1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অনেক রহস্যের চাবিকাঠি যা

১ নভেম্বর ২০১৬

মহাকাশ নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই৷ কিন্তু গ্রহ-নক্ষত্রের বাইরে অন্ধকার জগতের রহস্য আজও অনেকটাই অজানা রয়ে গেছে৷ এবার মাধ্যাকর্ষণ তরঙ্গের সাহায্যে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের উৎস সম্পর্কে আরো জানার চেষ্টা শুরু হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/2Rx7t
মাধ্যাকর্ষণ তরঙ্গ
ছবি: S. Ossokine/A. Buonanno/Max-Planck-Institut für Gravitationsphysik/W. Benger/Airborne Hydro Mapping GmbH/dpa"

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিজ্ঞানীরা ডিটেক্টরের মাধ্যমে মাধ্যাকর্ষণ তরঙ্গ পরিমাপ করেছেন৷ জার্মানির হানোফার শহরে টিমের সহযোগী বিজ্ঞানীরা সেই দৃশ্য সবার আগে দেখেছেন৷ লাইবনিৎস বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্স্টেন ডানৎসমান ও তাঁর টিম মাধ্যাকর্ষণ তরঙ্গ পরিমাপের প্রযুক্তি ডেভেলপ ও পরীক্ষা করেছেন৷ যে ডিটেক্টর দিয়ে গবেষকরা অ্যামেরিকায় প্রথম তরঙ্গ মেপেছিলেন, সেটিও একই রকম দেখতে, শুধু আকারে বড়৷ এই তরঙ্গের খোঁজ পেতে কেন এত সময় লাগলো? প্রোফেসর ডানৎসমান বলেন, ‘‘মৌলিক আইডিয়া আসলে বেশ সহজ৷ কীভাবে মাধ্যাকর্ষণ তরঙ্গের অস্তিত্বের প্রমাণ দেওয়া সম্ভব? কোনো স্পেস সংকুচিত বা সম্প্রসারিত হচ্ছে, সেটা কীভাবে মাপা যায়? দৈর্ঘ্য মাপলেই তা বোঝা যায়৷ কিন্তু খুব নিখুঁতভাবে মাপতে হবে, কারণ, সেই স্পেস খুব কম মাত্রায় সঙ্কুচিত হয়৷ মাত্র কয়েক বছর আগে আমাদের হাতে লেজার দিয়ে পরিমাপের এই পদ্ধতি এসেছে৷''

মাধ্যাকর্ষণ তরঙ্গের নানা রহস্য

এই কন্টেনারের মধ্যে ডিটেক্টরের মূল অংশ রয়েছে৷ এই প্লান্ট মাটির নীচে দুটি লম্বা পাইপের মধ্যে লেজার রশ্মি পাঠায়৷ সেই রশ্মি প্রতিফলিত হয়ে একে অপরের উপর এসে পড়ে৷ সেটা করতে গিয়ে দুই রশ্মির আলো নিভে যায়৷ কিন্তু আলো কেঁপে উঠলে বোঝা যায় যে মাধ্যাকর্ষণ তরঙ্গের কারণে সেটা হয়ে থাকতে পারে৷ প্রথম মাধ্যাকর্ষণ তরঙ্গের সংকেত দেখলে তেমন রোমাঞ্চিত হবার কারণ নেই৷ কার্স্টেন ডানৎসমান অবশ্য বিষয়টি অন্যভাবে দেখেন৷ তাঁর কাছে এটা অত্যন্ত সুন্দর দৃশ্য৷ ঠিক আইনস্টাইন যেমনটা বলেছিলেন৷ এই তরঙ্গ শোনাও যায়৷ রেখা ও শব্দ বোদ্ধার কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে৷

১০০ কোটিরও বেশি আলোকবর্ষ দূরে দুটি ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ গহ্বর পরস্পরকে অবিশ্বাস্য গতিতে প্রদক্ষিণ করে চলছিল – সেকেন্ডে দুই লক্ষ কিলোমিটার বেগে! সে দুটি গলে যাবার পর সেই মুহূর্তে গোটা ব্রহ্মাণ্ডের তুলনায় ৫০ গুণ বেশি শক্তি বেরিয়ে আসে৷ প্রো. কার্স্টেন ডানৎসমান বলেন, ‘‘আরও বিস্ময়কর ঘটনা হলো, মানুষের জানা সবচেয়ে বড় এই ঘটনা পুরোপুরি অন্ধকার অবস্থায় ঘটেছে৷ সেই ঘটনার দৃশ্যমান অবস্থা খুঁজতে রেডিও তরঙ্গ, এক্স-রে, গামা রশ্মি, মাইক্রোওয়েভ ইত্যাদি নানা প্রক্রিয়ায় ২০টি আলাদা প্রচেষ্টা বিফল হয়েছে৷''

কোনো টেলিস্কোপ গলতে থাকা ব্ল্যাক হোল দেখতে পায়নি৷ কে জানে, মাধ্যাকর্ষণ তরঙ্গের দৌলতে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের আরও কত ঘটনা জানা যাবে! প্রো. ডানৎসমান-এর মতে, মহাকাশের ৯৯ শতাংশেরও বেশি অন্ধকারে আচ্ছন্ন রয়েছে৷ অন্ধকারের আরও গভীরে কান পেতে শুনতে গবেষকরা আরও সংবেদনশীল ডিটেক্টর তৈরি করছেন৷ এমনকি মহাকাশে এক অভিযানের প্রস্তুতিও চলছে৷

এই উদ্যোগের আওতায় তিনটি স্যাটেলাইট লক্ষ কোটি কিলোমিটার দূর থেকে লেজার রশ্মি পাঠিয়ে পরস্পরের মধ্যে দূরত্বের নিখুঁত পরিমাপ করবে৷ প্রো. ডানৎসমান বলেন, এভাবে গোটা ব্রহ্মাণ্ডে ব্ল্যাক হোল-গুলির শব্দ শোনা যাবে৷ হয়তো বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সূটনার বিগ ব্যাং বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্ট মাধ্যাকর্ষণ তরঙ্গও শোনা যাবে৷ কিন্তু সে বিষয়ে গবেষকদের এমন আগ্রহের কারণ কী? প্রো. ডানৎসমান বলেন, ‘‘সবকিছু কীভাবে শুরু হয়েছিল, কোথা থেকে এসেছিল – সে সব জানতে পারলে হয়তো কিছুটা নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে৷ আমি জানি না৷ এমন জিজ্ঞাসা হয়তো মানুষের চরিত্রের মধ্যেই রয়েছে৷ সেটা হয়তো ভালো বা সঠিক নয়৷ তা সত্ত্বেও বেশিরভাগ মানুষ তাদের পূর্বপুরুষ সম্পর্কে জানতে চায়৷ তারা কী করেছে, কোথা থেকে এসেছে – এ সব৷ বিগ ব্যাং-এর খোঁজ করা আসলে আসলে কসমিক জিনিয়ালজিকাল গবেষণা৷''

বিগ ব্যাং সম্পর্কে গবেষণায় অগ্রগতির জন্য গবেষকদের আরও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে৷ ২০২৮ সালে স্পেস ডিটেক্টর সম্ভবত তার কাজ শুরু করবে৷

কর্নেলিয়া বর্মান/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য