মার্কিন ‘ফার্স্ট লেডি’ চান না বাচ্চারা মোটা হোক
৮ জুন ২০১০হোয়াইট হাউজের সাউথ লন৷ যেখানে সচরাচর প্রেসিডেন্ট গিন্নীর নানারকম কার্যকলাপ দেখা যায়৷ সেখানেই প্রধান রাঁধুনির দুধশাদা অ্যাপ্রণ পরণে, মাথায় রাঁধুনিদের লম্বা টুপি চড়িয়ে বেরিয়ে এলেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি, কৃষ্ণাঙ্গী, দীর্ঘাঙ্গী মিশেল ওবামা৷ সামনে বাছাই করা প্রায় পাঁচশো মার্কিন রাঁধুনিদের একটি সভা৷ সেই সভায় মিশেল রাঁধুনিদের উদ্দেশে ভাষণ দিলেন৷ বললেন, ‘আমাদের দেশের স্কুলশিশুরা অতিরিক্ত মোটা হয়ে পড়ার অসুখে ভুগছে৷ তাদের জন্য সঠিক, স্বাস্থ্যকর কিন্তু রুচিসম্মত খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে৷ সেই কাজের দায়িত্ব আপনাদের ওপর৷'
অতিরিক্ত প্রোটিন আর চর্বিতে ভরা খাবার, ভাজাভুজি আর চটজলদি ‘ফাস্ট ফুড'৷ সারাক্ষণ এইসব খেয়ে মার্কিন শিশুদের মোটা হয়ে পড়াটা এখন মহামারির পর্যায়ে পৌঁছেছে অ্যামেরিকায়৷ সেই মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছেন মিশেল ওবামা৷ হোয়াইট হাউজের এই সভা তারই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ৷ আগামী দশ বছরে শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাদ্যের জন্য বিশেষ এক কর্মসূচি তৈরি করেছে ওবামা প্রশাসন৷ ১০ বিলিয়ন ডলারের এই সঠিক, পুষ্টিকর খাদ্যের কর্মসূচির আওতায় পড়ছে বাচ্চাদের স্কুলগুলি৷ যেখানে সঠিক খাবারের তালিকা তৈরি করা থেকে শুরু করে খাবার রান্না করাটাও একটা অতি দরকারি বিষয়৷ মিশেল সেই দায়িত্বই তুলে নিয়েছেন নিজের কাঁধেই, আলাদা করে৷ সেটাই তিনি বুঝিয়েছেন রাঁধুনি সর্দারদেরকে হোয়াইট হাউজে ডেকে এনে, আলাদা করে৷
শুধু শিশুরাই নয়, মোটা হয়ে পড়াটা গোটা অ্যামেরিকারই ‘ব্যয়রাম' বলা যায়৷ শুধুমাত্র গত বছরেই এই মোটা হওয়া বা ‘ওবেসিটি'-র অসুখে ভুগে চিকিত্সাখাতে ১৫০ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে অ্যামেরিকার মানুষ৷ সুতরাং এই রোগের শিকড়েই আঘাত হানতে চায় ওবামা প্রশাসন৷ আর স্কুল থেকেই শুরু হচ্ছে লড়াইটা আপাতত৷ যে কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা তাঁর শৈশবের স্মৃতিচারণ করে জানিয়েছেন, সবুজ ফুলকপি বা ব্রকোলি নামের একটা স্বাস্থ্যকর সব্জি তাঁর মা এত বেশি রান্না করতেন যে কখনো কখনো সেটা মনে হত যেন অত্যাচার৷ তবে ব্রকোলির যে স্বাস্থ্যগুণ আছে সেটাই আবার প্রেসিডেন্টের সুস্বাস্থ্যের কারণ৷ এখানেই শেষ নয়, মেদরোগের বিরুদ্ধে লড়াইতে মার্কিন কংগ্রেসে একটি বিশেষ বিলও পাশ করাতে চান ওবামা৷ আর সেটাও হয়ে যাবে এই ২০১০ সালে৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়
সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম