাওয়ারের লিটল বিগ বার্লিন ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই দেখে নেওয়া যায়৷ মনে রাখবেন, এখানকার মিনিয়েচার বাড়িঘর আর মানুষজন তৈরি হয়েছে থ্রি-ডি প্রিন্টারে – সঙ্গে যোগ করা হয়েছে সাউন্ড আর পুরনো তথ্যচিত্র৷ আর বৃষ্টি থামলে, বাইরে আসল বার্লিন তো আপনার জন্যই অপেক্ষা করেছে...৷