মধ্য এশিয়ার প্রাণী পরিচিতি
বিশ্বের সবচেয়ে বড় গাছপালাবিহীন তৃণভূমির দেখা পাওয়া যাবে মধ্য এশিয়ায়৷ ফলে স্তন্যপায়ী প্রাণীদের প্রিয় জায়গা সেটি৷
গাধার মতো
এদের নাম খুলান৷ গাধা গোত্রের এই প্রাণীটি ‘মঙ্গোলিয়ান ওয়াইল্ড অ্যাস’ নামেও পরিচিত৷ মঙ্গোলিয়া ও উত্তর চীনের বিশাল এলাকা জুড়ে দল বেঁধে ঘুরে বেড়ায় তারা৷ খাবার আর পানির সন্ধানে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বেশ কয়েক হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারে খুলান৷ তবে তাদের মাংসের লোভে ইদানীং শিকারিরা তাদের পেছনে লাগায় হুমকির মুখে পড়েছে তারা৷
মার্কো পোলো ভেড়া
ত্রয়োদশ শতকের অভিযাত্রী মার্কো পোলো তাঁর একটি বইতে এই ভেড়ার নাম রেখেছিলেন আরগালি৷ তবে এটি মার্কো পোলো ভেড়া নামেও পরিচিত৷ আফগানিস্তান, চীন, কাজাখস্তান, কিরঘিস্তান, তাজিকিস্তান, পাকিস্তান ও উজবেকিস্তানের মধ্যে অবাধ বিচরণ তাদের৷ সুন্দর ও মূল্যবান শিংয়ের কারণে শিকারিদের নজর পড়েছে এই ভেড়ার ওপর৷
ফিরে আসা
১৯৬৯ সালে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল৷ পরে ১৯৯২ সালে আবারও এই জাতের ঘোড়ার জন্ম দেন বিজ্ঞানীরা৷ বর্তমানে মঙ্গোলিয়ায় প্রায় ৩০০টি ‘শেভালস্কি’ ঘোড়ার দেখা পাওয়া যাবে৷
গজলা-হরিণ
সাদা লেজের একেকটি মঙ্গোলিয়ান গজলা-হরিণ এক বছরে প্রায় ৩২ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা চষে বেড়ায়৷
অর্ধেকে নেমে এসেছে সংখ্যা
মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার প্রায় ২০টির মতো দেশে ঘুরে বেড়ায় কালো লেজের গজলা-হরিণ৷ শীতের সময় খাবারের সন্ধানে দিনে গড়ে প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকা চষে বেড়ায় তারা৷ তবে চোরাশিকারিদের কারণে এই হরিণদের সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে৷
দুই কুঁজের উট
নাম ‘বেকট্রিয়ান ক্যামেল’৷ এরা প্রতিদিন প্রায় ৭৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়৷ কুঁজের মধ্যে জমা থাকা চর্বি থেকে তারা শক্তি পায়৷ পথের মধ্যে যেমন আছে উঁচু পর্বত, তেমনি আছে মরুভূমি৷ নানা কারণে নিজেদের এলাকায় থাকতে না পারা বেকট্রিয়ান উটদের এখন দেখা পাওয়া যায় উত্তর চীন ও দক্ষিণ মঙ্গোলিয়ার তিনটি স্থানে৷
চিতাদের জায়গার অভাব
একসময় মধ্য এশিয়া আর মধ্যপ্রাচ্যের বিশাল এলাকায় বিচরণ ছিল তাদের৷ কিন্তু এখন তাদের এলাকা মূলত ইরানের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খরা দেখা দেওয়া ও মাত্রাতিরিক্ত পশুচারণের কারণে চিতাদের এই আবাসস্থলও সংকুচিত হয়ে আসছে৷
বুখারা হরিণ
কাজাখস্থান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান ও আফগানিস্তানের বিশাল এলাকাজুড়ে থাকে তারা৷ সবকিছু ঠিক থাকলে নিজেদের এলাকায় থাকতেই পছন্দ তাদের৷ তবে পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকলে উন্নত জীবনের আশায় ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ হরিণ অন্যান্য এলাকায় পাড়ি জমিয়ে থাকে তারা৷