মাংস উৎপাদন খারাপ, নাকি ভালো?
শিল্পোন্নত দেশগুলোতে বর্তমানে ‘ভেগানিজম’ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে৷ ভেগানরা পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই মাংস বা পশু থেকে উৎপাদিত কোনো খাবার খান না৷ কিন্তু আসলে মাংস উৎপাদন এবং ভক্ষণ পৃথিবীর জন্য কতটা খারাপ?
শিল্পোন্নত দেশের মানুষ বেশি মাংস খায়
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা জানিয়েছে, ২০১৫ সালে বিশ্বের প্রতিটি মানুষ (মাথাপিছু) গড়ে মাংস খেয়েছে ৪১.৩ কেজি৷ অথচ ৫০ বছর আগে এর অর্ধেক মাংস খাওয়া হতো৷ গত বছর উন্নয়নশীল দেশে যেখানে মাথাপিছু ৩১.৬ কেজি মাংস খাওয়া হয়েছে, শিল্পোন্নত দেশে খাওয়া হয়েছে ৯৫.৭ কিলোগ্রাম৷
উৎপাদনে পানি খরচ
মাংস উৎপাদন একটি ব্যয়বহুল ব্যবসা৷ এতে অর্থ, সময় ও সম্পদ খরচ হয়৷ এক কেজি গরুর মাংস উৎপাদনে ১৫,৪১৫ লিটার পানি লাগে৷ এক কেজি শুকরের মাংস উৎপাদনে লাগে ৬ হাজার লিটার পানি৷ অন্যদিকে সবজি, যেমন আলু উৎপাদনে ১ কেজিতে খরচ হয় ৩০০ লিটার পানি৷ অন্যদিকে ধান উৎপাদনে প্রতি কেজিতে খরচ হয় ২,৫০০ লিটার পানি৷
গরু ও মুরগির খাদ্য
ওয়ার্ল্ড ওয়াচ ইনস্টিটিউটের মতে, বিশ্বের উৎপাদিত প্রতি ৫ টন শস্যের মধ্যে ২ টন পোলট্রি বা মাছের খামারে যায়৷ অন্যদিকে, গুরুর মাংস উৎপাদনের জন্য এত খাদ্য ব্যয় হয় না৷ ঘাস খেয়েই এদের অনেকটা চাহিদা পূরণ হয়৷
উজাড় হচ্ছে বন
প্রাণী খাদ্যের জন্য বন উজাড় হচ্ছে সবচেয়ে বেশি৷ গাছ কেটে গরু চারণ ক্ষেত্র বা কৃষিক্ষেত্র বাড়ানো হচ্ছে৷ ফলে জীববৈচিত্র হারিয়ে যাচ্ছে৷ সেই সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা৷
বিষাক্ত মিথেন
কার্বন নিঃসরণে কৃষির ভূমিকা রয়েছে ১১ থেকে ১৫ ভাগ৷ অন্যদিকে, গরুর ঢেঁকুর বা ‘গ্যাস’ থেকে যে মিথেন উৎপন্ন হয়, তা কার্বন ডাই অক্সাইডের চেয়ে ২০ গুণ বিষাক্ত ও ক্ষতিকর৷