মাইকেলএঞ্জেলো আর তাঁর দাভিদ
৭ মার্চ ২০১১নিয়ে যাব আপনাকে একটু দূরে৷ সময়টা ১৫'শ শতাব্দের প্রথম দশক৷ ভেনিসের শিল্পীমহলে চলছে জমাট আড্ডা৷ শিল্পীদের সকলেই নারীর রূপের আর যৌবনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ৷ আড্ডার মাঝখানে রাজার মত মাথায় কোঁকড়া চুল এক তরুণ বসে আছেন৷ বয়স তাঁর ত্রিশের নীচেই৷ খানিকক্ষণ নারীর রূপের কথা শুনে তিনি আর থাকতে পারলেন না৷ বলে উঠলেন, ‘এত রূপ রূপ করে গলা ফাটাচ্ছো তোমরা, আসল রূপ তো, নারীর নয়৷ পুরুষের শরীরে৷ ভাস্কর্য সেখানেই সঠিক দীপ্তি পায়৷ আমার কথা বিশ্বাস না হলে যাও গিয়ে আমার দাভিদকে দেখে এসো৷' তিনিই মাইকেলএঞ্জেলো৷
আর শিল্পীর কথাটাও সত্যি৷ শ্বেত পাথরের দাভিদের মূর্তি সত্যিই পৌরুষের দীপ্তিতে উজ্জ্বল৷ ফ্লোরেন্সের আকাদেমিয়া গ্যালারিতে আজও রয়েছে শ্বেত পাথরে কোঁদা পাঁচ মিটার সতেরো সেন্টিমিটার লম্বা দাভিদের মূর্তি৷ আর আজ সেই মহান শিল্পী মাইকেলএঞ্জেলোর জন্মদিন৷
ত্রিশে পৌঁছানোর আগেই মাইকেলএঞ্জেলো তাঁর জীবনের সেরা দুটি ভাস্কর্য্য শেষ করে ফেলেছিলেন৷ একটা তো সেই অসামান্য রূপ আর শৌর্যের পরিচয় দাভিদ, অন্যটা পিয়েতা৷ দুটোই অসামান্য কাজ৷ একাধারে তুলি ক্যানভাসের শিল্প, ফ্রেসকো, ভাস্কর্য্য, স্থপতি, কবি, এবং যন্ত্রবিদ বা এঞ্জিনিয়র৷ একজন মানুষের মধ্যে এতগুলি গুণের সামাহার ঘটেছিল প্রতিভাবান মাইকেলএঞ্জেলোর ক্ষেত্রে৷ ১৪৭৫ সালের ছয়ই মার্চ জন্ম মাইকেলএঞ্জেলোর৷ মৃত্যু ১৫৬৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি৷ তিনিই পশ্চিম বিশ্বের প্রথম শিল্পী যাঁর জীবদ্দশায় একটি নয়, দু'দুটি জীবনী প্রকাশিত হয়েছিল৷ কাজ করেছেন ভ্যাটিকানের সিস্সটিন চ্যাপেলের ছাদেও৷ তাঁর ফ্রেসকো আজও ভ্যাটিকানে গিয়ে অবাক বিস্ময়ে দেখে মানুষ পাঁচ শতাব্দ পরেও!
প্রতিবেদন : সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: জাহিদুল হক